কালের সীমারেখায় আকালের চিহ্ন দেখি, ভয় পেয়ে নিজের কূয়োর কাদায় লুকোই আবার। অল্প বিদ্যা ভয়ংকর!! কে না জানে?
আমি বুঝি একটি বেশিই জানি। দুনিয়ার কত মানুষ কিচ্ছুটি লিখলেনা, কেউবা আবার দোকানের ফর্দ লিখেই ভাবলে ও বাবারে! কত্ত হ্যাপা। এদিকে যাদের রচনাবলী কিনতে গেলে মধ্যবিত্তের ফিক্স ডিপোজিট ভাংতে হয় তাদেরও তো কমতি নেই। (এইমাত্র মাথায় একটা জটিল প্রশ্ন এসে জট পাকিয়ে দিল।
রবীন্দ্র রচনাবলী কিনতে তো কি জানি শুনলাম বিশ না পচিশ হাজার টাকা লাগবে। যদি কেউ হুমায়ুনসমগ্র কিনতে চায়? কটা খণ্ড লাগবে? কত টাকা লাগবে কেউ জানেন?)
যাকগে, যা বলছিলাম। লেখক বা না লিখিয়ের দল, কোনোটারই বর্তমান জগতে কমতি নেই। আমি চাইলেই দুগ্গা বলে কোন একদলে ভিড়ে যেতে পারি, সংখ্যালঘু হবার ভয় না পেয়েই। তবু না লিখিয়েদের দলে নিজের নাম দেখলে অনুশোচনায় মরে যাই।
যদিও যুক্তি বলে আমার মত তুচ্ছ মূর্খ একটা বর্ণও যদি না লেখে তাতে জগতের সামান্য ভারসাম্য বিনষ্ট হবেনা। এরচে বরং আমার প্রশ্বাসের সাথে বের হওয়া কার্বন জগতের ঢের বেশি ক্ষতি সাধন করছে। তবু, তবুও এই জীবনে অল্প যে বিদ্যার আশপাশ দিয়ে গেছি (যদিও গ্রহণ করতে পারিনি কিছুই) তার অহংকার অথবা মিথ্যে গর্বে প্রায়ই মনে হয় আমার বোধহয় কিছু লেখা উচিত।
হা অদৃষ্ট! যুক্তি আর হৃদয় কবে এক পথে চলেছিল? তাই আগে চেষ্টা করতাম ডায়েরি লিখতে। কিছুদিন পরে নিজের সেই লেখা পড়ে নিজেরই এত অসহ্য লাগত যে ছিঁড়ে কুচি কুচি করে উড়িয়ে দিয়ে কাগজগুলোর বেদনা দূর করতাম।
আর এখন লগের বদলে এসেছে এই ওয়েব লগ, ব্লগ। রক্ষে কর! মানুষ আবার এ লগে লগ ইন করে পড়ে! আমার ওই অহংকারী মূর্খ হৃদয়খানা আবার নাচে 'ধা তিন তিন না'। এইবার বুঝি আমাকে দিয়েও লেখা হবে। হয়তো আমার লেখা ছিঁড়ে (পড়ুন মুছে) ফেলার আগেই কেউ পড়ে নিয়ে বলবে "বাহ! শাবাশ! চালিয়ে যাও!" এদিকে যুক্তি বাবাজী কানের কাছে সান্ধ্য মশার মত প্যানর প্যানর চালিয়েই যাচ্ছে। "হাতি ঘোড়া গেল তল!"
এই দুই করাতের ফাঁকে ঝুলতে থাকে কিবোর্ডে বাংলা লেখায় অনভ্যস্ত আঙুল ব্যাথার আশংকা।
ফলাফল যা হবার তাই। লবডঙ্কা! শেষে পাই মধ্যমপন্থা। যা বাবা যুক্তি, তুই মানুষের লেখা পড়ে পেট ভর। আর হৃদয় বাবাজী, এত শখ হলে করে দেনা দুটো ছোট খাটো কমেন্ট। দুকুলেরই সান্তনা পুরস্কার।
জ্ঞানী বলেন, অংশগ্রহণই .. ইত্যাদি ইত্যাদি।
পোড়া কপালে এও সয়না। কোন একবার যেন এই সকল হ্যাপা থেকে গা বাঁচানো আমি ভুল করে এক তর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। কি যে দুর্মতি ভর করেছিল মাথায়, উপরওয়ালা জানেন। সেই খেই ধরে একজন আমার একাউন্টের পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন।
তা যদি আমার মূর্খতা প্রমাণ করার জন্য হত, এতটুকুও দুঃখ পেতাম না। তিনি কিনা বললেন আমি বহুএকাউন্টধারী! নিয়তি! একটা একাউন্ট নিয়েই অথৈ সাগরে ভাসছি, নেহাৎ অল্পবিদ্যার সুড়সুড়িতে। তাকে কিনা এই আক্রমণ। কাটা ঘাঁয়ে নুনের বয়াম উল্টে দেয়া- প্রবাদখানার সার্থকতা আমি ওই মহাশয়ের কাছ থেকে শিখেছিলাম।
তারপর বহুদিন লজ্জায় এমুখো হইনি।
আজ হঠাৎ মনে পড়লো আমাদের দেশে নির্লজ্জতার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নয়। তাই একপাক ঘুরে গেলাম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।