আমি একজন আম জনতা
ছয়টি দেশের সঙ্গে সীমান্ত থাকলেও শুধু বাংলাদেশ সীমান্তেই হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ভারত। ২০০০ সালের পর গত একযুগে বিএসএফ ১০০৬ নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। এ সময় ভারতের সঙ্গে অন্য পাঁচটি সীমান্তে একটি হত্যার ঘটনাও ঘটেনি।
সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, মানবাধিকার সংগঠন, কূটনৈতিক সূত্রগুলো এবং বিভিন্ন দেশী-বিদেশী পত্রিকার ভাষ্য থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে।
ভারতের সবচেয়ে বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তান সীমান্তেও গত ১০ বছরে কোনো বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অধিকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী ২০০২ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১০ বছরে ৮৭৩ জন নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। নতুন বছরে গত ৩ সপ্তাহে ৩ জন নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে ভারত
ভারতের সবচেয়ে বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তান। ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর সীমান্ত এবং বাকিটা ওয়ার্কিং বাউন্ডারি বা দু’দেশ কর্তৃক অনুমোদিত সীমান্ত এলাকা।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে এ পর্যন্ত ওয়ার্কিং বাউন্ডারিতে কোনো বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়া তো দূরের কথা, কোনো গোলাগুলির ঘটনা পর্যন্ত ঘটেনি। এই সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারিদের ধরার জন্যও কোনো প্রকার গুলি চালানো হয় না। অন্যদিকে ১৯৪৭ সালের পর থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর সীমান্তে অঘোষিত যুদ্ধে লিপ্ত ছিল দুই দেশ। সীমান্তের দুই পাশে প্রায় ৮ লাখ সৈন্য মোতায়েন রয়েছে দু’দেশের। ২০০২ সাল পর্যন্ত দুই পক্ষ ভারী মেশিনগান এবং মর্টারের মতো অস্ত্র দিয়ে প্রতিনিয়ত গোলাগুলি করেছে।
এই গোলাগুলির মাঝে পড়ে কখনও কখনও দু-একজন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। কারণ ওই সময় কাশ্মীর সীমান্তে পুরোপুরি যুদ্ধ পরিস্থিতি বিদ্যমান ছিল। ২০০২ সালে দুই দেশ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর সীমান্তে আর কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। গত ৯ বছর সেখানে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
চীনের সঙ্গেও ভারতের বৈরী সম্পর্ক। তা সত্ত্বেও ভারত-চীন সীমান্তে কোনো রকমের হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয় না কারণ চীন সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে—এমন কোনো কাজ কখনও করবে না ভারত।
ভারতের পক্ষ থেকে বহুবার এই সীমান্তহত্যা বন্ধের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং একাধিকবার সীমান্তহত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু তা বন্ধ হয়নি। এখন বিএসএফ সীমান্তে রীতিমতো বেপরোয়া।
গুলি করে নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যার পাশাপাশি নারকীয় নির্যাতন চালাচ্ছে। উলঙ্গ করে নির্যাতনের মাধ্যমে বর্বর উদাহরণ সৃষ্টি করছে ভারত। বর্তমান সরকারের আমলে ২শ’রও বেশি নিরীহ বাংলাদেশী নিহত হয়েছে সীমান্তে। হত্যাযজ্ঞের ধরণ দেখলেই বুঝা যায় এতে ভারত সরকারের সর্বোচ্ছ মহলের অনুমতি আছে।
ভারত কেন বাংলাদেশ সীমান্তে এই হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে:
বাংলাদেশের মানুষের ওপর একটি মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টির জন্য ভারত এটা করছে।
ভারতের ধারণা, এভাবে একের পর এক হত্যার পর একদিন বাংলাদেশের মানুষ মনে করবে সীমান্তে যা হচ্ছে তা আমাদের নিয়তি। আর তা হলে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সবকিছুর অবাধ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তখন বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশ থাকবে, আর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে ভারত। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সীমান্তহত্যা নিয়ে রাষ্ট্র চিন্তিত নয়, তখন আশঙ্কাটা আরও বেড়ে যায়।
ভারতীয় পণ্য বর্জন এবং দেশীয় পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি ঃ
যতটুকু হয়েছে তাতে কি আপনারা সন্তুষ্ট? আপনাদের কি মনে হয় শুধুমাত্র ফেইসবুক আর ব্লগে পোস্ট স্টিকি করে রাখলেই বিএসএফ নামক হায়েনার দাঁতের ধার কমে যাবে, দমে যাবে বাংলাদেশের উপর ভারতের শক্ত হাতের কবজি? আপনার কি মনে হয়, আপনার কমেন্টের ভয়ে কোটি টাকা খরচ করে মন্ত্রিত্বের মাল্য গলায় পরা লোকগুলো ছুটে এসে আপনার কাছে ক্ষমা চাইবে? বুক উঁচু করে সীমান্তে- গিয়ে হুমকি দিয়ে বলবে সাবধান ‘আমরাও টাইগারের জাতি’? দেশের স্বাধীনতা আজ ভুলন্ঠিত আর আমাদের রাজনৈতিক নেতারা আজ আত্নতুষ্টিতে তৃপ্ত।
তাইতো স্বাধীন দেশের একজন দায়ত্বশীল মন্ত্রীর দাম্ভিক মন্তব্য - সীমান্তে যা হচ্ছে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ! অতীতে হয়েছে, এখনো হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে! এসব নিয়ে ভাবার সময় রাষ্ট্রের নাই!!!! - এরপরও কি আমরা বসে থাকবো প্রশাসন আর সরকারের ধ্বজভঙ্গ পররাষ্ট্রনীতির ভরষায়??!!!
