আমার লেখাটি পড়ার আগে কষ্ট করে এই ব্লগের লেখাটি পড়ুনঃ Click This Link
রাজনীতি নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ বা ধারণা কোনটিই নেই। আগে কোনদিন ব্লগও লিখিনি। কিন্তু উপরের লেখাটি পড়ে একটা একাউন্ট খুলতে হলো, সবাইকে আমার দুটি কথা জানানোর জন্য। আগে কোনদিন বাংলা টাইপ করিনি তাই লেখাটি পড়তে কষ্ট হলে আগে থেকেই দুঃখিত।
জনাব ফিউশন ফাইভ যখন তিনমাস আগে জাপানে তোলা তোলা ছবি দেখে কাতর, পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অধিকার-সচেতন ওয়েবসাইটগুলোর উপরে রিসার্চ করে যাচ্ছেন তখন আমি প্রবাসে বসে আমার মানুষদের জন্য উদ্বিগ্ন।
তিনি যখন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্ত এই দিবাস্বপ্ন দেখে সুখনিদ্রায় রত, আমি তখন নিদ্রাবিহীন রাত কাটাচ্ছি। কেন? কারণ চট্টগ্রাম পুড়ছে, আমার পরিবার কোথায় আছে, কেমন আছে তা আমার জা্না নেই। অবাক হচ্ছেন, ফিউশন ফাইভের সাথে আমার অবস্থার বৈপরীত্য দেখে। সবুর করুন, একটু পরেই বুঝতে পারবেন। তার আগে ফিউশন ফাইভকে একটু দুটি প্রশ্ন করে নিই।
ফিউশন ফাইভ, আমি অনুমান করছি আপনি কানে কম শোনেন অথবা তিনমাস আগে আপনার কানে তুলা দিয়ে রেখেছিলেন। আচ্ছা কান না হয় ঢেখে রেখেছিলেন, চোখও কি বন্ধ ছিল? নাকি খবরের কাগজ পড়েননি? যেহেতু বাংলায় ব্লগ এবং ইংরেজিতে লেখা ওয়েবসাইটগুলো পড়েছেন তাই ধারণা করছি পড়তে এবং লিখতে, দুটিই পারেন। নাকি খবরের কাগজ পড়া হয়না? কারণ খবরের কাগজ যদি পড়তেন তাহলে আর যাই লিখেননা কেন, “আপনি কি মনে করতে পারেন, তিন মাস আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম কি অশান্ত ছিল কিংবা কোনো রকম সংঘাতের ঘটনা কি ঘটেছিল? মনে করতে পারবেন না” এই লেখাটি লিখতে পারতেন না। উপরের প্রশ্নগুলো, যারা আপনার ব্লগের লেখাটি পরে ‘স্টার’ দিয়েছেন তাদের জন্যও রইলো।
ফিউশন ফাইভের লেখাটি পড়ে আমার এক বন্ধুর মন্তব্যটি না দিয়ে পারছি না।
মন্তব্যটি হল, “অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী”। কথাটি যে কতটুকু সত্যি সেটা আরেকবার হাড়ে হাড়ে বুঝলাম। বলতে হয়, আমার বন্ধু ফিউশন ফাইভের মনে তিনমাস আগে বাঘাইহাট, খাগড়াছড়ি নামের জায়গাগুলো কোন স্থান পায়নি। নাহলে “পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্ত” লেখাটি লেখার আগে ‘daily star’ এর লেখাটি উনার চোখ এড়িয়ে যেতো না। লিঙ্কঃ Click This Link ।
বন্ধুপ্রবর ফিউশন ফাইভ, কষ্ট করে দেরীতে হলেও daily star এর খবরখানা পড়ে নিবেন। ঘটনাটি বাঘাইহাটের। আপনার অবগতির জন্য আরেকটি লিঙ্ক দিলাম, Click This Link । বাঘাইহাটের ঘটনার ভয়াবহ ফলাফল খাগড়াছড়ির সহিংস ঘটনা। সর্বোপরি, ঘটনার স্থায়িত্বকাল, এক সপ্তাহেরও বেশি।
খাগড়াছড়ির ঘটনা আরও ভয়াবহ। নীচে বিভিন্ন খবরের লিঙ্কগুলো দেওয়া হল।
Click This Link
Click This Link
Click This Link
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। এর পরে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক আবরোধ করে দেয় সেটলাররা। লিঙ্কঃ Click This Link ।
