মিজান সাহেব না হয় মুখফস্কে ভদ্র সমাজে একটা অসভ্য কথা বলে ফেলেছেন কিন্তু প্রথম আলো কিভাবে সেই অসভ্য কথাটা ইচ্ছাকৃত ভাবে বাজার জাত করল! তারপর আবার মশিউল আলমের অসভ্য হেডিং এ লিখা আরেকটি মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প ছেপে দিল। আমি ভেবে অবাক হচ্ছি আসলে কি প্রথম আলোতে কোন সুস্থ মস্তিস্কের লোক আছে নাকি সবাই অসুস্থ! যেভাবেই বলুক মিজান সাহেবের বক্তব্যটা এক্সপান্স করার মতো ছিল। কিন্তু সেটাকে লুফে নিয়ে পত্রিকার হেডিং করে সেটার বাজারজাত করন আর যাই হোক সুস্থ মানুসিকতার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না। সারা দুনিয়ায়ই বেশীরভাগ লোক ডাক্তারদের উপর বিরাজভাজন । আমাদের দেশেও ব্যতিক্রম নয়।
আমাদের দেশে হয়ত মাত্রাটা একটু বেশী। এর কারন কিন্তু ডাক্তারদের একার জন্য নয়। আমাদের জনসংখ্যা, অর্থনীতি, অপ্রতুল ডাক্তার, স্বাস্থ্য নীতি সবই দায়ী। সেই বিষয় গুলো নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করলে সবার উপকার হতো না?
মানলাম আমাদের ডাক্তারদের অনেক দোষ আছে। সেগুলো যদি উল্লেখ করে সংবাদ প্রচার হতো তাহলে কোন ডাক্তার কি এর প্রতিবাদ করতেন? না করতেন না ।
যেটা সত্য সেটাকে কেন প্রতিবাদ করবেন? ধরুন প্রায়ই পত্রিকায় আসে যে ডাক্তাররা ঠিক মতো কর্মস্থলে থাকে না। সেটার কি প্রতিবাদ হয়েছে? কারন এই কথাটা অনেকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তাই যারা থাকে না তাঁরা প্রতিবাদ করার সাহস পায় না আর যারা কর্মস্থলে নিয়মিত তাঁরা ভাবে সেটা আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যদি বলতেন অনেক ডাক্তার কমিশন নেন তাতেও অনেকে খুশি হতো কারন অধিকাংশ ডাক্তার এটা পছন্দ করেন না। যদি বলতেন যে ডাক্তাররা ঠিকমতো রোগী দেখেনা তাতেও কেউ অখুসি হতো না। কারন ইচ্ছা থাকলেও ঠিকমতো রুগী দেখা সম্ভব হয় না অনেকে রোগীর চাপে।
ডাক্তারদের নিয়ে বস্তু নিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করুন। গবেষণা ধর্মী ও বাস্তবতার আলোকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে লিখুন দেখবেন সব ডাক্তার আপনাদের পাশেই আছেন ও আপনাদের বাহাবা দিবে। একজন ডাক্তার যে কতটা প্রতিকূল পরিবেশে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার চেষ্টা করছে তা একটু ঘুরে দেখে আসুন। প্রফেসর এর চেম্বারে রোগীর ভিড় আর ভিসিট এর পরিমান দেখে ট্যাক্স এর হিসেব মাথায় আসতেই পারে কিন্তু সারাদেশে ডাক্তারদের উপর সমীক্ষা করে তারপর বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ দিলে ভালো হতো। সারা দুনিয়ায় ডাক্তাররা যে পরিমান সুযোগ সুবিধা ও টাকা পায় আমাদের দেশে এটা কল্পনারও অতীত।
