আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিরিয়াল কিলার এর্জেবেত বাটোরি: দ্যা ব্লাডি(/ব্লাড) কাউন্টেস

Sufficit huic tumulus, cui non sufficeret orbis প্রাককথন: প্রথমে আহেন জাইন্না লই সিরিয়াল কিলার কৈয়া কাগো সম্মান করা হয়, সহজভাবে কৈলে উইকি থিকা যেইটা পাওন যায় সেইটা হৈতাসে যে মাসাধিককালে মাত্র ৩ বা তার বেশি খুন কর্সে । আলোচ্য এর্জেবেত বাটোরিরে(আংলিশে এলিজাবেথ বাথোরি) পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম ইভিল মহিলা হিসাবে অত্যন্ত সম্মান দেয়া হৈয়া থাকে। এই দিল দরিয়া আপামনি আর তেনার গুণধর সাঙ্গপাঙ্গ মিল্লা ধারণা করা হয় মাত্র ৬৫০ এরও মত ৯-২৬ বছরের নষ্টা(!) যুবতিরে মাইরা ফালায়া উচিত শিক্ষা দিসিলেন যদিও দুষ্ট লোকেরা ষড়যন্ত্র কৈরা অভিযোগ প্রমান করে সবেমাত্র ৮০টার, যেইটার মাধ্যমে অবশ্যই অবশ্যই উনার মহান কর্মরে বিরাট অপমান করা হৈসে এর লিগা আমি কিছু কর্তে না পাইরা এইহানে তেব্র দেক্কার জানাইলাম। এই আপুমনি হৈতাসেন সেই সৌভাগ্যবতী মহিলা যারে অনেকে পৃথিবীর ইতিহাসের "প্রথম মহিলা সিরিয়াল কিলার" নামক অসামান্য খেতাবে ভুষিত কর্সেন,বলেন আলহামদুলিল্লাহ। আপারে নিয়া যেই মিথটা সবথিকা বেশি প্রচলিত সেইটা হৈতাসে উনি উনার পবিত্র দেহ ঐসব নষ্টা ভার্জিন মাইয়াগো রক্ত দিয়া ধৌত কর্তেন, নিন্দুকেরা বলে উনি নাকি চির যৌবনা(ইয়া হাবিবি!) থাকনের লিগা এইটা কর্তেন তয় আমার ধারণা উনি যদি সত্যিই এইটা কৈরাই থাকেন তবে সেইটা মহত উদ্দেশেই কর্তেন যেন ঐসব নষ্টা ভিক্টিমরা উনার উছিলায় মরণের পর পবিত্র হৈয়া যায়! বাটোরি কথন: এর্জেবেত বাটোরি (৭ই আগস্ট ১৫৬০-২১শে আগস্ট ১৬১৪) হাঙ্গেরির এক ধনী ও খানদানি বাটোরি বংশের কাউন্টেস আছিলেন।

উনি মূলত "দ্যা ব্লাড কাউন্টেস" বা "ড্রাকুলা কাউন্টেস" নামেই পরিচিত,পোস্টের শিরোনামের আংশিক(এলিজাবেথ বাথোরি: দ্যা ব্লাডি কাউন্টেস) উনারে নিয়া লেখা এক্টা বইয়ের নাম। বাটোরির অনেক প্রভাবশালী আত্মীয় আছিল,তার মধ্যে সব থিকা উল্লেখযোগ্য ইস্তভান বাটোরি যে ট্রান্সসিল্ভেনিয়া (বর্তমান রোমানিয়াতে) এর প্রিন্স এবং পরে পোল্যান্ডের কিং ছিল(১৫৭৫-১৫৮৬)। বাটোরির সাইকোটিক আচরণের কারণ হিসাবে অনেকেই মনে করেন সম্ভবত ৪-৫ বছর বয়সে বাটোরি কিছু ভায়োলেন্ট আক্রমনের শিকার হৈসিলেন, সেইটা পরবর্তিতে হয়ত তার মধ্যে কোনো নিউরোলজ্যিকাল ডিসোর্ডারের জন্ম দিয়া থাকতে পারে। ১৫৭৫ সালে ব্যারন তামাস নাওদাস্দ এর পোলা ফ্যারেন্জ নাওদাস্দ এর লগে ১৫ বছর বয়সে বাটোরির সাদী হয়,সাদী উপলক্ষে নাওদাস্দ এর পক্ষ থিকা গিফটো আছিল "ক্যাসল কাহটিস" (বর্তমান স্লোভাকিয়ায়) যেইটা এখন এক্টা ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান। ফ্যারেন্জ নাওদাস্দ "ব্ল্যাক হিরো অভ হাঙ্গেরি" নামে তখন পরিচিত আছিলেন,১৫৭৮ সালে অটোম্যানগো লগে যুদ্ধে হাঙ্গেরিয়ান ট্রুপসের প্রধান কমান্ডারও তিনিই ছিলেন।

