এ অভিযানে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের হতাহত হওয়ার প্রতিবাদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের হরতালের মধ্যেই বুধবার সকালে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, "শাপলা চত্বরের ঘটনায় কত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, যৌথ বাহিনীর অভিযানে কত সদস্য ছিলেন, সেখানে কত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়েছে- ইত্যাদি বিষয়ে আমরা সরকারের ভাষ্য অর্থাৎ প্রেসনোট চাই।
৫ মে রাতে এ অভিযানে মতিঝিল এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে বিজিবি-র্যাব-পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী যৌথভাবে হেফাজতের নিরস্ত্র মুসল্লিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে দাবি করে শামসুজ্জামান বলেন, "এই অভিযানে প্রাণহানি সম্পর্কে বাতাসে গুঞ্জন আছে, যা বিদেশি প্রচার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রেসনোটও অদ্যবধি প্রকাশ করা হয়নি। "
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ ব্রিফিং হয়।
দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ‘স্বতস্ফূর্তভাবে' জনগন পালন করছে দাবি করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, "একাত্তর সালের আগে শেখ মুজিবের অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে যেভাবে হরতাল হয়েছে, আজো সারাদেশে জনগন স্বতস্ফূর্তভাবে ওইরকম হরতাল পালন করে সরকারের নির্মমতার প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
"
তিনি জানান, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী আসুলিয়া, জামালপুর, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর প্রভৃতি স্থানে দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়ে অনেককে গ্রেপ্তার ও আহত করেছে।
দুদু অভিযোগ করে বলেন, সরকার শাহবাগে গনজাগরণ মঞ্চকে র্যাব-পুলিশ পাহারায় তিন মাস ধরে সমাবেশ করতে দিয়েছে। অথচ অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজত ইসলামকে ৩ ঘণ্টাও শাপলা চত্বরে থাকতে দেয়া হলো না।
"নিরস্ত্র মানুষের ওপর চতুর্দিক থেকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হলো। এই নির্মমতা অতীতের সব কিছুকে হার মানিয়েছে।
’’
তিনি বলেন, "এই নির্মম ঘটনার পর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষিত পণ্ডিততুল্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে কোনো কিছুই বলছেন না। বিদেশি প্রচার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে। তাদের (সরকারের) কাছে আমরা জানতে চাই- কত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে সেদিন। ’’
ওই অভিযানে সহস্রাধিক নিহত হয়েছে এবং লাশ গুম করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছে বিএনপি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দাবি, লাশের বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে বিএনপি।
‘গুম’ হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা দিতেও বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে বুধবার ভোর থেকে নয়া পল্টনের কার্যালয়ের সামনে পুলিশ পাহারা বসিয়েছে। কোনো নেতা-কর্মীকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। প্রধান ফটকের কলাসিবল গেইট বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাত থেকে কার্যালয়ের ভেতরে শামসুজ্জামান দুদু, মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মো. জসিম, বেলাল আহমেদ, কৃষক দলের এস কে সাদী, স্বেচ্ছাসেবক দলের আক্রামুজ্জামান টোকন প্রমুখ নেতারা অবস্থান করছেন।
কার্যালয়ের কাছাকাছি রয়েছে র্যাব সদস্যরা। এছাড়া সাঁজোয়া যানসহ জলকামান ও প্রিজন ভ্যানও রয়েছে।
পুলিশি অভিযানে হেফাজতে ইসলামের কর্মী হতাহতের প্রতিবাদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের দুই দিনের হরতাল চলছে।
গত রোববার ঢাকা অবরোধের পর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া হেফাজতকর্মীদের ভোররাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হটিয়ে দেয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।