আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারী মাল দড়িয়ামে ঢাল’



সরকারী মাল দড়িয়ামে ঢাল’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এই ধরনের একটি উদ্যোগ নিয়েছেন আইন মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আর সচিব-আমলারা। পাশাপাশি সরকারী স্বার্থন্বেষী মহলের যোগসাজসতো রয়েছেই। আইনি সচেতনতা : উপজেলা ও ইউনিয়নে কমিটি মোমিন মেহেদী আমাদের গ্রাম বাংলায় একটি প্রবাদ আছে ‘ ফকিন্নির পোলার নাম মিয়া খান’ । প্রবাদটি এজন্য বললাম যে, আমাদের দেশের মানুষের যখন নুন আনতে পানতা ফুরায়; যখন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্ব গতির কারনে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস বের হওয়ার উপক্রম; তখন বর্তমান সরকার দ্রব্যমূল্যের দাম না কমিয়ে; দেশের সহায়-সম্বলহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেয়ার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নে কমিটি গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছে। বিষয়টি কার কাছে কেমন লেগেছে বলতে পারবো না ।

আমার কাছে মনে হয়েছে এই প্রজেক্টেও মাধ্যমে আরো মোটা অংকের একটা অর্থ সরকারের ফান্ড থেকে নামানোর চেষ্টায় নেমেছে স্বার্থন্বেষী মহল। গত ১২ অক্টোবর জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ‘জাতীয় পরিচালনা বোর্ড সভায়’ এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ কমিটির গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা হবে বলে সাংবাদিকদেরও জানিয়েছেন জাতীয় আইনি সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক সাবেক জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। দেশের গরিব অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য প্রতিটি জেলায় একটি করে কমিটি ও তহবিল রয়েছে। জনসচেতনতার অভাবে সরকারের এ জেলা আইনগত সহায়তা তহবিলের লাখ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে না।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, গত বছর এ তহবিলে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ ছিল তার প্রায় অর্ধেক টাকাই এখনও প্রতিটি জেলার আইনগত সহায়তা তহবিলে পড়ে আছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের দেয়া এ তহবিল সম্পর্কে তৃণমূলে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এবার প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নে কমিটি গঠনের প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। ১৮ জুলাই জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ১৭তম পর্যালোচনা সভায় উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনের জন্য একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওইদিন একটি খসড়া কমিটিও উপস্থাপন করা হয়। এরপর ১২ অক্টোবর আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিচালনা বোর্ড সভায় কমিটি গঠনের প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

দু’এক সপ্তাহের মধ্যেই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। জানা গেছে, প্রতিটি কমিটিতে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। উপজেলা কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যানকে এবং সেক্রেটারি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত তিনজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, উপজেলার কোন সরকার অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন মহিলা শিক্ষক । এছাড়া ইউনিয়ন কমিটিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং সেক্রেটারি হিসেবে ইউনিয়নের সচিবকে রাখা হয়েছে।

এছাড়াও এ কমিটিতে যারা থাকছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ডগুলোর মেম্বার, ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার, ইউনিয়নের কোন সরকার অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মহিলা শিক্ষক প্রমুখ। এই উদ্যেগ কেবলমাত্র ‘সরকারী মাল দড়িয়ামে ঢাল’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই করেছে আইন মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আর সচিব-আমলারা। পাশাপাশি সরকারী স্বার্থন্বেষী মহলের যোগসাজসতো রয়েছেই। উপজেলা ও ইউনিয়নের কমিটি গঠনের প্রস্তাবটি পাস করা হয়েছে। এখন একটি রেজুলেশন তৈরি করে সভার সিদ্ধান্তটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং সেখান থেকে এ কমিটির গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা হবে।

এর জন্য দু’এক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, তৃণমূলে জনসচেতনতার অভাবে জেলা আইনগত সহায়তা তহবিলে দেয়া টাকা ব্যয় হচ্ছে না। তাই সরকারের আইনগত সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ কমিটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে সরকারের আইনগত সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালাবে এবং জনগণ আইনগত সহায়তা চেয়ে আবেদন করলে তা জেলা কমিটির কাছে হস্তান্তর করবে। আইনগত সহযোগিতা পাওয়া জনগণের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার।

