ভালোবাসুন, ভালো থাকুন পোস্টটা মূলত মেয়েদের জন্য, তবে ছেলেরাও চাইলে পড়তে পারেন
।
।
।
।
প্রেম ভালোবাসা আমাদের মৌলক চাহিদা হয়ে গেছে অনেক আগেই।
মানুষ যে তিনটি কারনে নিরন্তর এই দুনিয়ার বুকে দাবরে বেড়ায় তার মধ্যে ক্ষুধার পরেই আসে যৌন চাহিদা আর এই যৌন চাহিদাকে কেন্দ্র করে প্রেম ভালোবাসা উদ্ভব। তৃতীয় কারণটাও প্রথম দু'টি কারণের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আর তা হচ্ছে অর্থ, প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা লাভ।
প্রেম শাশ্বত, প্রেম স্বর্গীয় ইত্যাদি নানা রকম বিশেষন শুনি আমরা প্রায় প্রতিদিন। আমাদের সমাজে বিশেষ করে যে সকল পরিবার একটু রক্ষনশীল তাদের কাছে প্রেম ভালোবাসা যেন নিষিদ্ধ গন্দম। আবার বিবাহ পরবর্তী প্রেম ব্যপক পূন্যের কাজ।
যাক আলোচনা সেদিকে বাড়ানোর ইচ্ছা আপাতত নেই।
আজকের পোস্টটা মূলক আপুদের জন্য যারা বিভিন্ন মাত্রা প্রেমের সম্পর্কে আছেন বা ভাবছেন প্রেম করবেন কি না বা করলেও কিভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন কিভাবে মনের গভীর স্থান করে নেবেন প্রিয় মানুষটির। আশা করি এই পোস্ট আপনাদের কিছুটা হলেও উপকার করবে।
[ছেলেরা পড়লে অপকার হবে এইটা বলি নাই বরং ছেলেরা পড়লে উপকার আরো বেশি হবে বইলাই আমার বিশ্বাস ]
আসুন তাহলে পোস্ট শুরু করা যাক
♥ চোখ যে মনের কথা বলে ♥
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষনায় দেখা গেছে প্রেমিক প্রেমিকারা তাদের এক সাথে কাটানো সময়ের ৭৫ শতাংশ সময় একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে কাটায়। কাজেই নিশ্চিত করুন আপনার দৃষ্টি আপনার চাহনি যেন আপনার কাঙ্ক্ষিত পুরুষটিকেও আপনার দিকে তাকাতে বাধ্য করে।
এর ফলে তার মস্কিষ্ক আপনাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য হবে এবং আপনাদের সম্পর্কটা একটা প্রেমময় পরিণতির দিকে গড়ানোর সম্ভাব্যতা বাড়বে। গুরু জেমসের গানটা এখানে স্মর্তব্য,
চোখের দেখায় মনের দেখা হয়
চোখের দেখা যদি মনে রয়
♥ মিলগুলো খুঁজে বের করুন ♥
সম্পর্ক ভাঙ্গার বা গড়ে তুলতে না পারার অন্যতম মূখ্য কারণ হচ্ছে কাপলদের মধ্যে অমিলগুলো। অমিলগুলো নিয়েই আমরা সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকি। অথচ সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে সর্বক্ষন অমিলগুলো বা ব্যবধানগুলো নিয়ে পড়ে থাকলে ফলাফল কি হবে সেটা সবারই বোধগম্য হওয়া উচিৎ।
কাজেই, অমিলগুলোকে ছুটি দিন।
মিলগুলো নিয়ে কথা বলুন। দু'জনে যেভাবে সময় কাটানো যায় সেটাকে গুরুত্ব দিন।
নতুন নতুন বিষয়গুলো দু'জনে মিলে একসাথে অভিজ্ঞতা নিন। ভালোবাসার মানুষটিকে চমকে দিন তাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করুন। তবে এমন কিছু করতে যাবেন না যা আপনার ইচ্ছার বাইরে।
সঙ্গীকে খুশি করতে অভিনয় করতে যাবেন বরং সরাসরি না বলার একটা পরিবেশ তৈরী করুন এবং আপনার সঙ্গীকেও এর সাথে অভ্যস্ত করিয়ে নিন। দেখবেন অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে
♥ সময় এবং ভালোবাসা ♥
ভালোবাসার ক্ষেত্রে সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক সাথে সময় কাটান, ঘুরতে যান। সম্পর্কের প্রথম দিকে এটা খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখে একে অপরকে বুঝে নিতে। মিল-অমিলগুলো বুঝে নিতে, আত্মার সাথে আত্মার টান অনুভব করতে সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার স্বামী/প্রেমিককে বুঝতে দিন তার জীবনে আপনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সময় দেয় না অভিযোগ করার চাইতে সময়টা আদায় করে নিন, আপনার সঙ্গীর সময়ের যোগ্য হকদার যে আপনি এটা তাকে উপলব্ধি করতে দিন।
♥ নির্ভরশীলতাই ভালোবাসার গোপন চাবি ♥
মানুষ ভালোবাসে কেন ? বা মানুষের সঙ্গী প্রয়োজন হয় কেন ? শুধুমাত্র সন্তান জন্মদান বা জৈবিক চাহিদা বা সামাজিক দায় থেকে কি মানুষ বিয়ে করে বা বিয়ের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে প্রেম করে ?
