গত কয়েক মাস যাবত ছেলে,বুড়ো,জওয়ান সবাইকে তিনটি বিপরীত শব্দ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা করতে দেখা যাচ্ছে;
নাস্তিক না আস্তিক?
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের না বিপক্ষের?
বাঙ্গালি না বাংলাদেশি?
এই শব্দগুলোর উচ্চারনে এখন বাংলার আকাশ বাতাস মুখরিত। একপক্ষ বলছে,বাঙালি সংস্কৃতির নামে যে মংগল প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয় তার আড়ালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ইসলাম বিদ্বেষী কাজকর্ম করে নাস্তিক্যবাদকে উস্কে দেয়া হচ্ছে। অন্য পক্ষ বলছে,যারা স্বাধীনতাবিরোধী তারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের নামে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করছে। কার পক্ষ নিয়ে কে যে ব্যবসা করছে আর কে যে লাভ করছে তা আমার মত একজন গণ্ডমূর্খ মানুষের বের করা অতিব কঠিন। তবে মূর্খের মূর্খতা নিয়ে যেমন বসে থাকা ঠিক নয় ঠিক বরং প্রশ্ন করা উচিত তেমনি জ্ঞানী ব্যাক্তির জ্ঞান ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা থাকা উচিত।
নাস্তিক কে নাস্তিক কিম্বা আস্তিক না বলে বরং কেন একজন মানুষকে কেন আস্তিক বা নাস্তিক আক্ষায়িত করা হয় সে বিষয়টি মনে হয় এখন ভেবে দেখার সময় হয়েছে। কে নাস্তিক আর কে আস্তিক এটা নির্ধারণ করার মূলমন্ত্র স্রষ্টা দিয়েছেন। স্রষ্টার মূলমন্ত্র জেনে,কাউকে আপনি আস্তিকতার কিম্বা নাস্তিকতার সনদপত্র দিতে পারেন এটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু দোষের তাই যদি আমরা স্রষ্টার মূলমন্ত্র জানার চেষ্টা না করে কাউকে নাস্তিকতার নামে গালি আর আস্তিকতার নামে তার স্তুতি গাইতে শুরু করি।
ঠিক তেমনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাই মুক্তিযোদ্ধা আর বিপক্ষের সবাইকে স্বাধীনতার বিরোধী এই বিতর্কে না গিয়ে বরং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার চেষ্টা করা উচিত।
যারা ইতিহাস সৃষ্টি করে তারা ইতিহাস লিখেন না বরং ইতিহাস রচনা করে ইতিহাসবিদরা। ইতিহাস রচিত হয় বিজিতদের দ্বারা। একটি জাতির সঠিক ইতিহাস জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই মুদ্রার উল্টাপিঠেও চোখ বুলাতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে আমরা কখনোবা বাঙালি হয়ে যাই আবার কখনোবা বাংলাদেশি হিসেবে পরিচিত লাভ করি। ব্যবসায়িরা তাদের ব্যবসার স্বার্থে তাদের পন্যের নাম মাঝেমাঝে পরিবর্তন করে তা আমরা সকলেই জানি।
তাইতো ব্যবসায়িদের হাতের পুতুল হয়ে না থেকে বরং নিজের জাতিসত্তার সন্ধানে বের হয়ে যাওয়া উচিত। আমার পিতৃপরিচয়, আমার জাতিসত্তার সন্ধান ডি,এন,এ টেস্টের মত আমাকেই খুঁজে বের করতে। তাইত স্রোত যে দিকে যায় বরং সে দিকে না গিয়ে টাকি মাছের মত স্রোতের বিপরীতে চলার অভ্যাস করতে হবে। জানতে হলে পড়তে হবে কিন্তু সত্য জানতে হলে অনেক বেশি পড়তে হবে।
আর তাহলেই উপরের তিনটি শব্দ আর বিপরীত শব্দের নামে বাংলাদেশে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবেনা বরং প্রতিশব্দ হয়ে একে অপরের সাথে মিলেমিশে বসবাস করবে।
মনে রাখতে হবে অল্পবিদ্যা ভয়ংকারি তো বটেই কখনোবা তা গুনাহের সামিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।