আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসঙ্গ বিএসএফ ও প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতিক্রিয়া এবং আমার কথা

শান্তির জন্য সংগ্রামী প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতিক্রিয়াঃ হাবিবুর রহমানকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্রটি এনডিটিভি ও পশ্চিমবঙ্গের একটি টিভি চ্যানেলসহ নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আমাদের দেশের প্রিন্টিং ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, ফেসবুক, ব্লগ, ইউটিউব ইত্যাদি মাধ্যমে শুরু হয় তোলপাড়। অনেকে বিএসএফ যেহেতু কেন্দ্রীর সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রনাধীন তাই মনমোহন সরকারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবার দাবি করেছেন। অনেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের ভারত তোষনকে দায়ী করেছেন। অনেকে বুলেটের বদলে বুলেটে জবাব দেবার কথা বলেছেন। সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানোর পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা পাঠানো এবং এখনই যুদ্ধ ঘোষণার কথাও লিখেছেন।

অনেকেই সেই যুদ্ধে শহীদ হয়ে স্বর্গের সুধারস পানের বাসনাও প্রকাশ করেছেন। ভারতীয় পন্য বর্জনের দাবী জানিয়েছেন। কোন একটি সংগঠন সম্ভবত পন্য বর্জনের কর্মসূচীও ঘোষণা করেছেন। অনেকে ব্যঙ্গ করে বিএসএফকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেবার কথা বলেছেন। ভারতীয় টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে বর্জনের দাবী জানিয়েছেন।

যতরকম তীব্র ও অশালীন ভাষায় ক্ষোভ ঝাল মিটানো যায় সবই হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমগুলোও সম্পাদকীয় ছেপেছে। সুশীল সমাজও বিভিন্ন টকশো, গোলটেবিল ইত্যাদির আলোচনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। প্রতিক্রিয়ার সমালোচনাঃ নির্যাতিত হাবিবুর রহমান চরাচালানের উদ্দেশ্যে ভারতে গমন করেছিল, এটি একটি গোরতর অপরাধ। সেটি ভুলে যাওয়া উচিত নয়।

তবে বিএসএফের উচিত ছিল আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা। তাঁরা সেটি না করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে এমন অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে আরও অধিক অন্যায় করেছেন। বিএসএফ শুধু যে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করার মধ্যেই তাদের নৃশংসতা সীমাবদ্ধ রাখে, তা কিন্তু নয়। প্রতিবছর তাদের সীমান্ত এলাকায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভারতীয় নাগরিকও তাদের হাতে হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। সীমান্তে নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ জানানোর পর সম্প্রতি বিএসএফকে প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র দিয়েছে ভারত সরকার।

সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও সিমান্তে বিএসএফের নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং বেশ সোচ্চার। ভারতীয় গণমাধ্যম সত্য উদ্ঘাটনে যে ভূমিকা পালন করেছে, তা প্রশংসনীয়। অনেক সুযোগসন্ধানী চক্র এই ঘটনার সুযোগে স্বাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে উসকে দিতে চাচ্ছে, এটা নিতান্তই মুর্খামি। যারা যুদ্ধ ঘোষণার কথা বলছেন, তাঁরা কী একবারও ভেবে দেখেছেন বিশাল ভারতের সাথে এমন অসম যুদ্ধের মানে কি? কিংবা বিজিবির সাথে গোলাগুলিতে শাহ আলম নামের ভারতের এক চোরাকারবারি নিহত হলে তাঁরাও কি এভাবে প্রতিক্রিয়া বা যুদ্ধ ঘোষণার কথা ভেবেছে? আমাদের অনেকেরই যুদ্ধে শহীদ হওয়ার খায়েশ জেগে উঠেছে, তাঁরা একটু খোঁজখবর নিয়ে দেখেন আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনার কতজন পূর্বপুরুষ যুদ্ধ করেছেন কিংবা শহীদ হয়েছেন? পন্য বর্জনের যারা ডাক দিয়েছেন, ভালো কথা। স্বদেশী পন্য ব্যবহারে হব ধন্য।

কিন্তু একবার ভেবে দেখুন আপনার হয়ত সামর্থ্য আছে, কিন্তু যে অসহায় দেশপ্রেমিক কৃষক, শ্রমিক বা দিনমজুর তাদের? তাঁরা কি তাহলে অধিক মুল্যে দেশী পেয়াজ কিনবে? নাকি কমমুল্যে ভারতীয় কাপড় কিনে কিছু টাকা বাঁচিয়ে সন্তানের পড়ালেখার জন্য শিক্ষকের বেতন দিবে? জাতি জানে, বিগত জোট সরকারের আমলে যাকে তাকে ব্যাংক লোন দিয়ে কলকারখানা স্থাপনের লাইসেন্স দেওয়ায় এবং যত্রতত্র ফসলি জমি ক্রয়ের সুবিধা দেওয়ায় চাষাবাদের ভুমি দিন দিন কমেছে। সেই বিষয় নিয়ে আপনারা কেউ কিচ্ছু বলবেন না। রাজনৈতিকভাবে বিএনপি বা অন্য রাজনৈতিক দল যদি এমন ঘোষণা দেয় তবে তাঁদের সাধুবাদ। জানি তাঁরা এটা করবে না। কিন্তু কিছু মানুষ, গোষ্ঠী বা চক্র কে উসকে দিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করে ভোটের ফসল ঘরে নিতে চাইবে।

