জীবন নামের ট্রেনে চড়েই পাড় হয়েছি এতটা বছর।
চলতে চলতে আমার ট্রেন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে,
তবু যাত্রা শেষ হয় না, এই ক্লান্তি নিয়েই এগিয়ে চলা।
আমার ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা একজন।
সব ট্রেনের মত আমার হৃদয় ট্রেনও যাত্রী তুলতে
থেমেছিল স্টেশনে স্টেশনে তবু আজ আমার বগী গুলো নির্জন।
প্রথম যখন ট্রেন থেমেছিল তখন আমার বয়স ষোল,
স্টেশনের নাম কোচিং সেন্টার আর যাত্রী-শিউলি।
শিউলি ফুলের মত সাদা মুখ আর অরেঞ্জ রঙের ঠোট।
সে আমার প্রথন প্রণয়, কৈশরের প্রথম ভালোলাগা;
সকালে ঝরে পড়া শিউলির মত সে ও ঝরে গেছে জীবন থেকে।
আবার শুরু হল ট্রেনের এগিয়ে চলা তার একমাত্র যাত্রী নিয়ে।
এরপর যখন ট্রেনটি আবার থামলো তখন আমি ঊনিশ,
রাখি সেবার উঠেছিল আমার ট্রেনে; কিন্তু কপালের লেখা-
চলতে হবে একা। ট্রেন ছাড়ার আগেই গেলো নেমে।
এগিয়ে চলা, শুধুই এগিয়ে চলা। আমি একা আমি একা।
স্টেশনের নাম ইউনিভার্সিটি থামলাম আবার
আমি যাকে ট্রেনে তুলতে চাই সে উঠবে না
আর যে উঠতে চায় আমি তাকে তুলব না।
দ্বিধা দন্দেই কেটে গেল ছয় ছয়টি বছর
তারা দুজনেই উঠে গেল অন্য দুটি ট্রেনে।
চেয়ে চেয়ে দেখলাম শুধু দাঁড়িয়ে আপন স্টেশনে।
এরপর আবার থামল আমার ট্রেন,কিন্তু কোন স্টেশনে নয়
বিয়ে নামের শেকল টেনে একজন উঠে এল ট্রেনে।
তারপর বেশ ভালোই চলছিল কয়েকটি বছর;
এক বর্ষায় আমার চোখে বষ্টি নামিয়ে সে ও চলে গেল।
আবার শুরু হল একা চলা, শুধুই এগিয়ে চলা
হাজারো মাইল দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে
আমার ট্রেন আজ জরা জীর্ন,ব্রেক হয়েছে বিকল-
আর থামেনা কোন স্টেশনে।
সব স্টেশন পাড়িদিয়ে আমি আজ ষাট এর স্টেশনে
ট্রেন আর চলতেই চায় না,মাঝে মাঝে থেমেও থামেনা।
ট্রেনের গতি আসছে কমে
নামতে হবে পরের স্টেশনে-বার্ধক্য যেখানে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।