ফ্যারেন্জ বেশিরভাগ সময়ই যুদ্ধে ব্যস্ত থাকতেন,এই সময় বাটোরি কিছুদিনের লিগা এক "ডার্ক স্ট্রেইনজারের" লগে হাওয়া হৈয়া গেসিলেন,যদিও ফিরা আসনের পর ফ্যারেন্জ তারে ক্ষমা কৈরা দেন। কিন্তু তখন থিকা তার শাশুড়ি বাটোরির উপর কর্তিত্ব খাটানি শুরু করলে বাটোরি তার পুরানা সেবিকা লোনা য়ো এর সহায়তায় অন্যান্য চাকরানিদের উপর ক্ষোভ মিটাইতে থাকলেন। তবে বাটোরির অ্যাট্রোসিটিতে মূল চেলা আছিল চারজন ইয়ানোস ঐর্ভারুহ,দর্কো এবং জাদুকরী মালেকা হামিরা থুক্কু জাদুকরী দরত্তা জেন্তেস ও দ্রাভুলা। বাটোরি মোট ছয় সন্তানের জন্ম দেন অ্যানা,উর্সেলা&থমাস(দুইজনের মারা যায়),ক্যাথরিন,পল এবং নিকোলাস। বিভিন্ন চিঠি থিকা স্ত্রী এবং মাতা হিসাবে এক অন্যরকম বাটোরির পরিচয় অবশ্য পাওন যায়।

বাটোরির অত্যাচার: ১৬০৪ সালে ফ্যারেন্জ মারা গেলে বাটোরি তার শাশুড়িরে বিদায় কৈরা দেন এবং তার পর থিকাই মূলত বাটোরির আরও বেশি ভায়োলেন্ট হৈয়া উঠেন। বাটোরি আগে থিকাই বিভিন্ন বলি দেয়ার রিচ্যুযালে যাতায়াত করতেন এবং সেইখান এক বুড়িরে তিনি ব্যঙ্গ করলে বুড়ি পাল্টা অভিশাপ দিয়া বলে তুমিও শীঘ্রই বুড়ি হইবা,এরপর থিকাই তার চির যৌবনার ব্যাপারটা মাথাচাড়া দিয়া উঠে। একদিন এর চাকরানী চুল আচ্রাইতে গিয়া এক্টা চুল তুইলা ফালায় আর এতে বাটোরি ভয়াবহ খেইপা গিয়া মেয়েটারে থাপ্রাইতে শুরু করে। এমন মাইর দেয় যে মাইরের চোটে মেয়েটারে মুখ দিয়া রক্ত পরা শুরু হয়,এই রক্ত বাটোরির হাতে পরাতে হঠাত তার কেন জানি মনে হৈল যে ওই জায়গার রিঙ্কল নাই হৈয়া গেসে তথা রক্তের কারণে তার স্কিন যৌবন ফিরা পাইসে। দুই জাদুকরীও জানাইলো যে কম বয়সী ভার্জিন যুবতীদের রক্ত যৌবন ধৈরা রাখতে সাহায্য করে আর যায় কই মাথা খারাপ করা অবস্থা,সাথে সাথেই বাটোরি দর্কোরে দিয়া ওই মেয়েরে কাইটা,চিড়া তার রক্ত দিয়া গোসল করনের ব্যবস্থা করেন! বলা হৈয়া থাকে উনি যেইভাবে নষ্টাদের(!) শায়েস্তা কর্তেন তার মইধ্যে পিটানি,পোড়ানি,অঙ্গহানি,নাখাওয়ানি উল্লেখযোগ্য।

