আমি সুমাইয়া বরকতউল্লাহ। ছাত্রী। লেখালেখি করা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ছড়া, গল্প লিখি। পত্রিকায় নিয়মিত লিখি।
লেখালেখি করে বেশ কয়েকটা পুরস্কারও পেয়েছি। শিশু অধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ (প্রিণ্ট মিডিয়া) পর পর ৩ বার জাতিসংঘ-ইউন
মেলাতে গিয়েছি ২৪ ও ২৫ তারিখে।
২৪ তারিখ শুক্রবার। প্রচণ্ড ভিড়। প্রথমেই গেলাম সিঁড়ি স্টলে।
স্টলে রাখা বই দেখে সে কী আনন্দ আমার।
স্টলে স্টলে ঘুরছি। অনেক বই এসেছে মেলাতে। অনেক পুরনো লেখকের পাশাপাশি অনেক নতুন নতুন লেখকের সুন্দর সুন্দর বই। বিদেশি লেখকদের অনুবাদ বই।
নতুন বইয়ের গন্ধে আমার মন ভরে গেল। বইয়ের পাতা ওল্টেপাল্টে দেখছি। পছন্দের কিছু বই কিনেছি।
হঠাঃ করেই সময় টিভি চ্যানেলের দেখা। ইন্টারভিউ করবে।
এই ভিড়ের মধ্যেই একটু জায়গা করা হলো। ইন্টারভিউ হলো।
সন্ধ্যা হয়ে এল। ঘুরতে ঘুরতে চলে গেলাম লিটলম্যাগ চত্তরে। তারপর বিএসবি, ডাকটিকিট ও আমার ব্লগ স্টলের সামনে যেতেই কয়েকজনের সাথে আলাপ পরিচয় হলো।
মনে হলো অনেকেই ব্লগার। এমন সময় এলেন ব্লগার সাইফ মাহদী ভাইয়া। কথা হলো। মনে হলো অনেকদিনের চেনা জানা। অথচ এই প্রথম দেখা।
খুবই আন্তরিক তিনি। হঠাৎ করে বললেন, একটু দাঁড়াও, ’আমি আসছি, ৫মিনিট। দাঁড়ালাম। একটু পরে তিনি হাঁপিয়ে-দাপিয়ে এসে বললেন, কপাল খারাপ। তোমার বইটি কিনে আনতে গেলাম সিঁড়ি স্টলে।
একটি অটোগ্রাফ নিতে চাইছিলাম তোমার। পেলাম না, বই নেই। ’ তারপর সাইফ ভাইয়া তাঁর ডায়রি মেলে দিয়ে বললেন, ’এখানে তোমার মেলায় আসার অনুভূতি লিখে দাও। ’ লিখে দিলাম।
চলে আসব এমন সময় এলেন এক ভাই।
একজন পরিচয় করিয়ে দিলেন। তিনি হলেন ছড়াকার রহীম শাহ। খুব মজার মানুষ। খুব আন্তরিক। মেলায় ছোট লেখিকা পেয়ে তিনি খুব খুশি।
কি করবেন না করবেন বুঝতে পারছেন না। শেষে পকেট হাতিয়ে একটা চকোলেট বের করে আমার হাতে দিলেন, তাঁর সাথে ছিল কমলা, তাও দিয়ে দিলেন, তারপর হাতে ছিল তাঁরই লেখা একটা পাখি বিষয়ক বই, সেটাও দিয়ে দিলেন। আমি অবাক হয়ে তাঁর দেওয়া জিনিসগুলো নিলাম। তাঁর আন্তরিকতা দেখে মুগ্ধ হলাম। পরে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।
তারপর কয়েকজন কবি-সাহিত্যিকের সাথে দেখা। ছবি তোলাতুলি হলো। লুৎফর রহমান রিটন আমার বইটি ওল্টে-পাল্টে দেখে বললেন, ’আয় হায়, সুমাইয়া তুমি তো দেহি পুরস্কার পাইয়া ফাডাইয়া-ফুডাইয়া ফালাইছ, আমিওতো এত পুরষ্কার পাইনাই। আগামীকাল এস মেলাতে, ইন্টারভিউ নেব নে তোমার। ’ তারপর চলে এলাম বাসায়।
২৫ তারিখ শনিবার।
মেলাতে গিয়ে ঢুকে পড়লাম চ্যানেল আই ’সরাসরিতে’। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করছেন লুৎফর রহমান রিটন ভাই। সরাসরি অনুষ্ঠানে আলাপ হলো বই নিয়ে।
ইমরান মাহমুদ নামে এক সাংবাদিক ভাইয়া আমার ইন্টারভিউ নিলেন বিএসবি স্টলের সামনে।
অনেক প্রশ্ন করলেন। অনেক জবাব দিলাম। অনেক আলাপ হলো তাঁর সাথে।
সন্ধ্যার পরপর। চলে আসছি।
রাস্তায় বেরিয়ে ডানদিকে গেলাম। যাওয়ার সময় চা খেতে গেলাম। পাশেই দেখি রাইটার্স গিল্ড-এর স্টল। মনে মনে ওবায়দুর রহমান ভাইয়া ও অন্য ব্লগারদের খুঁজছিলাম। পাইনি।
অনেক ব্লগার ভাইয়ার লেখা বই আছে এ স্টলে। বইগুলো দেখছি। এমন সময় একুশে টিভি চ্যানেল-এর লোকেরা বললেন, আমার ইন্টারভিউ করবেন। দাঁড়িয়ে গেলাম ক্যামেরার সামনে। সাক্ষাৎকার শেষে তাঁরা জানালেন, এটি রাত ন’টায় ও এগারটার খবরে দেখানো হবে।
পরে মনের আনন্দে রওনা হলাম বাসার উদ্দেশে।
আসার পথে বাবার মোবাইলফোনটা বেজে উঠল। সাইফ মাহদী ভাইয়ার ফোন। বাবা আমাকে দিলেন। গতকাল আমার দেয়া অনুভূতির কথাগুলো নাকি পত্রিকায় ছাপিয়েছেন, আমাকে দিতে চান।
আমরা চলে আসার একটু পরেই নাকি তিনি মেলাতে এসেছেন। পত্রিকা তিনি পাঠিয়ে দেবেন বলে জানালেন।
রাত ১০টায় ফিরলাম বাসায়। মেলা থেকে নেওয়া বইগুলো দেখছে সবাই। এমন সময় টুক টুক করে চলে এলেন আমার দাদি।
হাসি হাসি মুখে বললেন, ’তোমারে তো টিভিতে দেখলাম। কথা তো ভালই শিখেছ তুমি। এতগুলান পুরুষ বেটাগোর মধ্যে দাঁড়াইয়া এতকথা কেমনে কইলা তুমি দাদা, ডর করে নাই তোমার?’ এ কথা শুনে সবাই হা: হা: হো: হো: করে হাসতে লাগলাম। দাদিও পেট নাচিয়ে হাসে।
রাত এগারটা বাজতেই বসলাম টিভির সামনে।
একুশে টিভির সংবাদ দেখছি। খবরের শেষ পর্যায়ে আমার সাক্ষাৎকারটি সংপ্তিভাবে দেখালো। ভাল একটা মন নিয়ে ঘুমুতে গেলাম।
আমিমেলা সর্ম্পকে পরে আরেকটা পোষ্ট দেবো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।