আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকার প্রায় ৪০০ বছরের পুরোনো আদি ঈদগাহটির অবস্থান কোথায় ?

জনারণ্যে নির্জনতায় আক্রান্ত। নির্জনতাই বেশী পছন্দ, নিজের ভেতরে ডুবে থাকতেই ভাল লাগে। কিছুটা নার্সিসিস্টও। আমাদের জাতীয় ঈদগাহটি হাইকোর্টের সামনে এটা সবাই জানে। কিন্তু ঢাকার আদি ঈদগাহটি কোথায় অবস্থিত তা অনেকেরই জানা নেই।

ইংরেজী ১৬৪০ সালে মোঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্র বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত যুবরাজ শাহসুজার নির্দেশে দেওয়ান মীর আবুল কাশিম কর্তৃক নির্মিত হয় এই ঈদগাহ। অনেকেই ভাবছেন এটি পুরোনো ঢাকায় অবস্থিত হতে পারে। কিন্তু না, মোঘল আমলের পুরোনো ঢাকা থেকে এই ঈদগাহটি অনেকটাই দুরে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার মাঝখানে অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই আশ্চর্য্য হন যখন জানেন এটা প্রায় ৪০০ বছর পূর্বের স্থাপনা, যেখানে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বয়সই মাত্র ৬০ বছর । আসলে ঢাকার মানচিত্রটি যদি কেউ হাতে নেন তাহলে দেখবেন বুড়িগঙ্গা নদীটির তীর ঘেঁসেই আদি ঢাকা গড়ে উঠেছিলো। পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা পেরিয়ে লালবাগ, হাজারীবাগ হয়ে রায়ের বাজারের পাশ ঘেঁসেই বুড়ীগঙ্গা নদীটি মোহাম্মদপুরের পাশ দিয়ে চলে গেছে।

যে নদীর তীর হয়েই ঢাকা শহর রক্ষা বাঁধ, যাকে আমরা বেড়ীবাঁধ বলে চিনি। সেই মোহাম্মদপুরেরই বর্তমান বাসস্ট্যান্ড এর পাশেই বিখ্যাত সাত মসজিদটি অবস্থিত। অক্ষত অনিন্দ্যসুন্দুর মোঘল স্থাপনার অনেক নিদর্শন এর মাঝে এটিও একটি। অনেকেই সাত মসজিদরোড চিনেন, কিন্তু এই সাত মসজিদরোডের সেই ঐতিহাসিক মসজিদটি অনেকেই চিনেন না। এই মসজিদটিও ঈদগাহেরই সমসাময়িক স্থাপনা।

তো যা বলছিলাম, মোঘল আমলেই রায়ের বাজার এলাকাটি গড়ে উঠেছিলো, কুমার ও ব্যাবসায়ীদের আবাসস্থান হিসেবে। এখনও রায়েরবাজার এলাকায় চুন-সুরকির পুরোনো ক্ষয়ে যাওয়া বিল্ডিং অনেক পরিমানেই দেখা যায়, যদিও রিয়েল এস্টেট ব্যাবসায়ীদের দৌরাত্বে অল্পকিছুই টিকে আছে। বর্তমানের ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার সাতমসজিদ রোডের ধানমন্ডি ১৫ নং বাসস্ট্যান্ড এর পাশেই এই আদি ঈদগাহটি অবস্থিত। যাকে ঈদগাহ মসজিদ নামে সবাই চেনে। ধানমন্ডি ১৫ নং বাসস্ট্যান্ড থেকে যে রাস্তাটি রায়েরবাজার স্কুল হয়ে টালি অফিস রোড হয়ে শিকদার মহিলা মেডিকেল কলেজের দিকে চলে গেছে সবাই সেটি চেনেন।

যার একমাথা বর্তমান বেড়ীবাঁধ এর সাথে মিশেছে, তার পরই বুড়িগঙ্গা নদী। অন্যমাথা ধানমন্ডি ১৫ নং বাসস্ট্যান্ড এর সাথে মিশেছে, যে রাস্তাটি ঈদগাহ রোড নামেও পরিচিত। মোঘল আমলে এই রায়েরবাজারের পাশেই নদীবন্দর ছিলো। সেখান থেকে এই রাস্তা ধরেই ঈদগাহে মানুষ আসতো। যেটাকে বর্তমানে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা গিলে ফেলেছে।

পরে যখন মোঘল রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত হয়, তারপরই ঢাকার গুরুত্ব কমতে থাকে, ফলশ্রূতিতে অনেক মোঘল স্থাপনার মত এটিও গুরুত্ব হারাতে থাকে। চারপাশের হাইরাইজ বিল্ডিং এর ভিড়ে অনেকেরই চোখ এড়িয়ে সবারই চোখের সামনে এটি রয়ে গেছে। ধানমন্ডি ৭এ এবং ৮এ নম্বর রাস্তার মাঝখানে সাতমসজিদ রোডের পাশে এই অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপনাটি সগৌরবে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে আজ প্রায় ৪০০ বছর।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।