আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভ্যালেন্টাইন | Valentine

পাগলাটে ... ধোঁয়াশাপুর্ণ এক চরিত্র ... নিজেকে চেনার ব্যস্ততায় সর্বদা ব্যস্ত ... আজ মাঘ মাসের ১৮ তারিখ । শীত আঊটগোয়িং, বসন্ত ইনকামিং । কবি’দের মাঝে বসন্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় । বসন্ত নিয়ে তাই কবিতা,গান, ছড়া, উপন্যাস মাশাআল্লাহ কোন কিছুরই কমতি নেই । বসন্ত আসিতেছে, আমার মাঝেও কবি ভাব যেন ঝাপিয়ে পড়িতেছে ! “ ১৯ বসন্ত পাড়ি গেলো, পাইলাম না তারি দেখা ; আরে পাগলা, ১৯ বসন্ত পাড়ি গেলো, পাইলাম না তারি দেখা ; খাইলাম আমি কেবল ছ্যাকা আর ছ্যাকা” ।

[ আদাব-আদাব ] কাব্য চর্চা থেকে সরে আসি খানিকটা, মার-টার খাওয়ার ইচ্ছা আপাতত নেই (এমনি’তেই মনের দুঃখে জর্জরিত) । ভ্যালেন্টাইন ডে’র ইতিহাস’টা খানিক জেনে নেয়া যাক । আমাদের গল্পের নায়ক ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন প্রীস্ট; পাদ্রী । রোমের অধিকর্তা তখন ক্লডিয়াস দ্যা সেকেন্ড । তো একদিন ক্লডিয়াস ব্যক্তিগত টয়লেটে বসে হাগু করছিলেন, সাথে গুনগুনিয়ে গান’ও গাচ্ছিলেন, “ ক্যান এই কলা-ভেড়ী , কলা-ভেড়ী , কলা-ভেড়ী দি ... হায় দি ... উফফ দি ... ইসস দি ...” ।

এমন সময় দরজায় ঠাঁক ঠাঁক আওয়াজ । কার এত বড় স্পর্ধা যে রোম অধিপতি’র সঙ্গীত চর্চায় বাধাঁ দেয় ? ক্লডিয়াস তার সহধর্মিনী’র আওয়াজ পেলেন এবার । “ওরে বুড়ো ভাম, বের হবি না তুই? নাকি ওইখানেই নতুন রাজ্য খুলে নিছিস”? বড়ই অপমানজনক কথা বার্তা ! কিন্তু রোম অধিপতি যে স্ত্রী ভয়ে কাবু ! আস্তে করে আওয়াজ দিলেন, “এই তো আর একটু জান”। বাকি ঘটনা নাই শুনলাম আর, সেই মুহুর্তেই ক্লডিয়াস দ্যা সেকেন্ড সিদ্ধান্ত নিলেন, তার অধীনস্ত সকল সৈন্যদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ ! বাহাদুর জওয়ানেরা’ও স্ত্রী ভয়ে কাবু হয়ে থাকবে, তা তো হয় না ! গ্লাডিয়েটর’রা হবে সকল কিছুর উর্দ্ধে ! কিন্তু ক্লডিয়াস বললেই কি হবে, সৈন্যদের তো শখ আহ্লাদ আছে । তারা শরণাপন্ন হল পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন’র কাছে ।

সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন তাদের আশ্বাস দিলেন, বিয়ে তিনি পড়াবেন এবং তা হবে গোপনে । ক্লডিয়াস’র কানেও এই কথা গেলো । ভ্যালেন্টাইন যা করেছে, তা মার্জনাযোগ্য নয় । তিনি জল্লাদ’কে আদেশ দিলেন, “ও মাইকেল, অমুক দিন সকালে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের সানডে মানডে ক্লোজ করে দিবা” । জল্লাদ প্রতুত্তরে বললো, “আমার নাম মাইকেল, পাহাড়ে চালাই সাইকেল; কাজ হয়ে যাবে” ।