আপনার কি মনে হয় যে, আমরা যা করছি তাতেই হিন্দির আগ্রাসন থেকে আমাদের বাংলা ভাষা নিরাপত্তা লাভ করবে? আপনার চোখের পানিতে কি ধুয়ে যাবে, লক্ষ কোটি মানুষের সামনে উলঙ্গ হয়ে এক যুবকের গুপ্তাঙ্গ প্রকাশের লজ্জা। ফালানীর পরিবার কি ফিরে পাবে ফালানীকে?
সত্যি কথা বলতে বন্ধুরা এর কিছুই হবে না। শুধু সময় নষ্ট। কারণ বছরের পর বছর ধরে জমাট বাঁধা বরফের এভারেস্ট সহজেই গলবে না। এজন্য আমাদের আরো অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে, ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
সঠিক উপায়ে সেটা করতে পারলে আমাদের শ্রম সার্থক হবে। আমাদের পতাকা আবার উঁচু হবে, মাটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা ৩০ লক্ষ শহীদের রূহ শান্তি- পাবে। ফালানীর মায়ের মুখে হাসি ফুটবে, উলঙ্গ হয়ে দেশের মানুষকে জাগ্রত করতে পারায় হাবিবুরেরও আনন্দ মিলবে। আর ভারতীয় শেয়ালদেরও কানে ঘণ্টা বাজা শুরু করবে।
ব্লগে ব্লগে অনেক ঝড় তোলা হয়েছে, তাই মুখে বলার কাজ এবার মোটামুটি শেষ, সময় এসেছে ত্যাগ স্বীকার করার।
(মনে রাখতে হবে, ভালোবাসার মানে মুখে বলা ও সেটা কাজে পরিণত করা)
মনে রাখতে হবে, এই কাজ কখনো একা সম্ভব নয় আবার এক দিনেও সম্ভব নয়। দরকার সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এক দল মানুষের দীর্ঘ দিন পরিশ্রম করা।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে অনেক ভেবেচিন্তে- আমাদের গৌরবের ফেব্রুয়ারি মাসকে আমি ভারতীয় পণ্য বর্জনের মাস হিসেবে ডাক দিচ্ছি। আমার বিশ্বাস প্রস্তাবটা খারাপ নয়, আপনারা কি বলেন? থাকবেন না! ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, হিন্দি ভাষার আগ্রাসন থেকে আমাদের বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার এটাই মোক্ষম সময় এবং ফেব্রুয়ারি মাস আসতে আরো যে ক’দিন সময় পাবো সেই সময়টাতে আমরা আমাদের আহ্বান সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারব।
সীমান্তহত্যা বন্ধে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য ভারতীয় পণ্য বর্জন হতে পারে অত্যন্ত কার্যকরী পন্থা।
এটি হবে ভারতী সম্রাজ্যবাদী শোষকদের বিরুদ্ধে বাঙ্গালী জাতির এক নিরব অর্থনৈতিক অবরোধ। কারণ বাংলাদেশ ভারতীয় পণ্যর এক বিশাল বাজার। তাদের যে পণ্য কোথাও বিক্রি হয়না তাও অনায়াসে বিক্রি হয় বাংলদেশে।
প্রিয় বন্ধুগণ, আসুন দেশের জন্য এই একটি বার হলেও আমরা দল-মত-ধর্ম-বর্ণ-বিশ্বাস নিবিশেষে শুধুমাত্র একজন বাংলাদেশী হিসাবে আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলা মায়ের জন্য এই ত্যাগটুকু স্বীকার করে নেই। আজ থেকে আমরা ভারতীয় সব পণ্য বর্জন করবো।
তার বদলে ব্যবহার করবো বাংলাদেশী পণ্য।
কী কী পণ্য বর্জন করা যেতে পারে?
