যে জন দিবসে মনের হরষে পোস্ট পড়িয়া দেয় না কমেন্টখানি... তাহার উপর জ্বলিল ভাইয়ের বদনজর পড়িবে লইও জানি... ছোট বেলায় টিভি মানেই বুঝতাম বিটিভি, যা বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে রাত ১.৩০ এ বন্ধ হয়ে যায়। সেই টিভি দেখার জন্যে অপেক্ষার সীমা থাকত না। দুপুর ১২টা দেখে কখন ৩টা বাজবে সেই অপেক্ষায় বসে থাকতাম, অধিবেশন শুরুর আগে পুউউউউউউ করে একপ্রকার শব্দ হত সেটাও শুনতাম অনেক আগ্রহ ভরে। তারপর যখন থেকে সকালের অধিবেশন শুরু হল তখন আমাদের আনন্দ দেখে কে? তখনকার বিটিভি তে কিছু বিদেশী সিরিয়াল বাংলা করে দেখাত, আমরা মন্ত্র মুগ্ধের মত দেখতাম, সপ্তাহে একদিন দেখতাম, বাকি ৬দিন তার আলাপ আমাদের বন্ধুদের মুখে মুখে থাকত, এর মধ্যে কিছু সিরিয়াল হটাত করে বন্ধ করে দেয়া হলে আমাদের উপর যেন বাজ পড়ল... এই শোকে অনেক দিন পর্যন্ত ঠিক মত খাওয়া দাওয়াও করতে পারি নি... সেইরকম কিছু টিভি সিরিজ আর কার্টুন এর কথা এক জলক শুনে নিন, দেখেন তো এগুলর কথা আপনার মনে পড়ে কিনা? টিম নাইট রাইডার এটি ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয় সিরিজ, কথা বলা গাড়ি গুলোকে আমি এতই পছন্দ করে ফেলেছিলাম যে নিজেও ওগুলোর মত কথা বলা শুরু করেছিলাম। স্পেল বাইন্ডার এই সিরিজের স্পেশাল জ্যাকেটগুল ছিল আমার অনেক প্রিয়, তখন যদি কেউ আমাকে এই জ্যাকেট দিয়ে তার বদলে আমার জমি জমা দাবি করত আমি তাও দিতে রাজি হয়ে যেতাম। রোবোকপ এই জিনিস দেখে এর নকল করতে করতে এমন অবস্থা হয়েছিল যে অনেক দিন ইচ্ছা করেও স্বাভাবিক ভাবে হাটতে পারতাম না... ওশন গার্ল পানির নিচে তিমি মাছের সাথে সাতার কাঁটা মেয়ে এবং তার কিছু বন্ধুদের নিয়ে কাহিনি... এটা দেখতাম আর সোফার উপর সাতার কাটতাম দি নিউ অ্যাডভেঞ্চার অফ রবিন হুড বনে জঙ্গলে রবিন হুডের দৌড়া দৌড়ী ভালই লাগত, যখন রবিন হুডের নায়ক চেঞ্জ হইল ছোট্ট মনে অনেক দুক্ষ পেয়েছিলাম দি নিউ অ্যাডভেঞ্চার অফ সিনবাদ এটি আমার অন্যতম প্রিয় সিরিজ ছিল, আমরা বন্ধুরা সিনবাদ সিনবাদ খেলতাম, আমি একটু নাদুস নুদুস ছিলাম বলে আমাকে সবসময় ডুবার এর ভুমিকা নিতে হইত... ইয়ং হারকিউলিস এইটা রাত ১০টার পরে হইত বলে অনেক পরবই মিস করেছি... তাও এর নায়িকাটার কথা ভুলি নাই দি এক্স ফাইলস আমি ছোট বেলায় অনেক ভিতু ছিলাম, এইটা দেখার সাহস পেতাম না, যেদিন ১ম পুরা পর্ব দেখলাম, সেদিন বুঝলাম আমি বড় হয়ে গেছি আর্থ ফাইনাল কনফ্লিক্ট এই সিরিয়াল দেখতাম আর হাতের কাছে যেটাই পাইতাম সেটাই হাতে পেঁচাইয়া ঠিসু ঠিসু করে বেড়াইতাম... মিস্টিরিয়াস আইল্যান্ড এই সিরিজে কিসের কারনে কি হচ্ছে এইটা বুঝতে আমার পিচ্চি মস্তিস্কের অনেক দিন লেগে গিয়েছিল গডজিলা দি সিরিজ এটি দেখে আমিও বহুত দিন ডাইনসর পুষতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোথাও গডজিলার ডিম খুঁজে পাইনি... জুমাঞ্জি এইটা দেখে নিজেদের লুডু কে জুমাঞ্জি মনে করে খেলতাম উডি উড পেকার ছোট বেলার নির্মল বিনদন... এইটা হইত দুপুরে, পড়ার সময় এইটা দেখতে আব্বুর বিশেষ অনুমতি নিতে হইত মুগলি এইটা না দেখলে কোন সুক্রুবার কে সুক্রুবারই মনে হইত না... ক্যাপ্টেন প্লানেট এইটা ছিল আমার অন্যতম প্রিয় কার্টুন, আমি একদিন টেলিফোনের তার কাইটা নিজের আঙ্গুলে পেঁচাইয়া আংটি বানাইসিলাম, তার পরের কথা আর কমু না ... সামুরাই এক্স তখন পটুয়াখালি থাকতাম, একবার পটুয়াখালি থেকে ঢাকা আসার দিন লঞ্চ প্রায় মিস করে ফেলেছিলাম এই কার্টুন দেখতে গিয়ে... কার্টুন শেষ হবার আগে আমার আব্বু আম্মু আমাকে টিভির সামনে থেকে সরাতে পারেনি... অবশ্য এখন পর্যন্ত আমার নায়কটাকে মেয়ে মেয়ে লাগে... তাও বুঝে পাই না মুখে কাটা দাগ নিয়েও কেও এত সুদর্শন কিভাবে হতে পারে? ঘোস্টবাস্টারস এইটা দেখে আমরা বন্ধুরাও বহুদিন চিপায় চাপায় ভুত খুঁজে বেরিয়েছি... এইবার আপনারা বলেন আপনাদের সাথে কতগুল মিলল? যারা ছেলেবেলা ১৯৯৫-২০০০ এর ভিতর কাটিয়েছেন, তাদের সবারই এর কথা মনে পড়বে... পড়তেই হবে... এগুলর কথা মনে পড়লে এখনও নস্টালজিক হয়ে যাই... বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, যদি ভুল করেও এগুলর একটাও দেখিয়ে ফেলে, এই আশায় এখনও মাঝে মাঝে বিটিভি দেখি...... ব্লগারদের অনুরধে এই সিরিয়াল গুলাও অ্যাড করা হইল। এই গুলাও অনেক জনপ্রিয় ছিল সেইসময়: ঠান্ডার ইন প্যারাডাইস ম্যাকগাইভার দি এ টিম
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।