আমাদের নায়ক এখন জেলে বন্দি । ভ্যালেন্টাইনের সানডে মানডে ক্লোজ হওয়ার আগের অবশিস্ট দিনগুলোতে তার দেখা-শোনা করার ভার পড়লো জেলার সাহেবের মেয়ের । পাদ্রী ভ্যালেন্টাইনের বয়স কম । তার সৌন্দর্য, কথা বার্তায় জেলার-কন্যা দু’দিনেই মুগ্ধ । এতই মুগ্ধ যে সেই মুগ্ধতার সাগরে আমাদের বীর বিক্রম মুসা ইব্রাহীম’কে ছেড়ে দিলে সে’ও ডুবে যাবে ।

মারা যাবার আগের রাতে ভ্যালেন্টাইন অনেক কস্টে জোগাড় করা কাগজে ওই মেয়ের জন্য একটি নোট লিখলেন । নোটের শেষে সাইন করা ছিল, “from your Valentine”. দিনটি ছিল 14th February, 269 A.D সেই থেকে আজ অবধি, এই দিনটি শুধুই ভালোবাসার । এইবার আসি আমার নিজস্ব ভ্যালেন্টাইনের কথায় । সাল ২০০৯: আমার এস এস সি’র বছর । ভ্যালেন্টাইনের আগের রাতে আমি “বার্ড ফ্লু” প্যারাগ্রাফ পড়ছিলাম ।

মুখস্ত বলবো ? সাল ২০১০: আমার স্ট্রং ডায়রিয়া, স্যালাইন সহকারে বিছানায় শায়িত । সাল ২০১১: ১৩ই ফেব্রুয়ারী ফর্মটিচার মাঈন স্যারের হুমকি । পরেরদিন আমি কলেজে না আসলে আছিলা বাশঁ গুহ্যদ্বার দিয়ে ঢোকানো হবে । আমাদের কলেজ শুরু’র টাইম ছিল ৮ টা । ১৪ তারিখ সকাল সাড়ে আটটা’তে আমার মা’র ফোনে ক্রিং ক্রিং ।

মাঃ হ্যালো । স্যারঃ আপনি কি সঙ্গী’র আম্মু বলছেন ? মাঃ জ্বি । স্যারঃ আপনার ছেলে’তো আজ কলেজে আসে নাই । নিশ্চয় কোন মেয়ের সাথে পার্কে বসে গল্প করছে । ছেলে’টার দিকে একটু নজর রাখুন ।

দিনে দিনে নস্ট হয়ে যাচ্ছে তো । ওরে নিয়ে আমাদের যা আশা ছিল, সব দূরাশা । মেয়েবাজি করে কি ভালো রেজাল্ট সম্ভব, আপনিই বলেন ? মাঃ কিন্তু ও’তো ওর রুমেই । ঘুমাচ্ছে । ঊঠতে পারে নাই সম্ভবত ।

আমি ডেকে দিচ্ছি । স্যারঃ ৯ টায় আমি কলেজে গেলাম, কলেজ থেকে বের হয়ে আবার মাঈন স্যারের সামনে । উনার বাসায় ৬ টা পর্যন্ত E আর mc^2 নিয়া টানাটানির পর আমার বিছানা আমাকে ডাকছিলো, আর কিছু নয় । সাল ২০১২: মেরিন থেকে কল আসছে, ১২ই ফেব্রুয়ারী বিকাল ৫ টার মধ্যে একাডেমী’তে রিপোর্টিং । আমার এই ভ্যালেন্টাইন’টা শুরু হবে ভোর ৫ টায় মার্চ পাস্ট দিয়ে ।

সাদা পানযাবী পড়ে, গায়ে আতর মেখে কোন লাল শাড়ি পরিহীতা’র সাথে রিকসায় আর ঘোরা হল না আমার । ১৯ বসন্ত শেষেও কাউকে বলা হল না, “ভালোবাসি, অনেক বেশি ভালোবাসি”। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।