আমার একটা ল্যাপটপ হয়েছে এখন নিজেস্ব। লেখার স্বাধীনতা এবং সময় অনেকটাই বেড়েছে। তবে একটা অসুবিধা হয়েছে, ল্যাপটপ অন করার সাথে সাথে অর্ন্তজালে ঢুকে পড়ি। আগে শুধু ইমেল, এম এস এন বা ইয়াহু ম্যাসেঞ্জারে পরিবারের লোকজন বা বন্ধুদের সাথে কথা হতো মাঝে মধ্যে। গান শোনা বা অনলাইন পত্রিকা পড়া ছিল বাংলার প্রতি অর্ন্তজালের আর্কষণ।
সেখানে এখন অনেক কিছুর সমাহার। ফেইস বুক নামের একটা বিষয় খুব জনপ্রিয় বাচ্চাদের কাছে আমাকেও একটা একাউণ্ট করে দিল কিন্তু যোগাযোগ করার তেমন কেউ নেই আমার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কিছু আত্মীয় বন্ধু পাওয়া গেল দিনে দিনে। বছরখানেক ধরে বাংলাদেশ থেকে বেশ কিছু অজানা মানুষ প্রায় বন্ধু হবার আহ্বান জানায়। অদেখা কারো কারো সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে ।
অনলাইনে আসার সাথে ইচ্ছে হয় বন্ধুদের খবর জানি। অনেকে কথা বলার জন্য ব্যস্ত হয়। বেশ সময় ব্যয় হয় এতে। তাই প্রায় সময় ল্যাপটপ নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাই নির্জনে অথবা কফিসপে বসে লিখি আপন মনে।
ভালোলাগা আর ভালোবাসা একাকার।
পৃথিবী অনেক বড় কিন্তু প্রযুক্তির জন্য দূর দুরান্ত আজ চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশীরা এক নিমিশে একটি আঙুলের ছোঁয়ায় চলে আসেন কাছাকাছি, নিজের ঘরে বসে। কেউ বাংলাদেশে, কেউ আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া,প্যারিস, জাপান, দুবাই, যে কোন দেশ এখন ঘরের মধ্যে। উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম সব এক বিন্দুতে মিলিত কম্পিউটারের পর্দায়, অর্ন্তজালের বন্ধনে। পরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ আর অপরিচিত অজানা মানুষ হয়ে উঠে দিন দিন আপন এই মেল বন্ধনে।
অনেক দিন আমি বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে উত্তর গোলার্ধের এক শহরে বাস করছি, ভিন্নভাষা, ভিন্ন পরিবেশ, অনেক অপরিচিতির সাথে সারাক্ষণ বসবাস কিন্তু মন জুড়ে বাংলাদেশ অনুভবে অনুভূতিতে হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে। নিজের অনুভবগুলোও আজ কাল লিখে রাখি বৈদ্যুতিক খাতার পাতায় আঙ্গুলের ছোঁয়ায় ছোঁয়ায়।
একাকী অবসর সময় লেখার আশ্রয়ে কাটানোর প্রচেষ্টায় জীবনের নানান বাস্তব অভিজ্ঞতা, স্বপ্ন ইচ্ছা আর বাস্তবতার টানা পোড়েন, হয়ে উঠে এক একটি কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ভ্রমন কাহিনী দিনে দিনে। আর্ন্তজাতিক ইংরেজি ভাষার মাঝে বাস করেও সাচ্ছন্দ এখনও নিজের মাতৃভাষায়। বাংলায় যেভাবে প্রাণের কথা বলতে পারি তেমন সহজ সাবলিল স্রোতধারা আর কোন ভাষায় পাই না তাই সমস্ত লেখালেখি বাংলায়।
