আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চতুর্থ নয়ন

আজ ১৬ ই মার্চ , রোজ শুক্রবার! সনটা ২০১২, স্বাধীনতার ৪০ তম বার্ষিকী পেরিয়ে আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ নামক ছোট্ট একটা দেশ,সীমাহীন সমস্যা আর নানান চক্রান্তের উর্নাজাল ছিঁড়ে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলছে সুপ্রাচীন সভ্যতার ধারাবাহক মহান এ জাতি। এ দেশকে ঘিরে আছে অপার সম্ভবনার হাতছানি আবার একই সঙ্গে ক্রান্তিকাল ভরা নানান দুর্যোগের ঘনঘটা, বারংবার ফিরে আসা সেই ভয়াল অতীত।এই স্বাধীনতার মাসে এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হচ্ছে আবার এই মাসেই হয়ে গেল এ দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের পেশীশক্তির প্রদর্শনী,সেই ঢাকার রাজপথে,যেখানে আজ হয়ত আনন্দ মিছিল বের হয়েছে, এই জনতার ধারা কিন্তু কেউ আহবান দিয়ে বের করে আনে নি কিংবা ে মিছিলে ছিল না দেশীয় অস্ত্রের প্রদর্শনী,কেউ ব্যানার টানায় নি নেমে আসার জন্য,কিন্তু মানুষ স্বপ্রনদিত ঘর থেকে বের হয়ে দাড়িয়েছে সত্যিকারের জনতার মঞ্ছে,জনতার মিছিলে।আর আজ আমাদের বৃহৎ দুই দল সহ সকল ক্ষমতাপিপাসু রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীগন জনসমাবেশ বা জনতার স্বতঃস্ফূর্ত চিৎকার বোধ করি শুনেছেন, আর এও বোঝা উচিৎ কি চায় জনগন, জানি না তারা পরিবর্তন হবেন নাকি!তবুও আশা করি তাঁরা একদিন আমাদের কাতারে ঠিকই নেমে আসবেন, সেই দিন টা যেন আর দীর্ঘায়িত না হয় সেইটাই আশা করি। আজ হয়ত টি এস সি’র মোড়ে গতকাল ঢাকা কলেজের যেই ছেলেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইয়ের দিকে ইট মেরেছিল,তারা শুনেছে এক সাথে বাঘের গরজন,আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে জড়িয়ে ধরেছে একে অন্যকে। হয়ত ছাত্রলীগ সভাপতির পাঠানো মিষ্টি ছাত্রদল সভাপতি আর তার অনুসারীরা আয়েশ করে রসের গোলকের স্বাদ আহরণ করছে! চবি বা রুয়েট এর প্রতিপক্ষরা আজকের এ দিনে একসাথে থাকলে হয়ত বিভেদ ভুলে এক সাথে মিছিলে বের হতো, যেই মিছিলে নেই পুলিশের বাধা, যে মিছিল থামিয়ে দেয় না অর্থনীতির চাকা,নাক িসটকায় না দিনের শেষে ঘরে ফেরা ক্লান্ত কর্মজীবি,বরং আফসোস করে কেন পারছে না আজ জনতার সমারোহে সামিল হতে সেই নিয়ে আক্ষেপ করে। আজ হয়ত বাংলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লা মিছিলের গর্জনে “আমাদের গর্ব আমাদের ক্রিকেট দল” এর বীরত্ব জয়গানের স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করছে বাংলার মাটি,আর মাটির নিচে যে অগনিত বীর শহীদেরা শুয়ে আছে(যারা এতদিন ধরে আলোচনার টেবিলে বাংলার পরাজয় দেখে ডুকরে কেঁদে কেঁদে উঠছিল,ভাবছিল স্বাধীনতার ভোর বুঝি এখনও জাগে নি) তাদের নিথর দেহ আজ খুশিতে হয়ত ডগমগিয়ে উঠছিল- সাকিব,তামীম,মুশফিক,নাসির বা জহিরুলের আগুন ঝরানো ব্যাটের তান্ডবলীলায় আর সীমান্তের ওপারের কতৃত্তবাদী অপশক্তির অসহায় আত্মসমর্পণে; যাদের সরকার আর তাদের বাহিনী ঝাপিয়ে পরেছে বাংলার মাটি ও মানুষের জীবন আর জীবিকার প্রধান উপকরনের উপর তাদের থাবায় শুষ্ক আমাদের তিস্তা থেকে ফেনী,দুধকুমার থেকে তিতাস আর রক্তাক্ত ফেলানি অথবা নির্যাতিত অসহায় গরু-ব্যবসায়ী হাবিবুর । হয়ত এটা ভারতের শোষণ একটা দিনের জন্য থামিয়ে দেবে না,দেবেনা বন্ধ করে তাদের টিপাইমুখ বাঁধ অথবা আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প, হয়ত আরও বাঙ্গালীর লাশ পরবে ভারতীয়দের বন্দুকের গুলি অথবা পাথরের আঘাতে,আবারও রঞ্জিত হবে বাংলার মাটি যেমন আরও একচল্লিশ বছর আগে খুনে খুনে রাঙিয়ে উঠেছিল। হয়ত আজ আমাদের ছেলেরা কীবোর্ড ফেলে ব্যাট হাতে দাঁড়িয়েছে যেমন তাঁরা দাঁড়িয়েছিল আরেক ভীমের বিরুদ্ধে-পাকিস্তান সেই সময়ে ;হয়ত আমরা আজ মরলাম সীমান্ত পাড়ে,মরলাম খেতে না পেরে, তবুও আমরা বিশ্বাস করি আজ হয়নি কাল হবে,কারন আমরা তো নৈতিক ভাবে জয়ী! কদিন ধরে আমাদের আরেক প্রতিবেশী মায়ানমার জাতিসংঘ আদালতে আমাদের ন্যয়সঙ্গত বিজয়ে ঈর্ষান্নিত হয়ে তাদের সেনাবাহিনীর সমাবেশ ঘটাচ্ছে। আজ মিয়ানমারের আমার বয়সী তরুন সেনাটি সেনা চৌকিতে হয়ত নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে আর আমার বাবার বয়সী জেনারেল কোন অদৃশ্য শক্তির প্ররোচনায় যুদ্ধ-কৌশল চূড়ান্ত করছে! আমি জানি না তারা কেউ ক্রিকেট বোঝে নাকি,তবে যদি আজ মিরপুরে বাঘের গর্জন একবার শোনে তবে তারা এমন পদক্ষেপ নেওয়ার আগে আরও ভাববে,এটা ছিল শুধু ১৬ কোটি বাঙ্গালীর মাঝে ৪৬ হাজার বাঘের গর্জন আর যখন ১৬ কোটি মানুষ একসাথে হুঙ্কার দেবে তখন কি অবস্থা হবে তা তোমরা কল্পনাও করতে পারবে না! কারন, আমরা এমন জাতি যারা দেওয়ালে পিঠ ঠেকলেই চলা শুরু করি;আমার আশা মিয়ানমার আর ভারত উভয় দেশের শুভবুদ্ধির উদয় হোক যাতে আমরা আমাদের সন্তানদের বলতে না হয় ওরাই নিয়েছে তোমার পানি, তোমার মাছ, তোমার অন্ন!আমরা সবই দেখে গেছি বলি নি কিছুই ,কিছু বলি নি ছিল শুধু এমন একটা দিনের অপেক্ষা যেদিন গুলোতে ইতিহাস কথা বলে,জবাব দিয়ে দেয় যেমন যার প্রাপ্য! -মতামত,সমালচনার জন্য মেইল করুন

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.