এ অধিকার পূরণের লক্ষ্যে ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ নামে একটি আইন তৈরি করা হয়। এ নীতিমালা অনুযায়ী ‘অসচ্ছল বলতে এমন ব্যক্তিকে বোঝাবে যার বার্ষিক গড় আয় ৩০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে নয়। এছাড়াও যারা এ সুবিধা পাওয়ার অধিকারী তাদের মধ্যে রয়েছেন- অসচ্ছল কর্মক্ষম, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্কভাতা পাচ্ছেন এমন ব্যক্তি, ভিজিডি কার্ডধারী দু:স্থ মাতা, পাচারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নারী, দুর্বৃত্ত দ্বারা এসিডদগ্ধ নারী বা শিশু, আদর্শ গ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, অসচ্ছল বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং দু:স্থ মহিলা, উপার্জনে অক্ষম এবং সহায়-সম্বলহীন প্রতিবন্ধী, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থনে অসমর্থ ব্যক্তি, বিনাবিচারে আটক ব্যক্তি, যিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ ব্যবস্থা করতে অক্ষম, আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে বিবেচিত হলে, জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় অসচ্ছল বলে সুপারিশকৃত হলে, এছাড়া জেলা আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সংস্থা কর্তৃক সময় নির্ধারিত আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন, নানাবিধ আর্থ-সামাজিক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, যিনি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মামলা পরিচালনা করতে পারছেন না, তারাই এ তহবিলের টাকায় মামলা পরিচালনার সুযোগ পাবেন। সরকারের এ আইনগত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি জেলায় একটি করে জেলা আইনগত সহায়তা কমিটি গঠন করা হয়। সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা ও দায়রা জজকে সভাপতি করে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও ব্যক্তির সমন্বয়ে সর্বমোট ২১ জন সদস্য নিয়ে জেলা কমিটি রয়েছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদককে এ কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেয়া রয়েছে। জেলা আইনগত সহায়তা তহবিলের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এ কমিটি। এছাড়া আইনগত সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে প্রতিটি জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের নিয়ে একটি করে আইনজীবী প্যানেল রয়েছে। সারাদেশে প্যানেল আইনজীবীর সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬৩ জন। কিন্তু এ সংক্রান্ত আইন হওয়ার দীর্ঘ ১০ বছর পরও হাতেগোনা কয়েকটি জেলা ছাড়া অন্যসব জেলায় এ আইনগত সহায়তা তহবিলের কার্যক্রম তেমন দেখা যাচ্ছে না।

এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে জেলাগুলোতে আইনগত সহায়তা সংস্থার নিজস্ব কোন অফিস ও লোকবল না থাকা, তৃণমূলে এ ব্যপারে কোন জনসচেতনতা সৃষ্টি না করা, এ সহায়তার ব্যপারে সরকারিভাবে প্রচার-প্রচারণার কোন ব্যবস্থা না করাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও এ বিষয়ে বলা যায়, সরকার কি করবে? যা করার তাতো মন্ত্রী-আমলা আর চাটুকার বাহিনী করেই ফেলেছে। তারা সরকারী অর্থায়নে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রতিযোগীতায় নেমেছে। আমাদের সময়ের আলোচিত কবি নাসির আহমেদ লিখেছিলেন, ‘এক ভাষণেই পাল্টে গেল বাংলাদেশের ছবি যে/ভাষণনতো নয় কাব্য যেন, লিখে গেলেন কবি যে। ’ এমন করে এক ভাষণে যদি বর্তমান বাঙালী জাতিকে পালেট দেয়া যেত, তাহলে হয়তো শান্তি আর আনন্দেও কথা ভাবা যেত।

যেহেতু তেমন কেউ নেই; সেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়টি নিয়ে নিগুঢ় ভাবনা করা প্রয়োজন, দেশ, দেশের মানুষ আর আগামীর কথা ভেবে... Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.