তাতেই সবার গাত্র দাহ! এটা সবারি ভুল যে সবাই মনে করে ডাক্তারি মানে দাতব্য একটা ব্যাপার আসলে ডাক্তারি দাতব্য কোন ব্যাপার না এটা একটা প্রফেশন। আমরা এমবিবিএস এ যেসব পরীক্ষা দেই সেই গুলোকে বলে পেশাদারি পরীক্ষা ১ম, ২য়, ৩য় প্রফেশনাল পরীক্ষা। তবে এই পেশাতে দাতব্য কাজ করার সুযোগ বেশী আর হচ্ছেও। তাই বলে ডাক্তার মানেই দাতব্বালয় খুলে বসে থাকবে তা কিন্তু নয়। সেটা দুনিয়ার কোথাও হয় না।
পৃথিবীর বেশীর ভাগ দেশেই ডাক্তাররাই বেশী টাকা পয়সার মালিক ও বেশী সম্মানিত। তাঁরা কি তাহলে দাতব্য করতে করতে পয়সার মালিক হয়েছেন? ডাক্তারি পড়া ও করা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার। এর জন্য যে অমানুসিক পরিশ্রম করতে হয় তার প্রতিদান টাকার মাপে কিছুই না। একজন মান সম্মত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হতে কমপক্ষে ২০-২৫ বছর তাঁকে জীবনের সব স্বাদকে জলাঞ্জলি দিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়। তারপরও চিকিথসা করতে যে পরিমান মানুষিক ও শারীরিক চাপ সহ্য করতে হয় তার দাম টাকা দিয়ে কেনা অসম্ভব।
তারপরও পান থেকে চুন খসলে যে কতটা খেসারত দিতে হয় সেটার কথা আর কি বলব!
অনেকে বলেন ডাক্তাররা সবার মতো হবে না তাঁদের কাজ মানুষের সেবা করা তাঁরা সবসময় সেবাই করবে। ডাক্তাররাও সেই কথাই বিশ্বাস করে কিন্তু সেই সেবার মূল্যায়নও করতে হবে। ফ্রী সেবার জন্য যেখানে ফ্রী সেবা দেয়া হয় সেখানে যাবে। তারপরও আমাদের ডাক্তাররা যতটা ফ্রী সেবা দেয় দুনিয়ার আর কোথাও সেটা দেয় কিনা সন্দেহ আছে।
এক বন্ধু ইউরোপ থেকে লিখেছেন তাঁকে প্রতিদিন রোগী দেখতে হয় ৫ জন করে।
৫ জন এর বেশী সে একটি রোগীও দেখে না। টেলিফোন এ সিরিয়াল দিতে হয় । আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে। এখানে রোগীর সিরিয়াস কি না তা দেখার দরকার নাই, কোন নেতা, সুপারিশ, চেয়ারম্যান নাই। ইমারজেন্সি হলে হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে।
হাত ভাঙ্গা নিয়ে ৮ ঘণ্টা ইমারজেন্সিতে বসে থাকতে দেখেছেন। আর উনি যে টাকা বেতন পান তা দিয়ে একটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পুরো খরচ চালিয়েও টাকা বেঁছে যাবে। ৮ ঘণ্টায় ৫ টি রোগী দেখতে হলে প্রতি রোগী কতটা সময় পাবে? আর আমাদের দেশে! আমার এক আত্মীয়কে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাব হাসপাতালে ফোন করে জানলাম আজ দেখানো যাবে না তাই ডাক্তারকে ফোন করলাম কারন দেরি করা সম্ভব না। ডাক্তার সাহেব আমাকে না বলতে পারলেন না। অনেক ডাক্তারের সিরিয়াল দেখি কয়েক মাস আগেই নিতে হয়।
আবার সেই সিরিয়াল ভাঙ্গার জন্য রোগীরা অনেক রকম চেষ্টা করে। অনেক রোগী আমার কাছে ফোন করে আমার প্রফেসর এর ঠিকানা চায় যদিও আমি এই বিষয়ে অভিজ্ঞ তবুও আমাকে দেখাবে না। খুব সাধারন ব্যাপারে প্রফেসর এর কাছে যায়। আপনি ৫০০- ৮০০ টাকা হলেই প্রফেসরকে দেখাতে পারছেন তো কেন জুনিওর ডাক্তারকে দেখাবেন? আর প্রফেসর শতশত রোগীর চাপে দিশে হারা। খারাপ ব্যাবহার করলেও তার রোগী কমছে না তাই তার ভালো ব্যবহার করার দরকার আছে? আমার চেম্বারে আমি বসে মাছি মারি আর প্রফেসর গালি দিয়ে রোগী বের করে দিচ্ছে তাতেও রোগী কমছে না।