আর এই বিদেশে কে বুঝবে আমার প্রাণের ভাষা তাই আবার আশ্রয় খুঁজি অর্ন্তজালের ছোঁয়ায়। একটি ক্লিকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেই সব লেখা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা অর্ন্তজালের বাংলা পত্রিকায় আর দেশে আমার প্রাণের দেশে।
ই-মেইলে আসা যাওয়া, ছুটাছুটি, ভুল সংশোধন, কাছে বসে প্রুফ দেখার মতই ব্যাস্ততা আর উত্তেজনা। এভাবেই বের হয় ২০০৭ এ আমার প্রথম ছোট গল্পের বই চন্দ্রিমায় নীলজল। আবারো নিজের মতন লিখে যাচ্ছি।
ফেব্রুয়ারী আসছে মন খারাপ করছি বইমেলার ঘ্রাণ, আবেগ, ভালোবাসা, আনন্দ বঞ্চিত এই পরবাসে বসে। জানুয়ারির শুরুতে প্রকাশকের তাগাদা পৌঁছাল গল্প চায়। মিজান পাবলিশার্স আবারও আমার বই করতে চান। কিছু গল্প আছে তবে বই হবার মতন নয়। আর একটা লেখা লিখছি ধীরে সুস্থে আপন মনে।
সেই লেখাটা নিয়েই ব্যস্ত হলাম ক’দিন নাওয়া খাওয়া ছেড়ে, এত আমার অনেক বড় পাওয়া প্রকাশক বই চেয়েছে, যদি শেষ করতে পারি তাহলে এ মেলায় আসবে বইটা। কাজ থেকে ছুটি নিয়েছি অনলাইন থেকে হারিয়ে গেছি ডুবে গেছি লেখার জগতে। সময়ের সহযোগিতায় অর্ধেক লেখা অল্প কদিনেই হয়ে গেল উপন্যাস। জীবনের নানান বাঁক, হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রবাহের কথা, বিচিত্র মানুষের অনেক রকম জীবনী যা আমাদের চারপাশে ঘটে প্রতিদিন তারই কিছু গল্প নিয়ে আমার এই উপন্যাস অজানার স্রোতে। লেখার কাঠামো তৈরী হওয়ার পর মনে হলো প্রথম উপন্যাস সম্পর্কে যদি একজন বড় উপন্যাসিক দুটো শব্দ লিখে দিতেন।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আমার প্রিয় লেখক উনার কথাই মনে হলো। যোগাযোগ করলাম, অনেক আশংকা, ভয়, সংকোচ নিয়ে মনের বাসনাটা প্রকাশ করে ফেললাম। উনি রাজী হলেন কি যে ভালোলাগল। যদিও বললেন, ''সময়টা খুব কম হলো যে। ” যথা সম্ভব দ্রুত পাঠিয়ে দিলাম পাণ্ডুলিপি।
মলাটের কাজ চলছে। চলছে অন্যান্য প্রস্তুতি। কদিন পর সুনীলদার বাড়িতে ফোন করলাম, ব্যস্ত মানুষ বাড়ি নাই। আজ দিল্লী, দুদিনপর, শান্তিনিকেতন, আবার হায়দ্রাবাদ। কলকাতায় ফিরতে না ফিরতেই যেন বাইরে বড় বড় অনুষ্ঠানে যাওয়ার দিন পঞ্জিকায় তারিখ বাঁধা।
নিজের কাছেই ভিষণ লজ্জা লাগল। এত ব্যস্ততার মাঝে আমার এই ক্ষুদ্র লেখার জন্য সময় কখন পাবেন। এছাড়া নিজের কত কাজ থাকে উনার।
আবারো সেই একই রকম ব্যস্ততা লেখা পাঠানো, প্রুফ রিডিং, বারবার পড়ে নিজের মতন সংশোধন, কিছু লাইন বদলে ফেলা কিছু বাক্য, শব্দ নতুন করে জুড়ে দেয়া এভাবে ক’দিন কাটল ভীষণ ব্যস্ততায়। সব ঠিকঠাক হচ্ছেতো, কোথাও ভুল থেকে গেল না তো, আশঙ্কা ঘিরে থাকে।
প্রকাশকের শেষ তাগিদ এবার শেষ দেখা শেষ করেন আর সময় দেয়া যাবে না। চৌদ্দ তারিখের মধ্যে বই বের হবে। দশ তারিখ থেকে চৌদ্দ তারিখ মোটে পাঁচ দিনের ব্যবধান। এইটুকু সময় আমার কাটে না। প্রচণ্ড অস্থিরতা উত্তেজনায় দূরে বসে শুধুই অপেক্ষা।
