জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করার জন্য কেনা হয়েছে একটি যন্ত্র, যাকে বলা হয় অটোক্লেভ মেশিন। কোটি টাকা দামের যন্ত্রটির সরবরাহকারী হাসান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি গত বুধবার সন্ধ্যায় সেই অটোক্লেভ মেশিনসহ একটি বাক্স রেখে গেছে বিশেষায়িত ওই হাসপাতালে। পরদিন দুপুরে হাসপাতালের সার্ভে কমিটির তিন সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বাক্সটি খুলে দেখতে পান, ভেতরে ফাঁকা, কোনো যন্ত্র নেই!
কী তেলেসমাতি কাণ্ড!
সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতারণা বা ঠকানোর যেসব ব্যাপার সাধারণত ঘটে থাকে, সেসবের মধ্যে থাকে এক দেশের যন্ত্রের কথা বলে অন্য দেশের কম দামি অপেক্ষাকৃত নিম্ন মানের যন্ত্র সরবরাহ করা, যন্ত্রাংশ সরানো ইত্যাদি। কিন্তু কোনো যন্ত্রই নেই, স্রেফ ফাঁকা বাক্স সরবরাহ করা! এত বড় দুঃসাহস কোত্থেকে আসে?
ফাঁকা বাক্স রেখে গিয়ে ফাঁকি দেওয়াটাই যে শুধু তেলেসমাতি, তা নয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আচরণেও তেলেসমাতি আছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি যখন বাক্সটি রেখে চলে গেল, তখন হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোথায় ছিলেন? নাকি ফাঁকা বাক্সই রেখে যাওয়া হবে, এটা তাদের আগে থেকেই জানা ছিল? নইলে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি এমন দুঃসাহস কী করে পেল? যখন তারা বাক্সটি রাখতে এসেছিল, সেই মুহূর্তে, তাদের সামনেই যদি বাক্সটি খুলে দেখা যেত, ভেতরে কোনো যন্ত্র নেই—তাহলে তাদের ব্যাখ্যা কী হতো? এ রকম জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে না জেনেই কি তারা ফাঁকা বাক্স রেখে যাওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে?
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির এহেন দুঃসাহস লক্ষ করে স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের আক্কেল গুড়ুম হওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ বোধ হয় এমনই দেশ, যেখানে অসম্ভব বলে কিছু নেই। তাই বলে চোখে ঠুলি এঁটে এই গুরুতর বাটপারিকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। এ ঘটনার পেছনে অত্যন্ত নিচ ও নির্লজ্জ প্রকৃতির একটি চক্র জড়িত আছে বলেই মনে হয়।
তাদের এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যেন ভবিষ্যতে এমন প্রতারণার দুঃসাহস আর কেউ না পায়।
খবর: প্রথম আলো ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।