গালি খেয়ে দু একটা রোগী হয়ত আমার চেম্বারে আসছে কিন্তু অধিকাংশই সেই প্রফেসর এর কাছেই যাচ্ছে। আমরা চাই প্রফেসররা আরও বেশী রোগীকে গালি দেক তাতে আমাদের কিছু লাভ হবে। যেহেতু রেফেররেল সিস্টেম নাই তাই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আমার আরেক বন্ধু কানাডা থেকে লিখেছেন তার স্বামী ও বাচ্চা বমি করতে করতে ওষ্ঠাগত হওয়ার পর অনেক ফোন করার পর পেরামেডিক্স এসে পানি খেতে বলে চলে যায় আর কয়েক হাজার ডলারের বিল ধরিয়ে দিয়ে বলে হাসপাতাল গেলে এতো ডলার লাগবে আর ডাক্তার দেখবে ১২ ঘণ্টা পর ,বুঝেন ঠেলা। তাঁরা কি মানব সেবা করছে না!!! আমার এক রোগী ইন্দিয়াতে ১০০০০০ টাকায় যে অপারেশন করে এসেছে সে অপারেশন আমি করি ১৫০০০ টাকায়।
কিন্তু ওখানে অপারেশন করার পরও আবার আমার কাছে আবার আসতে হয়। সিঙ্গাপুর এ একটা এন্ডস্কপি করতে প্রায় ১০০০০০ টাকা লাগে আর এখানে লাগে ১৫০০- ২০০০টাকা। এদেশে যত কম টাকায় আমরা স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছি তা আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। আর এতো সহজে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়াও দুনিয়ায় বিরল। একটু অন্য খানে খোঁজ নিন।
ডাক্তাররা বিনা প্রয়োজনে ঔষধ লিখে কথাটা খুব সত্য নয়। তবে ডাক্তারের সামনে ২০০ কোম্পানি আছে ডাক্তার যেকোনো একটা কম্পানির ঔষধ লিখতে পারে। এটা তার স্বাধীনতা তাই না? ২০০ কোম্পানির প্রত্যেকে চাইবে তার ঔষধ লিখাতে এটা সারা দুনিয়ার চিত্র। বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন ভাবে ডাক্তারকে কনভিন্স করতে চেষ্টা করবে এটাও স্বাভাবিক। এটা সারা দুনিয়ায় এভাবেই হয়।
মনে রাখতে হবে ঔষধ একটা পণ্য আর এই পণ্য বাজারজাত করার জন্য কোম্পানি গুলো বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক। সরকারের দায়িত্ব ঔষধের মান নিয়ন্ত্রন করা তাইনা? তাহলে ডাক্তার নির্দ্বিধায় যেকোনো ঔষধ লিখতে পারবে। অথচ আমি কোন রোগীকে ঔষধ লিখতে গেলে আগে চিন্তা করি এটা কোন কোম্পানির ঔষধ এটার মান ভালো কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। ডাক্তার হিসেবে এটা আমার চিন্তা কেন করতে হবে? এটা চিন্তা করবে ঔষধ প্রশাসন ।
ঔষধ ব্যাবহার বেড়ে যাওয়ার জন্য কি ডাক্তার দায়ী নাকি অন্য কিছু? দেশের জনসংখ্যা এখন কতো ধারনা আছে? ১৯৯৫ সালে সেটি কতো ছিল? মানুষের সচেতনতা বেড়েছে, পল্লি ও হাতুড়েরা আজকাল দেদারছে ঔষধ লিখছে, ফার্মেসিতে যে ঔষধ বিক্রি করছে সেও দেদারছে ঔষধ লিখছে ও বিক্রি করছে, অনেকেই নিজে নিজে ঔষধ সেবন করছেন।
এইগুলো কি ডাক্তার এর দোষ?
