আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারী কমিটির মিটিং যেমন দেখেছি

কোন এক বিশেষ কাজে একটা সরকারী পর্যালোচনা তথা সুপারিশ কমিটির বহিঃসদস্য হওয়ার সুযোগ হয়েছিলো কিছুদিন আগে। ৪ সদস্যের কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলাম আমি। বাকীরা সবাই যথেষ্ট বয়স্ক, আমার বয়সের তুলনায়। কমিটির প্রধান ছিলেন সরকারের উচ্চপদস্হ একজন আমলা, এছাড়াও আরো ২ জন সদস্য ছিলেন যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। আর আমার এটাই হলো প্রথম এমন কোনো মিটিং এ অংশ নেওয়া, তাই একটু সংকোচ কাজ করছিলো প্রথমদিন।

কমিটির প্রথম মিটিং এ একে অপরের সাথে পরিচিত হওয়া। চা নাস্তা খাওয়া। তারপর কমিটির প্রধানের গালগল্পশুরু হলো। তিনি বিদেশ ভ্রমণ করেছেন, কোন দেশে কি দেখেছেন, তার আগের পোস্টে থাকাকালীন তিনি কোথায় কি করেছেন, তিনি কতটা চালাক আর বুদ্ধিমান, প্রতুৎপন্নমতি সেই গল্প। বাকী দুইজন আমলার প্রতি কথায় মোসাহেবী করে চলেছেন।

মিটিং এ যাওয়ার আগে ভাবলাম ১ ঘন্টায় মিটিং শেষ হয়ে যাবে, সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সেই মিটিং শেষ হলো বিকাল ৩.৩০ মিনিটে। মাঝে আরো ২ দফা চা নাস্তা,লাঞ্চ, নামাজের বিরতি....... প্রথম মিটিংএ যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, ১। পূর্বের নানা মিটিং এর রিপোর্ট পর্যালোচনা। ২। নতুন কমিটির কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ।

৩। ঘটনাস্হল পরিদর্শন। এর কিছুদিন ঘটনাস্হল পরিদর্শন করা হলো, সেই উপলক্ষে ঘটনা জম্পেশ খাওয়া দাওয়া। আশোপাশের দর্শনীয় স্হান পরিদর্শন। এবং ঘটনাস্হলে আর একদফা মিটিং।

প্রথম মিটিং এর ফলোআপ। মাস খানেক পর অধিকতর গ্রহণযোগ্যতার খাতিরে ঘটনাস্হল পুনরায় পরিদর্শন করা হলো। কয়েকদিন পর আবার মিটিং, ঘটনাস্হলে যা যা আলামত পাওয়া গেছে, সেগুলো যথাযথভাবে পর্যালোচনা, মূল্যায়ন। এবং যথারীতি সকাল দশটা থেকে মিটিং শুরু হয়ে বিকাল ৩টা-৪টা পর্যন্ত। মূল কাজ হয়ত ১ ঘন্টার।

বাকী সময়টা প্রথম মিটিং এর অনুরূপ। একইভাবে আর ৪ টা মিটিং, আরো গল্প, মূল কাজ করছে হয়ত একজন, তিনি বাসা থেকে সবকিছু তৈরী করে নিয়ে আসেন, আর আমরা বাকীরা বসে বসে সেই রিপোর্ট পড়ি, আর নানা সংশোধনী দেই। একজন আবার ল্যাঙুয়েজ এক্সপার্ট। কোনো বানান, কিংবা ভাষা যাতে কারো বিরুদ্ধে না যায়, সেই ব্যাপারে তিনি দারুণ সোচ্চার। অতঃপর কোন এক বিকালে রিপোর্ট সকলের মনপুতঃ হওয়ার পর সাক্ষর প্রদান।

সাথে প্রত্যেকবার যথারীতি ৩ দফা চা নাস্তা, লাঞ্চ, প্রধানের গল্প, বিদেশে ভ্রমণ ব্ল্যা ব্ল্যা। একই গল্প ৪ বার শুনার পরও অন্যদের মোসাহেবী থামে না। আমলাদের গল্প আর মোসাহেবদের কারণে মনে হয় সরকারী অফিসে যথেষ্ট কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.