বাটোরি যে অনেক আদর-যত্ননিয়া অত্যন্ত আনন্দদায়ক ভাবে ঐসব নষ্টাদের শিক্ষা দিতেন সেইটার এক্টা বর্ণনা দিসে উনার এক কামলা ফিযকো,"তাদের(যুবতী চাকরানী) হাত রশি দিয়া বান্ধা হৈল এবং তারপর মরার আগ পর্যন্ত মার্তে থাকলো। এমনভাবে মারা হৈল যেন তাদের শরীরের চামড়া কয়লার মত কালো হৈয়া যায় এবং ছিড়া গিয়া ছিন্ন বিচ্ছিন হৈয়া যায়। এক্টা মেয়ে মরার আগ পর্যন্ত ২০০টা মাইর সয্য কর্সিলো। দর্কো(এক গুণধর চেলা) লোম ছাটনের মত কৈরা তার এক্টা এক্টা আঙ্গুল কাটলো তারপর রগগুলা চিড়া ফালাইলো কাচি দিয়া!" অভিযোগ ও ট্রায়াল: স্বামী মারা যাওয়ার পর আস্তে আস্তে বাটোরির প্রভাব আগে থিকা কিছুটা কৈমা যাওয়ার অনেকেই এইসব নিয়া কানাঘুষা শুরু করলো যদিও কেউ তখনও কোনো অভিযোগ নিয়া আগায়া আসে নাই। উদারমনা বাটোরি অবশ্য এইটা নিশ্চিত করতেন যে যাগো মারা হৈসে তাদের যেন প্রপার ক্রিশ্চিয়ান রিচ্যুয়াল অনুসারে শেষকৃত্য করা হয়,একবার অনেক বেশি মৃতদেহ একসাথে আসলে পাদ্রী এই কামে অপারগতা জানায়।

এরই মধ্যে একবার এক ভিক্টিম সামহাউ পলায়া যাইতে সমর্থ হয় আর এইসব কাহিনী বাইরে প্রচার কৈরা দেয়। এরপরই কিং ম্যাথিয়াস বাটোরির কাজিন কাউন্ট দায়ার্দু তুর্যরে ১৬ই ডিসেম্বর ১৬১০ এ বাটোরির ক্যাসল রেইডে পাঠান,কোনো ধরনের কোনো ঝামেলা ছাড়াই তারা ক্যাসল এর ভিতরে ঢুকতে পারেন। ভিতরে কেউ তাদেরকে গ্রিট করে নাই উপরন্তু প্রথমেই যেই জিনিসটা দেখেন তা হৈতাসে এক্টা চাকরানী প্রচন্ড ব্যথায় কাত্রাইতাসে কারণ তার পাজরের সব হাড় ভাইঙ্গা দেয়া হৈসে তবে তারা এইটাতে তেমন অবাক হন নাই কারণ তখন এইগুলা প্রচলিত ছিল। কিন্তু ভিতরের আরেকটা রুমে গিয়া দেখেন এক্টা মেয়েরে কাইটা অলরেডি তার শরীর থিকা সব রক্ত নিয়ে নেওয়া হৈসে আর আরেকটা মেয়ে তখন জীবিত কিন্তু তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য গর্ত করা হৈসে। এরপরে ক্যাসলের প্রিজন সেলে গিয়া দেখেন আরো এক ডজন অর্ধমৃত মেয়ে,যাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গা ড্রিল করা হৈসে বা কাইটা নেয়া হৈসে বিগত কয়েক সপ্তায়।

সবশেষে ক্যাসল এর নিচ থিকা মাটি খুইড়া আরও প্রায় ৫০ টা মৃতদেহ বাইর কৈরা আনা হয়। ফলে বাটোরিরে তখনি চৌদ্দ শিকের(ক্যাসল কাহটিসে অবরুদ্ধ) ভিত্রে চালান কৈরা দেয় হয়। ট্রায়াল শুরু হৈলে বাটোরি অভিযোগ স্বীকার কর্তে কিংবা ঐখানে উপস্থিত হইতে অস্বীকৃতি জানান,তবে চেলা ইয়ানোস ঐর্ভারুহ ৩৭টা হত্যার কথা টেস্টিফাই করে। তার বর্ণনাসুরে মেয়েদের এক্টা ঝুলানো খাচার ভিতর ভৈরা কচি দিয়া কাটা হৈত অথবা পিন দিয়া বা তপ্ত লোহা দিয়া খোচানো হৈত আর তাতে যে রক্ত পরত সেইটা দিয়া নিচে বাটোরি "ব্লাড শাওয়ার" নিতেন! সেবিকা লোনা আরও ৪০টা হত্যার কথা জানায়। বাটোরি তার ডায়রীতে প্রত্যেকটা হত্যার কথা লিখা রাখতেন যেইখানে সর্বমোট ৬১২টা হত্যার কথা লেখা ছিল।

