সকালে উঠেই টিভি পর্দার স্ক্রলে ভেসে উঠলো দৌলতদিয়া ঘাটে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সাথে টার্মিনাল শ্রমিকদের সংঘর্ষ। সাথে সাথে গোয়ালন্দের বিএনপির বন্ধুদেরকে ফোন দিলাম। ওরা বললো, ফেরীঘাটে পুলিশ ও কিছু আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রচন্ড বাধার কারনে হেফাজতের সব হুজুররা গাড়ী নিয়ে ফেরত চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। দৌলতদিয়ার সব ফেরী, লন্চ, ট্রলার, নৌকা বাধ্যতামুলকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এটা নুতন কিছু নয়, এরশাদের সময় সম্ভবত ১৯৮৭ সালে ৭ দল, ১৫ দল ও জামাতে ইসলাম মিলে যে ঢাকা অবরোধের ডাক দিয়েছিল, তখনো এটা করা হয়েছিল, কিছুদিন আগে বিএনপির ডাকা ঢাকা ঘেরাও কর্মসুচী একইভাবে প্রতিহত করা হয়েছিল।
ইন্টারেস্টিং ঘটনা যেটা তা হলো, বিএনপি হেফাজতের ডাকা লং মার্চকে ইসলাম রক্ষায় নৈতিক সমর্থন দিলেও দৌলতদিয়া ঘাটে তাদের সাবেক এমপি বা কোন নেতা কর্মীর ন্যুনতম তৎপরতাও ছিল না। যদিও তার মাত্র একদিন আগেও নাকি তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাতক্ষিরা সফরে যাওয়ার সময় রাত প্রায় দুটো পর্যন্ত ফেরীঘাটে প্রায় পাচ হাজার লোক উপস্হিত হয়েছিল। এটা শুনে কলেজ জীবনের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। ফরিদপুর ইয়াসিন কলেজের বাংলা সাহিত্যের খুব জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন, সোবহান স্যার। তিনি বলছিলেন, নেতারা কখনো গুলি খেয়ে মরেন না বা শহীদ হন না, কারন তারা আগেই জানতে পারেন মিছিলটা ঠিক কোন জায়গায় গেলে গুলিটা করা হবে ।
তো একবার সরকার বিরোধী এক বিশাল মিছিল প্রচন্ড বেগে এগিয়ে যাচ্ছিল। মিছিলের শুরুতে নেতা দিলেন জ্বালাময়ী এক ভাষন, একেবারে সামনে থেকে লিড দিয়ে নিয়ে যেতে থাকলেন মিছিলটি। ভাবখানা এমন যে গুলি গ্রেনেড ককটেল যাই আসুক, সবার আগে তার উপর দিয়েই যাবে। কিন্তু নেতা ঠিকই জানতেন গুলিটা করা হবে বাংলা মোটরের ঠিক আগের গলিটার কাছাকাছি। তিনি ঐ গলিটার কাছাকাছি পৌছতেই দাড়িয়ে গেলেন মিছিলের সামনের মাঝামাঝি জায়গায়, আর দু'হাত উঠিয়ে সবাইকে বলতে লাগলেন, এগিয়ে যাও, এগিয়ে যাও, এগিয়ে যাও! মিছিল এগিয়ে যেতে লাগলো, উনি পিছিয়ে যেতে লাগলেন।
এক পর্যায়ে মিছিল এগুলো, উনি সবার অলক্ষ্যে দেয়াল টপকালেন। কয়েকগজ দুরেই মিছিলের উপর গুলি হলো, লাশ পড়লো, নেতা বের হয়ে এসে লাশ কাধে তুলে নিলেন, বজ্রকন্ঠে আওয়াজ দিলেন, এক শহীদের রক্ত থেকে লক্ষ শহীদ জন্ম নিবে.............! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।