আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার মৃত্যু যদি তোমাকে না কাঁদায়,তাহলে তোমাদের মৃত্যু কেন আমাকে কাঁদাবে???

স্বপ্নময়ী আমি স্বপ্ন দেখি সবসময় সুন্দরের...... বিঃদ্রঃলেখায় উল্লেখিত কোন নামকে হেয় করা বা ছোট করা উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়নি। এটা শুধু মাত্র লেখকে কল্পনা প্রসূত একটা লেখা। আমার জন্ম পৃথিবীর এক শুভক্ষণে। এ সংঘাতয় পৃথিবীতে নয়। আমার জন্ম পৃথিবীকে করেছিল স্পন্দিত।

হাসিতে ভরে উঠেছিল এ ধরনী। আনন্দের জোয়ার বয়েছিল ধরনীর বুকে। বেঁচে ছিলাম এ ধরনীতে আমি নিজের মত করে। কর্মময় আমার পৃথিবী ছিল অনন্য। অনেকের পৃথিবীতে প্রয়োজন ছিল আমার।

আমি জন্মছিলাম এই পৃথিবীতে বড় অসহায় হয়ে। এসেছিলাম একেবারে নিসঙ্গ,বড়ই একা হিসাবে। আমার জন্মটা অতটা মধুর না হলেও,ছিল না তিক্ততা। আমার প্রয়োজন আমার পরিবারে। কারণ জন্ম থেকে অভিভাবক হীন আমি।

সম্বলহীন মায়ের আমিই যে একমাত্র সন্তান। সাগরের মাঝে ভেসে থাকা মানুষ যেমন একটা খড়কুটোকে অবলম্বন করে বাঁচতে চাই,তেমনি আমার মাও তো চেয়ে ছিল আমাকে অবলম্বন করে বেঁচে থাকতে। এটা কি তার অপরাধ ছিল??তার চাওয়া কি ছিল অন্যায়???কেন তার স্বপ্নকে মেরে ফেলা হল??কেন তাকে করা হল নিঃস্ব??কি ছিল অন্যায় আমার মায়ের??আমাকে মেরে ফেলা হল। নির্মম ভাবে আমাকে হত্যা করা হল। আমার মায়ের কোল খালি করা হল।

আমার মৃত্যুতে কেউ কাঁদল না। আমার এ অন্যায় মৃত্যুর কেউ প্রতিবাদ করল না। রাষ্ট্র আমার মৃত্যুর দায়ভার নিল না। রাষ্ট্র আমার জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারল না। রাষ্ট্র আমার মৃত্যুর তদন্ত করল না।

দোষী চিহ্নিত অপরাধীদের বিচার করল না। আমার মৃত্যুকে তারা উপহাস করল। আমার মৃত্যুকে তারা ব্যঙ্গ করল। চরমভাবে অপমান করা হল আমাকে। আমার স্বত্তাকে তারা নিক্ষেপ করল আস্তাকুড়ে হিসাবে।

কিন্তু আমিতো এমন ছিলাম না। তাইতো তোমাদের মৃত্যু আমাকে আজ কাঁদায় না। তাইতো জাতির জনকে মৃত্যু আমাকে কাঁদায় না। তাইতো স্বাধীনতার ঘোষকের মৃত্যু আমাকে কাঁদায় না। তাদের মৃত্যু আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়।

তাদের মৃত্যু আমাকে ভাবায় না। তাদের মৃত্যু আমার অন্তরে কোন ভাবাবেগের উদ্রেক হয় না। কাঁদায় না মাওলানা আব্দুল হামিদ খানের মৃত্যু। কাঁদায় না জহির রায়হানের মৃত্যু। স্ট্রুয়ার্ট মুজিবের মৃত্যু এজন্যই আমাকে স্পর্শ করে না।

রফিক,শফিক,বরকত,জব্বার,সালাম এদের মৃত্যুতে তাইতো আমি অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ি। কর্নেল তাহেরের মৃত্যু আমাকে উদ্বিগ্ন করে না। স্বাধীনতার হাজার হাজার তরুনের নিস্বার্থ মৃত্যু আমার কাছে তুচ্ছ মনে হয়। তাইতো মেজার জলিলের মৃত্যু আমাকে ভাবায় না। সিরাজ সিকদারের মৃত্যুও আমার মাঝে কোন পরিবর্তন আনে না।

ভবিষ্যতে হয়তো কারো মৃত্যুই আমাকে কাঁদাবে না। হয়তো সকল মৃত্যু আমার কাছে তুচ্ছ মনে হবে। কিন্তু কেন এমন হল??এর জন্য কারা দায়ী??কারা আমার স্বত্তা কে মেরে ফেললো?? আজ থেকে একশ বছর পরেও যদি আমার স্বত্তাকে মেরে ফেলার অপরাধ তাদের বিচার কাঠগড়ায় দাড় করানো হয়,তাহলে আমি অবাক হব না। বিচার যদি তাদেরকে ফাঁসিও দেয় তাহলেও আমি অবাক হব না। ইতিহাস তাদেরকে ক্ষমা করবে না।

ইতিহাস তাদের বিচার করবে ঠিকই। ইতিহাসকে তো আর কেউ আটকে রাখতে পারবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.