আরেকটা কথা বললেন যে ডাক্তাররা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কমিশন নিচ্ছেন। হা এটা অনেকেই করছেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। কিন্তু এই কাজটা করতে অনেক সময়ই ডাক্তাররা বাধ্য হন। আমি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।
আমি ঢাকায় চাকুরী করি। আমাকে বিকেল এ রোগী দেখতে হয় তাই আমার একটা চেম্বার প্রয়োজন। আমি কোথায় চেম্বার করব? টাকা দিয়ে চেম্বার ভাড়া করা কি আমার পক্ষে সম্ভব? না সম্ভব না। আর যদি টাকা দিয়ে চেম্বার ভাড়াও করি আমার কাছে কি রোগী আসবে? না আসবে না(যেটা হয়েছে আমার ক্ষেত্রে)। আমাকে দারস্থ হতে হয় কোন বিখ্যাত ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর কাছে।
আর ঐ সেন্টারে আমার চেম্বার টিকিয়ে রাখতে হলে অনেক সময়ই অযাচিত পরীক্ষা লিখতে হয় আর না লিখলে নিষ্ক্রান্ত হতে হয়, দোষটা কার?বিভিন্ন জেলা বা উপজেলা লেভেল এ সব রোগী প্রথমে ধরা খায় পল্লি বা হাতুড়ে এর কাছে। তারাই সব টেস্ট ঠিক করে দেয় ডাক্তারকে দিয়ে বাধ্য করায় টেস্ট লিখতে আর কমিশন সে নিয়ে নেয়। এটা বাস্তব চিত্র। শুধু টেস্ট এর কমিশনই না ডাক্তারের ভিজিট ও অপারেশন এর টাকা থেকেও সে কমিশন পায়। আর যে ডাক্তার কমিশন দেয় না তার রোগী নাই।
ডাক্তার বা ক্লিনিক এর কাছ থেকে আজকাল অনেকেই কমিশন খায়। একটা রোগী কোন ভাবে ক্লিনিক এ আনতে পারলেই টাকা এঁদের বলা হয় দালাল। পল্লি, হাতুরে থেকে শুরু করে রোগীর আত্মীয় স্বজন কেউ বাদ নাই দালালি থেকে। এমনও শুনেছি আপন মেয়ে মাকে ক্লিনিক এ এনে দালালির পয়সা খেয়েছে কারন মার চিকিথসার ব্যয় বহন করবে তার ভাইরা। অনেক সময় দেখেছি আমি অপেরাসন করে যে টাকা পাই একজন দালাল আমার চেয়ে বেশী টাকা শুধু রোগীকে ধরে নিয়ে এসে পাচ্ছে।
আর ক্লিনিক ওয়ালারা দালালকে স্যার স্যার বলতে অজ্ঞান আরও কতো খাতির! আর আমাকে খাতিরত দুরের কথা মুখ কালো করে যতটা সম্ভব কম টাকা দিয়ে বলছে স্যার রোগী অত্যন্ত গরীব ইত্যাদি ইত্যাদি।
অনেক ডাক্তারই ইনকাম ট্যাক্স দেন। কম দিলেও অন্তত দেন। অন্য পেশাজীবীদের সেই সুযোগ কম। কিন্তু সম্পত্তির হিসাব নেন , ঢাকা শহরে এতো যে ফ্ল্যাট হচ্ছে কারা কিনছে? নামে বেনামে কারা টাকার পাহাড় গড়ছে? আমেরিকাতে সবচেয়ে ধনী নাকি ডাক্তাররা।
আমেরিকান অনেক ডাক্তারের ব্যক্তিগত জেট আছে। হেলিকপটার তো কথাই নাই। যে আমেরিকা মানবতার কথা তুলে মুখ ফেনা ফেনা করে ফেলছে তাঁদের দেশে ডাক্তাররা এতো ধনী কিভাবে হয়? ওদের ডাক্তারদের কি মানবতা নাই? শুধু আমেরিকা নয় সারা দুনিয়ার সর্বত্রই ডাক্তারদের এই অবস্থা। তাহলে কি সারা দুনিয়ায় ডাক্তারদের মানবতা নাই? আসলে সারা দুনিয়ায় ডাক্তাররা যে সুযোগ সুবিধা পান তা আর কেউ পায় না । পেতে পারে না।