এখানেই নির্ভরশীলতার প্রশ্নটা আসে এবং খেয়াল করলে দেখবেন এই নির্ভরশীলতাই আসলে সম্পর্কগুলো টিকিয়ে রাখে। শেষ বিচারে গোটা পৃথিবীতে মানুষ একটা নিঃসঙ্গ জীব। মানুষের এই নিঃসঙ্গতা কাটাতে মানুষের সঙ্গীর প্রয়োজন হয়।
কাজেই সঙ্গীকে এটা বুঝতে দিন যে আপনি তার প্রতি নির্ভরশীল যাতে করে সেও আপনার প্রতি নির্ভরশীল হতে পারে। আস্তে আস্তে সম্পর্কের গোপন কুঠুরিগুলো উন্মোচন করুন। এর মধ্যে দিয়ে আপনাদের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যাবে। দায়িত্ব এমন একটা বিষয় যা সকল পুরুষ উপভোগ করে কিন্তু সরাসরি চাপিয়ে দিলে পালিয়ে যেতে চায়।
♥ আত্মবিশ্বাসী নারী ♥
আত্মবিশ্বাসী নারী ছেলেরা বেশি পছন্দ করে।
ছিঁচকাঁদুনে আহ্লাদি স্বভাবের মেয়েদের সাথে ছেলেরা বেশি দিন টিকতে পারে না। সাময়িক মোহ কেটে গেলে বা প্রাথমিক চাহিদা পুরন হলেই কেটে পড়ার ধান্দায় থাকে।
আপনি আপনার সঙ্গীর প্রতি নির্ভরশীল মানে কিন্তু এই না তাকে ছাড়া আপনি ধ্বংস হয়ে যাবে আপনার জীবন তার প্রকৃত উদ্দেশ্য হারাবে। এ ধরনের মেয়েদের চাইতে ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী মেয়েদের বেশি পছন্দ করে। যে মেয়ে নিজের দায়িত্ব নিতে জানে না সে সংসারের দায়িত্ব তো দূর তার সঙ্গীর দায়িত্ব কি করে নেবে আপনারাই বলুন !
♥ হাসুন, হাসতে দিন ♥
আমরা পুরুষরা জানি
"Women love a man who makes them laugh!"
এবার এই ব্যপারটা একটু ঘুরিয়ে ব্যবহার করুন।
একজন পুরুষ যখন দেখবে আপনি তার ছোট ছোট জোকসগুলোতে (অবশ্যই লেম জোক না)
প্রাণবন্ত হাসি উপহার দিচ্ছেন সে পুরো ব্যপারটা খুব উপভোগ করবে, ভালো লাগবে। তার এই ভালো লাগাটা সে আপনার মধ্যেও সংক্রমিত করতে চাইবে এবং বিশ্বাস করুন যদি সে আপনার যোগ্য হয় তাহলে সে সফলও হবে
কাজেই, নিজে হাসুন, তাকেও হাসতে দিন। কারণ ভালোবাসার শুরুটা এখানেই
♥ বন্ধু হোন ♥
সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভালোবাসা প্রেম ইত্যাদি যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি বন্ধুত্বটাও অনে গুরুত্ব বহন করে। আপনি শুধুমাত্র প্রেমিকা বা স্ত্রী নন আপনি যে তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু সেটা আপনার সঙ্গীকে উপলব্ধি করতে দিন।
♥ হৃদয়পুর ♥
পুরুষ মানুষ যতই কঠিন হৃদয় হোক না কেন তাকে গলিয়ে ফেলার চাবি শুধুমাত্র মেয়েদের কাছেই আছে।
বিশ্বাস হচ্ছে না ? কোন পুরুষ মানুষ খেতে ভালোবাসে না। যে পুরুষ খেতে ভালোবাসে সে কোন পুরুষই না। পুরুষের হৃদয়পুরের রাস্তা পাকস্থলী হয়ে যায়। কাজেই উদরপূর্তি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
উপরের প্যারাটায় অনেক পুরুষই ভেটো দিতে পারেন।