বাটোরি এবং দুই জাদুকরী ছাড়া বাকি সবার কল্লা কাটা হয় এবং শবদেহ পোড়ানো হয় আর দুই জাদুকরীর আঙ্গুল কাইটা তাগো জীবন্ত পোড়ানো হয়। যদিও কিং ম্যাথিয়াস প্রথমে বাটোরিরে ডেথ প্যানাল্টি দিতে চাইসিলেন তবে পরবর্তিতে সব প্রসিকিউশনই কৌশলে বিলম্বিত করা হয়। কারণ হিসাবে বলা হৈয়া থাকে যে এইটা হাঙ্গেরির তখনকার রুলিং ফ্যামালির লিগা স্ক্যান্ডালের জন্ম দিতে পারে এবং একই সাথে বাটোরির সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা লাগতে পারে যেইটা করলে তার পোলা-মাইয়া এক্কেবারে রাস্তার ফকির হৈয়া যাইত। এছাড়াও রাজা ম্যাথিয়াস বাটোরির কাছ থিকা বহুত টেকা পয়সা ধার কর্সিলেন যেইটা পানিশমেন্ট হিসাবে কাইটা নেওয়া হয়,কি সুন্দর বিচার আহা! বাটোরির মৃত্যু: ১৬১০ সালে ক্যাসল কাহটিসে অবরুদ্ধ করার চাইর বছর পর(১৬১৪) ট্রায়াল চলা অবস্থায় একদিন এক কাউন্টেস বাটোরিরে দেখতে যান কারণ প্রচার ছিল বাটোরি তখনকার হাঙ্গেরির সব থিকা সুন্দরী আছিলেন। কিন্তু তিনি দেখেন যে বাটোরির নিথর দেহ মাটিতে পৈরা আছে অর্থাত ক্ষোভে-দুক্ষে তাবত বিশ্ববাসীরে এতিম কৈরা বাটোরি ইহলোকের মায়া ত্যাগ কর্সেন! বাটোরিরে ক্যাসল কাহটিসে সমাহিত কর্তে চাইলেও ওই এলকার লোকজন প্রবল আপত্তি তুলে ফলে উনারে তার বাপের বাড়িতে নিয়া সমাহিত করা হয়।

মারা যাওয়ার পর শতাধিক কালের লিগা তার সমস্ত ডকুমেন্টস সিল করা হয় আর ওই সময় সমাজে তার সম্মন্ধে যাবতীয় আলোচনা নিষিদ্ধ করা হয়। সমালোচনা: হিস্টোরিয়ান ল্যাজলো ন্যাগি এর মতে বাটোরি আসলে কন্সপিরেসি এর শিকার,তার বিপক্ষে সবগুলা অভিযোগই আসলে পলিটিক্যালি মোটিভেটেড আছিল। কারণ তখন বিভিন্ন কারণে হাঙ্গেরিতে কন্সপিরেসি থিওরি বেশ ভালোভাবেই প্রচলিত আছিল। কারো কারো মতে বাটোরি আসলে মার্সিলেন সর্ব সাকুল্যে ৩০০ এর মত,আর রক্ত দিয়া গোসলের ব্যাপারটা পুরাটাই ইগ্জাজুরেশন এইগুলা তারে নিয়া লেখতে গিয়া বিভিন্ন লেখক ইচ্ছা কৈরাই বাড়ায়া লেখসেন। শেষকথা: বাটোরি তার সময়ের অন্যান্য মহিলা এমনকি অনেক পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষিত ও বুদ্ধিমতি আছিলেন,যেইখানে হাঙ্গেরির বেশিরভাগ নোবলরাই লেখতে পারত না সেইখানে বাটোরি ছিলেন হাঙ্গেরিয়ান,ল্যাটিন এবং জার্মান তিন ভাষায়ই পারদর্শী।

বাটোরিরে নিয়া অনেক অনেক সাহিত্যকর্ম,ছবি,গেইমস,গান বানানো হৈসে। সুইডিশ ব্ল্যাক মেটাল Bathory এর নামটা এর্জেবেত বাটোরি এর কাছ থিকাই ধার করা। বাটোরিরে নিয়া নির্মিত The countess(২০০৯) এবং Bathory(২০০৮) এর মিক্সড একটা ভিডিও সাথে ইটালিয়ান গথিক মেটাল Mandragora Scream এর পছন্দের একটা গান ফ্রি(অন্য ভিড্যু দিলাম না)! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.