আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাসঙ্গিক ভাবনা : ‘বঙ্গবন্ধু-১’ নামে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের আরেক মাইলফলক !!

আমি আগা গোড়ায় মোড়ানো পুরোপুরি একজন মুক্তমনা মানুষ। বাংলাদেশ বর্তমানে প্রযুক্তিগত দিক থেকে আস্তে আস্তে উন্নতির সোপানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। একটা সময় ছিলো যখন আমরা শুধু প্রযুক্তি ব্যবহারের স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু আজ অনেক প্রযুক্তিই আমাদের হাতের নাগালে চলে এসেছে এবং কিছু নব আবিষ্কৃত প্রযুক্তি অচিরেই চলে আসবে বলে বিশ্বাস করি। ঠিক তেমনি এক আনন্দের সংবাদ হলো বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই ‘বঙ্গবন্ধু-১’ নামে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের প্রকল্পনা করছে।

আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে মহাকাশে নিজেদের কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। বর্তমানে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য প্রারম্ভিক কাজগুলো অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ৫ বছর আগেও উন্নত দেশগুলোর কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের খবর পড়ে আমরা নিজেরা ভাবতাম, আমাদের দেশ কবে নিজেদের কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে। সেই সুভময় ক্ষন আজ আর খুব বেশী দূরে নয়। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের কল্যানের পরিধিটাও অনেক বেড়ে যায়।

আর তাই সেই লক্ষ্যে ২০১৩ সালের মধ্যেই ক্‌ত্তিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। উন্নয়ন দেশগুলোর পাশাপাশি আমাদের নিজেদের স্যাটালাইট পাখা মেলে ঊড়বে এটা ভাবতেই নিজের দেশকে নিয়ে গর্বে বুক ফুলে উঠছে। আর নিজে দেশের এই রকম একটা প্রযুক্তিগত উন্নয়নের খবর একজন বাংলাদেশী হিসেবে নিজেকে গর্বে মাথা উচু করে দেয়। “Bangladesh will launch a satellite in the space with broadcasting facilities to make information and communication technology more available and upgrade to international standard. The concerned experts said the satellite project implementation will cost about 200 to 300 million US dollars and take about three years. The meeting stressed the need for formation of a national expert committee and taking steps for feasibility study for quick implementation of the project. সূত্র http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=154606 ১৯৫৭ সালে প্রথমবারের মতো মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে সক্ষম হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন৷ যার নাম ছিল ‘স্পুটনিক ১'৷ এর পরের বছর অ্যামেরিকা এক্ষেত্রে সফলতা দেখায়৷ যদিও তারা এই পরিকল্পনা করছিল প্রায় ১৩ বছর আগে থেকেই৷ পরবর্তীতে আরও অনেক দেশ কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় ইতিমধ্যে ভারত এবং পাকিস্তানেরও নিজস্ব উপগ্রহ রয়েছে৷ এর মধ্যে ভারত নিজে নিজেই মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর সামর্থ্য অর্জন করেছে৷ আর পাকিস্তান অন্য দেশের সহায়তায় উপগ্রহ পাঠিয়েছে৷ এখন, বাংলাদেশও সেটা করতে যাচ্ছে৷ ১৯৯৭-৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল৷ কিন্তু পরে সেটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি৷ এরপর আবার ঝোঁক উঠেছে উপগ্রহের ব্যাপারে৷ সে লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে৷ ২০১৩ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ তার নিজস্ব একটি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাতে চায়৷ এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা - বিটিআরসি। সূত্র : http://www.dw.de/dw/article/0,,15081977,00.html যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল, এসপিআই কোম্পানিকে পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ এ মাসের ২৪ তারিখের মধ্যে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ৷ এসপিআই'এর কাজ কী হবে? এ সম্পর্কে বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান বললেন, ‘‘তাদের কাজ হবে স্যাটেলাইট ডিজাইন ও এটির নির্মাণকাজ তদারকি করা৷ এছাড়া কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের সঙ্গে বাংলাদেশের যারা জড়িত থাকবে তাদেরকেও সহায়তা করবে এসপিআই৷ গ্রাউণ্ড স্টেশন তৈরি, বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং এই উপগ্রহকে কী কী ভাবে কাজে লাগানো হবে সেটার পরিকল্পনাও করবে এসপিআই৷সূত্র http://www.dw.de/dw/article/0,,15740859,00.html সফলভাবে উপগ্রহ পাঠাতে পারলে বাংলাদেশের যে লাভগুলো হবে ১।

এটি হবে একটি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট অর্থাৎ যোগাযোগ উপগ্রহ৷ ফলে টেলিযোগাযোগ, টিভি ও বেতার সম্প্রচারের মত কাজগুলো এই উপগ্রহ দিয়ে করা সম্ভব হবে, এখন যেটা করা হচ্ছে অন্য দেশের উপগ্রহ ব্যবহার করে৷ যার জন্য খরচ হচ্ছে প্রচুর অর্থ৷ ২। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজও করা যাবে এই উপগ্রহের মাধ্যমে৷ ৩। চাইলে অন্য দেশকেও উপগ্রহ ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া যাবে৷ সেক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটা উৎস হতে পারে এই উপগ্রহ৷ একেকটি টিভি চ্যানেল স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ডলার দিয়ে থাকে৷ সে হিসেবে বর্তমানে চ্যানেলগুলো প্রতি বছর প্রায় ৪০ লাখ ডলার ভাড়া দিচ্ছে। সম্প্রচার ছাড়াও আর অন্য কোনো কাজে এই উপগ্রহকে কাজে লাগানো যায় কিনা সেটাও ভেবে দেখা যেতে পারে। দেশের এরকম অভাবনীর সাফল্য অনেক সময় চোখে পড়ে না।

আর উন্নতির পথে বাধাতো আসবেই। হলুদ সাংবাদিকতার কারনেও এই রকম সফলতা নিয়ে অনেক সময় বড় করে প্রতিবেদন ছাপা হয় না। আমাদের দেশের এবং নিজেদের রয়েছে হাজারো সমস্যা, কিন্তু তার মাঝেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে সরকার এবং কিছু উদ্দমী জনগন। সবসময় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলে নিজেদের সংকীর্নতা এবং নিচু মনমানসিকতা প্রকাশ পায়। অধ্যবসায় আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যেমে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করার জন্য সর্বপ্রথম আমাদের নিজেদের পরিবর্তন আনাটা অনেক জরুরী।

আর তাই দেশের সমস্যা এবং ভুলগুলো আলোচনার পাশাপাশি দেশের উন্নতি এবং অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার করাটাও আমাদের দায়িত্ব। এতে দেশের জনগনের উদ্যমতায় এবং সাহস অনেক বেড়ে যাবে। এরকম একটা পরিকল্পনা গ্রহনের জন্য সরকারের অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। আর এভাবেই সরকার এবং জনতার যৌথ সন্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির চুড়ায়। ধন্যবাদ সবাইকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.