নিজের পাণ্ডুলিপিতে আর চোখ বুলাই না যদি কিছু বদলে ফেলতে ইচ্ছে হয় সে সুযোগ আর নাই। বরফ শীতলতা আর শুভ্রতা ছড়ানো আমার চারপাশে আমার বাস্তবতায় অথচ ফাল্গুনের উজ্জ্বল রঙিন দিন আর অনেক আনন্দ মেলায় ভাসছে বাংলাদেশ। চৌদ্দ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস কোকিলের ডাক, শিমুল, পলাশ, একুশের কবিতা, গান আমার ঘরে, আমার চোখের সামনে সারাক্ষণ। সেও আমার কম্পিউটারে সরাসরি বাংলাদেশ তুলে দিয়েছে ইংল্যান্ডে থাকা ক’টি বাংলাদেশী ছেলের উদ্যোগ। ওরা আগ্রহ করে বাংলদেশের টেলিভিশন ”দেশীকথা” অনলাইনে না দিলে আমাকে কল্পনার চোখে ফাগুনের উজ্জ্বল দিন, বইমেলা দেখতে হতো।
কিন্তু ওদের ইচ্ছা ওদের কাজ বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে আমার হাতের মুঠোয়, একটি আঙ্গুলের ছোঁয়ায় আমার বাস্তবতায়। আর আমার বইয়ের মলাট রয়েছে ওদের ওয়েব পেইজের অর্ধেকটা জুড়ে। এই সৌজন্য, সম্মান হৃদয় ভরে উঠে ভালোলাগায়। অজানা মানুষ কেমন আপন হয়ে উঠে। অনেকগুলো বাংলাদেশের চ্যানেল পাওয়া যায়।
তবে সরাসরি বই মেলার অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় প্রতিদিন বাংলাভিশন চ্যানেলে, আর আমি তা দেখি দেশীকথার মাধ্যমে অনলাইনে। বাংলাদেশে যখন বিকাল আমার তখন ভোর। সারারাত জেগে উত্তেজনা ভাগ করছি সেই একই অনলাইনে অনেকের সাথে গল্প করে, যারা ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর অনেকদেশে। কারো সকাল কারো, বিকেল, দুপুর, মাঝরাত। নানান সময়ে থেকে নানান দেশ থেকে আমরা মিলিত হয়েছি এক বিন্দুতে এমনি এক অর্ন্তজাল মিলন ক্ষেত্র ”মাইবাংলা স্পেইসে”।
গল্পে গল্পে,আড্ডায় আমার ভোর সাড়ে পাঁচটা। ওদের বললাম, আমি এখন বই মেলাই যাই, যদি নতুন বই পরিচিতিতে আমার বইটা দেখায়, আজ আসার কথা মেলায়। টেলিভিশনে এখন বইমেলা দেখাবে ওদের কাছে বিদায় নিয়ে আমি ফিরে এলাম অনলাইনে টেলিভিশনের পাতায়। তীর্থের দৃষ্টি আমার দুচোখ জুড়ে। গোগ্রাসে গিলে ফেলছি যেন হাজার মানুষের ভীড়।
খুঁজে ফিরছি চেনা পরিচিত মুখ, আপনজন। টিভির উপস্থাপক জানতে চাইছেন কবি লেখকদের কাছে ভালোবাসার অনুভুতি। আসাদ ভাই, কবি আসাদ চৌধুরী ভালোবাসার অনুভব জানাচ্ছেন, উনিই তো আমার বই-এর মোড়ক উন্মোচন করবেন আর খানিক পরে, সে অংশটুকু কি দেখতে পাবো? আজানা দোলাচালে আমার হৃদয় আন্দোলিত হতে থাকে। ইমদাদুল হক মিলন, মকবুলা মঞ্জুর, কাজী রোজী একে একে অনেকের বই, নতুন বই আর ভালোবাসার অনুভব শুনে যাই। সময় শেষের পথে উপস্থাপক বলেন, এবারে আমরা যে নতুন বইটির সাথে পরিচিত হবো তার লেখক এখানে উপস্থিত নেই কিন্তু যিনি এই বইটি পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই, সবাই তাকে চিনেন,তার কাছে জানতে চাই আপনার ভালোবাসার অনুভব বলেন এই ভালোবাসা দিবসে।