আপনার এয়ারটেল সিমটা ফেলে দিন, আপনার নিশ্চয় আরো সংযোগও আছে। লেইস, কুরকুরে চিপস বাংলাদেশে এর কম দামে আরো ভালো চিপস আছে। কেডবেরি, চলোরমিন্ট, আলপেনলিব, সেন্টারফ্রেশ, মেন্টরস, এয়ার অ্যাকশন চকলেট বর্জন করে বাংলাদেশী চকলেট কিনতে পারেন। চকলেট কেনার আগে চকলেটের পেছনে কোম্পানির নাম দেখে নিন।
হাজমলা, ডাবরের চ্যাবনপ্রাস, ডাবরের সব পণ্য এড়িয়ে চলুন। পার্লে ও অন্য সব ভারতীয় বিস্কুট এড়িয়ে চলুন, বাংলাদেশে এর চেয়ে মানসম্মত বিস্কুট পাওয়া যাচ্ছে। মাইক্রোম্যাক্স, হাইটেক, কার্বন ও লাভা মোবাইল সেট, মারুতি, সুরোজমাজদা, টাটা, হিন্দুস'ান গাড়ি ও ট্রাক এবং বাজাজ পালসার, টিভিএস, হিরো হোন্ডা, ইয়ামাহা (মেড বাই ইনডিয়া), হিরো ও অ্যাটলাস মোটরসাইকেল ও সাইকেল বর্জন করুন।
ভিডিওকন,ওয়ার্লপুল (মেড বাই ইনডিয়া) না কিনে দেশী ওয়ালটন বা বিদেশী অন্য ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক্স জিনিস কিনতে পারেন।
টাইটান ঘড়ি না কিনে অন্য ব্র্যান্ডের ঘড়ি কিনতে পারেন।
ভিএলসিই, ডারমো ভিভা, চিক, ভিট, ভাটিকা, মেডিমিক্স, সেটওয়েট, সফটি, হিমালয়ান, গার্নিয়ার, লাকমে প্রসাধনী, হুইসপার টয়লেট্রিজ ও কোলগেট, মেসওয়াক, ডাবর রেড, একটিভ টুথপেস্ট এবং জাতক, সেটওয়েট, ওয়াইল্ড রেইন ডিওডারেন্ট স্প্রে বর্জন করতে পারেন।
সেলো, মনটেক্স, নটরাজ ও কেমেল পেন্সিল, রং পেন্সিল, কলম ও রঙ এবং এশিয়ান পেইন্ট, ফেভিকল, রেমন্ড, অরবিন্দ, রিড অ্যান্ড টেইলর ফেব্রিক্স ও টেইলারিং, সব ধরনের ডাবর, গোদরেজ ও অমল পণ্য, বিড়লা আলট্রাটেক সিমেন্ট, বিড়লার পণ্য, উজালা, সাবান, নীল ও ডিটারজেন্ট এবং দোকান থেকে পেঁয়াজ, রসুন, ডাল কেনার ক্ষেত্রে ভারতীয় পণ্যের বদলে অন্যটা খুঁজে নিতে পারেন।
সাফোলা গোল্ড সয়াবিন তেল, বনস্পতি ডালডা, প্যারাসুট নারকেল তেল, হকিন্স, প্রেস্টিজ প্রেসার কুকার ও ক্রোকারিজ, আরচিজ গ্রিটিংস কার্ড, সানন্দা, আনন্দলোকসহ ভারতীয় বিনোদন ম্যাগাজিন, ভারতীয় শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, স্টারপ্লাস, জি সিনেমাসহ ভারতীয় সব টিভি চ্যানেল বর্জন করতে পারেন।
আমাদের মা-বোনদের নিকট বিনীত নিবেদন - কষ্ট করে হলেও আপনারা হিন্দি সিরিয়াল দেখা আর হিন্দিতে পোষ্ট দেয়া থেকা বিরত থাকুন। বিউটি পার্লারে ইন্ডিয়ার কসমেটিকস ব্যবহারে বিরত থাকুন।
ভারতীয় সিনেমা-টিভি চ্যানেল সহ সকল ভারতীয়কে না বলুন!! সারা দেশে বিয়ে-অনুষ্ঠানে হিন্দি গান বাজানো হতে বিরত থাকুন। মোবাইলের রিংটোন থেকা হিন্দি গান মুছে ফেলুন এবং আশেপাশে সবাইকে হিন্দি গান বাজানো ও শোনা থেকে নিরুৎসাহিত করুন।
বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলদেশী ভায়েরাঃ
ভারতীয় নগ্ন আগ্রাসন আর সম্রাজ্যবাদী মনোভাবের বিরুদ্ধে ছবি সংবলিত পোষ্টার, ফেষ্টুন, ব্যানার নিয়ে বিদেশে অবস্থিত ভারতীয় দুতাবাস, জাতিসংঘ মিশন, মানবাধিকার মিশন'সমূহের সামনে মানব বন্ধন করুন এবং প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে নব্য সম্রাজ্যবাদী এবং বৃহৎ গণতন্তের ধ্বজ্বাধারী এই দেশের বর্বর আচরণ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সজাগ করুন এবং সারা বিশ্বে ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলন ছড়িয়ে দিন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।