কারন এর চেয়ে কঠিন কিছু আর দুনিয়ায় হতে পারে না। মানুষের চিকিথসার চেয়ে মূল্যবান আর কিছু হতে পারে? না পারে না। আর তাই সব দেশের সরকার ডাক্তারদের সেই সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে, জনগণও ট্যাক্স দিচ্ছে দেদারছে। আর আমাদের ডাক্তাররা কি সুযোগ সুবিধা পায়? বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তার মধ্যে ডাক্তাররাই সবচেয়ে অবহেলিত। পাশ করার পর এমন যায়গায় পোস্টিং দেয় যে ওখানে বসার জন্য একটা চেয়ার পর্যন্ত সরকার দেয় না।
বাড়ি, গাড়ী সব সুযোগ কারা পায়? ডাক্তারি পড়া ও ডাক্তারি করা যে কতটা পরিশ্রমের তা শুধু ডাক্তার মাত্রই বুঝতে পারে। শুধু শুধু ডাক্তারদের গালি গালাজ না করে খোঁজ নিন দয়া করে সারা দুনিয়ায় ডাক্তাররা কি করছে, কি সেবা দিচ্ছে, কতো টাকা পাচ্ছে আর বাংলাদেশ এ কি হচ্ছে। দেখবেন বাংলাদেশ এর মতো এতো ভালো স্বাস্থ্য সেবা দুনিয়ার আর কোথাও নাই। আমাদের হাজার সীমাবদ্ধতার মাঝে আমরা জনগণকে যে সেবা দিয়ে যাচ্ছি এটা সারা বিশ্বের আর কোথাও যদি খুঁজে পান আমি ডাক্তারই ছেড়ে দিব। এটা আমার ওপেন চেলেঞ্জ।
প্রথম আলোকে বলছি আপনারা অর্বাচীনের মতো অশ্লীল ভাষা প্রয়োগে যেভাবে ডাক্তারদের হেয় করার চেষ্টা করছেন তা মোটেও কাম্য নয়। সভ্য সমাজে সব কিছু বুঝে শুনে ও পরিমাপ করে করতে হয়। আপনাদের দাবি মতে আপনারা দেশের সবচেয়ে বেশী প্রচারিত পত্রিকা। সেই পত্রিকায় এতো অপরিপক্ক ও অশোভননীয় সংবাদ পরিবেশন করার উদ্দেশ্য কি? এভাবে কি দেশে ভালো কিছু হবে? এইসব করে ডাক্তার ও জনগণের মাঝে খারাপ একটা সম্পর্ক গড়ে তোলাই কি আপনাদের লক্ষ্য? আমি এর আগেও খেয়াল করেছি আপনারা চিকিথসা নিয়ে অনেক নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করেছেন ও আপনাদের উদ্দেশ্য সফল ও হয়েছে? এইসব করে কাদের আপনারা লাভবান করছেন আর কাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছেন জানেন? আমাদের বিশাল জনসংখ্যা, সম্পদের সীমাবদ্ধতা , রাজনৈতিক অস্থিরতা এইসব সামুগ্রিক ব্যাপার গুলো কি আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কোন সমস্যা করছেনা? দয়াকরে একটু বাস্তবতার নিরিখে প্রকৃত চিত্রটা তুলে ধরুন। স্বাস্থ্য সেক্টরে অনেক অরাজকতা বিরাজ করছে; দলীয় লেজুড় বৃত্তির রাজনীতি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কতটা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে একটু গবেষণা করে দেখুন।
দেশ ও জাতীর প্রকৃত উপকার করতে হলে আরও গভীর ভাবে স্বাস্থ্য খাতকে পর্যালোচনা করে সঠিক তথ্য জাতীর সামনে তুলে আনুন। অসভ্য ভাষায় চটকদার কথা বলে সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে দেশের বারটা না বাজিয়ে দেশের প্রকৃত কল্যাণ কামনায় মনোনিবেশ করুন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।