এর মাঝে, মার্চের ১ তারিখে প্রকাশিত অদিতি ফাল্গুনীর লেখাটি বেশ তথ্যপূর্ণ এবং সুচিন্তিত। লিঙ্কঃ Click This Link । অন্যদিকে, দৈনিক জনকন্ঠ ঘটনা ঘটার আগে সাবধানী খবর প্রকাশ করে ১৩ই ফেব্রুয়ারী। লিঙ্কঃ Click This Link । এরপর আবার ১৩ই মার্চ, প্রথম পাতায় আরেকটি সহিংস ঘটনার আশংকা করে খবর প্রকাশিত হয়।
লিঙ্কঃ Click This Link ।
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে যখন ফিউশন ফাইভের মত বঙ্গসন্তানেরা কুম্ভকর্ণের চেয়েও গভীর ঘুমে মগ্ন তখন প্রবাসী মানবাধিকার সংস্থাগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামের সহিংস ঘটনায় উদ্বিগ্ন। Amnesty International এর রিপোর্ট পাবেন এখানেঃ Click This Link । সাথে UN news centre এ প্রকাশিত খবরখানাও দিয়ে দিলাম, Click This Link । Asian
Centre for Human Rights এর রিপোর্ট পাবেন এখানে, Click This Link) ।
বাংলাদেশ সরকারের কথা কি বলব? আমাদের দেশের সরকারকে তো আমাদের ভালোই জানা আছে। আন্তর্জাতিক সমাজ থেকে বিভিন্ন রিপোর্ট পেয়ে আমাদের সরকার মহাশয় আফ্রিকার জঙ্গলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখা শুরু করেছেন। মার্চের ৯ তারিখে প্রকাশিত প্রথম আলোর খবর পড়লেই তার প্রমান মিলে। লিঙ্কঃ Click This Link । প্রথাগতভাবে শুরু, বিভিন্ন খবর অস্বীকার করার, লিঙ্কঃ Click This Link ।
আজ এক দশক হলো শান্তিচুক্তি হয়েছে। শান্তিচুক্তি শুধু স্বাক্ষরিত হয়েছে, বাস্তবায়ন আজও হলনা। উপরন্তু আজ বলা হচ্ছে শান্তিচুক্তি অবৈধ। লিঙ্কঃ Click This Link ।
এতো গেলো মাত্র একটা ঘটনা, এরকম ঘটনা আগে যে ঘটেনি তা নয়।
এর আগেও ঘটেছে অনেকবার। ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সমস্যাকে আপনি মানবাধিকারের চোখে দেখলে দেখবেন অন্যায়, আবার আমেরিকার চোখে দেখলে মনে হবে ন্যায়। সবকিছুই নির্ভর করে আপনার চিন্তাধারা এবং দৃষ্টিভংগীর উপর। তাই বলব, আমেরিকার মত চোখ ঢেকে রেখে, আরেকজনের কথা অন্ধভাবে বিশ্বাস না করে সত্যকে জানুন। যেসব ওয়েবসাইটগুলো দেখে আপনার মনে হচ্ছে ‘বাংলাদেশবিরোধী’ তাদের প্রকাশিত খবরগুলো মূল্যায়ন করে দেখূন।
ভাল করে পরে দেখুন তারা বাংলাদেশের বিরুদ্বে প্রচারণা চালাছে নাকি আদিবাসীদের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে। সত্যকে জানবেন নাকি অন্ধবিশ্বাস নিয়ে মিথ্যার পিছনে ছুটবেন সেটা আপনার ইচ্ছা।
পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থায় referencing বলে একটি শব্দ আছে। যার ফলে, আপনাকে আপনার তথ্যের উৎসকে প্রকাশ করতে হয়। জনাব ফিউশন ফাইভ, আপনার মন্তব্যে দেখলাম তথ্য আছে কিন্তু তথ্যের উৎস দেওয়া নাই।
তাই অতিব দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, আপনার তথ্যগুলো তথ্য হিসেবে নিতে পারলাম না। referencing এর আরেকটি শর্ত হচ্ছে, তথ্য নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে হতে হবে। তাই, দয়া করে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য নিয়ে তথ্য দিন, কথা দিচ্ছি, বিশ্বাস করব।
পুনশ্চঃ চন্দনের দেওয়া অস্ত্রহাতে পাহাড়ীদের তোলা ছবিটি শান্তিচুক্তির আগেরকার ছবি। আমার মনে হয়, ছবিটি শান্তিচুক্তির পর অস্ত্র সমর্পনের সময় তোলা ছবি।
তাই, ভাই, আপনাকে বলব, ঘোলা পানি আরও ঘোলা না করে, আসুন বরং পরিষ্কারের চেষ্টা করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।