বাংলাদেশে মা হবার সবচেয়ে বড় সুবিধা মনে হয় পরিবারের এবং বাসার গৃহকর্মীর সাহায্য পাবার ব্যাপারটি। এই দেশে যেটি হবার যো নেই। এক বান্ধবীর সাথে কথা বলছিলাম সেদিন। সে বলল যে তার দু'টি ছেলের জন্য আলাদা আলাদা আয়া আছে। আমি ওকে বললাম যে আমার বাচ্চার মাও আমি, আ্য়াও আমি, বাসার বুয়াও আমি।
দু'জন খুব হাসলাম। ব্যপারটি কিন্তু আসলেই অনেকটা সেরকম।
দেশে যখন শুনি কারও বাচ্চা হবে পরিবারে রৈ রৈ পড়ে যায় ভাল একটি কাজের লোকের সন্ধানে। মা, শাশুড়িরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন, নতুন বাবুকে দেখার জন্য ভালো একজন কাজের মানুষ দরকার যে।
এই দেশে হসপিটাল থেকে ফিরে মা, বাবাকেই ব্যস্ত হয়ে যেতে হয় বাচ্চার জন্য।
রান্না-বান্না, ঘর গোছানো, বাজার সদাই করা আর বাচ্চার যত্ন তো আছেই। যারা বাবা, মা হয়েছেন তারা বুঝতে পারবেন বাচ্চা লালন-পালন কি পরিমাণ পরিশ্রমের ব্যাপার। প্রথম দিকে প্রতি রাতেই মনে হত, ইশ্!!!! একটানা যদি দু'ঘন্টা ঘুমোতে পারতাম!
সকালে নাস্তা খাই বাচ্চাকে স্ট্রোলারে বসিয়ে, ঘরের কাজকর্ম সারি তাকে সেই স্ট্রোলারে বসিয়েই। যখন সে ঘুমায় তখন নিজের টুকটাক কাজ সেরে ফেলি। এই যেমন এখন লিখতে পারছি কারণ সে ঘুমোচ্ছে।
ঢাকায় একটু ফোনে কথা বলবো। সে জেগে থাকলে আরাম করে কথা বলতে পারিনা তাই অপেক্ষা করি কখন সে ঘুমোবে বা কখন বর কাজ থেকে বাড়ি ফিরবে।
বর কাজ থেকে আসার পর দু'জন মিলে বাচ্চাকে গোসল দেই। তারপর দু'জন টুকটাক রান্না করি। সাধারণত বড় ধরণের রান্না রেখে দেই শনি আর রবিবারের জন্য।
বন্ধের দিন তো তাই।
বাচ্চা সারাক্ষনই সাথে সাথে থাকে। বাজারে গেলেও বাচ্চা সাথে, ডাক্তারের চেম্বারে গেলেও বাচ্চা সাথে। ঢাকায় বন্ধুদের দেখি বাচ্চাকে মা, শাশুড়ি অথবা আয়ার কাছে রেখে বাইরে গেছে খেতে, কেনাকাটা করতে বা বেড়াতে। বিদেশে খুব ভাগ্যবতী না হলে এই সুযোগ মা'দের মেলে না।
নিজের শরীরটা খারাপ লাগলেও একটু বিছানায় শুয়ে থাকা সম্ভব হয়না। বাচ্চা দেখবে কে?! একটানা পরিশ্রম করে যেতে হয় বলতে পারেন। দিনের শেষে এত ক্লান্ত থাকি যে বিছানায় যাওয়া মাত্রই ঘুমে রাজ্যে পাড়ি দেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।