কবি, কথা সাহিত্যিক উপন্যাসিক রোকসানা লেইস, ’অজানার স্রোতে’ এই উপন্যাসের লেখক আমার ভালোবাসার নারী, এই ভালোবাসার দিনে যে আমার থেকে যোজন যোজন দূরে বাংলাভিশন টেলিভিশনের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে জানাই আমার ভালোবাসা। টিভি উপস্থাপক, অনেক খুশী হয়ে উঠেন অভিভুত হয়ে বলেন, "এমন বড় উপহার আর বোধহয় আমরা কাউকে দিতে পারিনি আমাদের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। " শেষ হয় সরাসরি বইমেলার অনুষ্ঠান আর ভোর রাতের নির্জন ঘরে আমি আবেগে ভালোলাগায় অভিভূত হতে থাকি, আমার বই, আমার প্রিয়জন, আমার ভালোবাসা আমার ঘরে পৌঁছে গেলো অর্ন্তজালের ছোঁয়ায়। আবার আমি ফিরে যাই অর্ন্তজালের বন্ধুদের কাছে আমার অনুভব বণ্টন করতে ঘুমহীন রাত খুশির হাওয়া ছড়ায়।
আমাকে অবাক করে দিয়ে মার্চের শেষ দিকে একটা ই -মেলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা এসে পৌঁছায়।
বড় মানুষদের মহত্ব দায়িত্ব আমাকে আলোড়িত করে বিমুগ্ধ হই । বইমেলার সময়ে লেখাটা করতে পারেননি কিন্তু শত ব্যস্ততার ভীড়ে সময় করে ঠিকই পাণ্ডুলিপি পড়েছেন, লেখাটা তিনি করে দিয়ে ঋণের বাঁধনে বেঁধেছেন আমাকে।
বই প্রকাশিত হলো ফ্ল্যাপে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দেয়া হলনা। কিন্তু বইটা প্রকাশ পেল। উনার লেখাটা আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছে যদি কখনও বইটা আবার সংস্করন হয় তবে লেখাটা জুড়ে দেয়া যাবে।
তবে আরো এক সুহৃদ প্রত্রিকায় সুনীলের লেখা সহ বইয়ের পরিচিতি ছেপে দিয়েছিলেন সে বছর। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন,
নদীমাতৃক উর্বর বাংলাদেশে কবি ও লেখকের সংখ্যা প্রচুর। এত বেশী সংখ্যাক সাহিত্যিক আর কোন ভাষায় আছে কিনা সন্দেহ। চিকিৎসক, স্থপতী, আইনজীবীদের মতন অন্য পেশায় যাঁরা নিযুক্ত তাঁরাও সাহিত্যের সংস্পর্শে সময় অতিবাহিত করতে পছন্দ করেন।
বাংলাদেশের বহু মানুষ এখন ছড়িয়ে আছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে।
তবে বিদেশে যেখানেই থাকুন, এইসব বাংলাদেশিরা বাংলা ভাষাও বাংলা সাহিত্যকে জীবন থেকে সরিয়ে রাখেন না। ভাষার টান ও জাতীয় সংস্কৃতির আবেদন। এইসব প্রবাসী বাংলাদেশি পর্যাক্রমে পরবর্তী প্রজন্মের দিকে বয়ে চলে। এটা খুবই আশার কথা।
রোকসানা লেইস বাংলাদেশের একজন কবি।
এক সময় পাড়ি দিলেন বিদেশে। আমার সাথে দু’ এক বার তাঁর দেখাও হয়েছে কানাডায়। কিছুটা আশঙ্কা ছিল বিদেশের কাজের ব্যস্ততায় কি বাংলা শব্দ র্নিমাণ থেকে সরে গেল এই যুবতিটি। না তা হয়নি। এখন তিনি গদ্য লিখছেন।
তার চন্দ্রিয়ায় নীলজল নামে গ্রন্থটি অনেকটা কানাডার অভিজ্ঞতা ভিত্তিক।
অজানার স্রোতে একটি উপন্যাস। এখানে তিনি মানবিক ভাবে ফিরে এসেছেন, বাংলাদেশে এদেশের তরুণ তরুণীরাই তার কাহিনীর উপজীব্য। নুসরাত, আসিফ, শ্যামা, নীলিমা, এই সব চরিত্রকে কেন্দ্র করে ফুটে উঠে সমাজের কিছুটা চিত্র। এই ভাবে উপন্যাস এক হিসাবে সামাজিক দলিল হিসেবে ও গন্য হয়।
আশা করি রোকসানা লেইসের অজানার স্রোতে পাঠকদের সমাদর পাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।