আসলে ব্যাপারটা একটু ব্যখ্যা করা দরকার আছে। উদরপূর্তি বলতে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে খাওয়ানোর কথা বলা হচ্ছে না। বরং আপনার নিজের হাতে রান্না করা নিত্য নতুন আইটেমের কথা বলা হচ্ছে।
পুরুষরা যদি খেতে ভালোবাসে তাহলে মেয়েরা রাধতে আর এই দু'টো বিষয় একে অপরের সাথে সম্পর্কিত।
♥ ভালোবাসা পেতে হলে ভালোবাসা দিতে হয় ♥
আপনি নিশ্চয়ই আশা করতে পারেন না যে আপনি আপনার সঙ্গীকে ভালোবাসবেন না কিন্তু আপনার সঙ্গী আপনার জন্য অকুল পাথার ভাসিয়ে একূল ওকূল তিন কূল এক করে আপনার দিকে দৌড়ে আসবে।
এরকম পাগল যে থাকে না তা বলছি না, তবে এরকম পাগল সব পাগলীর কপালে জোটে না।
কাজেই ভালবাস প্রাপ্তির পূর্ব শর্ত হচ্ছে ভালোবাসতে হবে। এবং খেয়াল রাখবেন সেটা যেন সত্যিকারের ভালবাসা হয়। এর মাঝে যেন কোন মেকি বিষয় না থাকে। জবরদস্তি করে ভালবাসা হয় না এটাকে গড়ে তুলতে হয়।
♥ রেখে ঢেকে, আস্তে আস্তে ♥
বেশির ভাগ মেয়েদের স্বভাব হল গড়গড়িয়ে চলা। হরবর করে এত্তগুলা কথা বলা। আরে ভাই সবই যদি এখন বলে দেন পরে বলবেন কি ? কাজেই বলুন কম, রহস্য করুন বেশি। ছেলেরা রহস্য ভালোবাসে। জানেন তো ছেলেদের কাছে মেয়েরা একটা চলমান রহস্য।
আপনার মধ্যে যদি রহস্যই না থাকে তাহলে আর আপনার গুরুত্ব থাকল কি !!!
♥ দূরত্ব ♥
দূরত্ব ভালোবাসাকে গাড়ো করে। সারাক্ষন কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করার থেকে যতটা সময় তার সাথে কাটাচ্ছেন খেয়াল রাখুন এমনভাবে কাটান যেন যখন আপনারা একসাথে সময় কাটাচ্ছেন না তখনও যেন তার মনে আপনার কথাই বাজতে থাকে। নিজে মিস না করে তাকে মিস করতে দিন। আপনি বরং এই সময়টা নিজেকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখুন।
♥ সাবধান ♥
ছেলেরা তার প্রেমিকা বা স্ত্রীর মাঝে বন্ধু খুঁজতে চায়।
কিন্তু মেয়েরা সেটা না করে নিজেদের মায়ের জায়গায় অধিষ্ঠিত করে। আরে ভাই আপনাকে তো মা হতে বলে না তাইলে এটা কইরো ওইটা কইরো না, ওইটা করছ কেন ইত্যাদি ইত্যাদি যাবতীয় প্যারা কেন দেন ? খেয়াল রাখবেন খোঁজ খবর নেয়া আর খবরদারি এক বস্তু নহে। মা না হয়ে বন্ধু হন কাজে দেবে।
♥ ভালোবাসুন নিজেকে ♥
অন্য কাউকে ভালোবাসার আগে নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। আপনি নিজেই নিজেকে ভালো না বাসেন তাহলে সে আপনাকে ভালোবাসবে এটা আশা করছেন কিভাবে ? কাজেই অন্য কারো প্রেমে পড়ার আগে নিজের প্রেমে পড়ুন
==========================================
আমার পরামরশগুলো তো পড়লেন এবার আপনাদের অভিজ্ঞতা বা পরামর্শগুলোও শুনতে চাই এবং সেটা ছেলে মেয়ে উভয়ের কাছ থেকেই।
আশা করি আপনারা আমাকে হতাশ করবেন না। আর আমি যদি আপনাদের হতাশ করে থাকি তাহলে আগে থেকেই আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
ভালো থাকবেন সবাই
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।