আমাদের দেশে ভারতের চ্যানেল অবাধে চলবে কিন্তু আমাদের চ্যানেল সেদেশে চলবে না, এটা মেনে নেওয়া যায়না। যদিও এই ব্যবস্থার জন্য চারদলীয় জোট সরকার পুরোপুরি দায়ী। কিন্তু কথা হলো সরকারের আইনের জন্য অপেক্ষা করার কী দরকার? প্রত্যেকে নিজেরাই নিজেদের ঘর সামলে নিলেই হয়, তাতে মাসিক কিছু টাকাও বেঁচে যায়। জানি সেটা করতে পারবেন না, কারন আপনাদের সন্তানদের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াবেন আর ঘরে ডিশ লাইন থাকবেনা সেটা কী করে হয়, আর শিলা কি জওয়ানি শিলা, ওলা গান শুনিয়ে মাথা বানাবেন ঢিলা। আর মিডিয়ায় যারা আছেন তাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে না লিখে বরং ভালো অনুষ্ঠান নির্মাণ করুন।

যাতে মানুষ স্বদেশী চ্যানেলগুলোই দেখতে আকৃষ্ট হয়। বাংলাদেশে অসংখ্য টিভি ও পত্রিকা থাকার পরেও এই ঘটনাটি কিন্তু ভারতের একটি মিডিয়াই প্রকাশ করেছে, তাহলে প্রশ্ন জাগে আমাদের মিডিয়াগুলো করে কী? তাঁরা কি শুধু মালিক পক্ষের অবৈধ অর্থ রক্ষার কাজেই ব্যস্ত? যারা সরকারের ভারত তোষণের কথা বলে ঝড় তুলছেন তাঁরা একটু মনে করে দেখুন, ’৭১ এ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতই ছিল আমাদের দুর্দিনের পরম স্বজন। তাঁরা শুধু আমাদের আশ্রয় আর খাবারই দেয়নি, যুদ্ধে অংশ নিয়ে অনেকেই শহীদ হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরন করেছেন। তারপরও বঙ্গবন্ধু ’৭২ এর ২৬ মার্চের মধ্যেই ইন্দিরা গান্ধী সরকারকে তাদের সৈন্য ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করেন। ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিপাগল বাঙালীদের সহযোগিতা করে ভারতীয় সেনারা স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছিল।

আবার বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ভারতীয় সেনারা দ্রুত বাংলাদেশ ত্যাগ করে তাদের দেশে সেনা ছাউনিতে ফিরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ও বাঙালীকে সম্মান জানিয়েছিল। এখানেও অনেকেই সমালোচনা করবেন যে, তাঁরা ফিরে যাওয়ার সময় লুটপাট করেছে, পাকিস্তানী বাহিনীর ফেলে যাওয়া সব অস্ত্র নিয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিছুদিন আগে একটি দৈনিকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের একটি লেখা পড়লাম। তিনি লিখেছেন, ভারতের যেসব সৈন্যের কাছে তাঁদের কর্তৃপক্ষ কোন অবৈধ জিনিস পেয়েছিল তাদের সকলকেই শাস্তির আওতায় নিয়েছিল। এরকম কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ভারতীয় সেনাদের অনেককেই তিনি বিভিন্ন দ্রব্য(শাড়ী, টিভি/ রেডিও ইত্যাদি)উপহার স্বরুপ দিয়েছিলেন, যা তাঁরা নিতে চাননি।

কিন্তু জোর করে গ্রহন করানোর দরুন দোষী স্যবস্ত হলে পরে কাদের সিদ্দিকী নিজে ভারতে গিয়ে স্বাক্ষ্য দিয়ে তাঁদের শাস্তির আওতামুক্ত করেছিলেন। এতেই তাঁদের শৃঙ্খলা সহজে অনুমেয়। তাছাড়া শেখ হাসিনার সরকারের প্রথম শাসনামলে গঙ্গার পানি চুক্তির কথা ভুলে যাওয়া কী ঠিক? বর্তমান সরকারের সময়ে সাম্প্রতিককালে মনমোহন সিং এর সফরের পরে দুদেশই সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তিতে সই করেছেন। স্থল সীমানাসংক্রান্ত ’৭৪-এর চুক্তির প্রটোকল চুক্তিতে স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছরের সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে। স্বীমান্ত প্রটোকল ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সহযোগিতা, বাংলাদেশ থেকে নেপাল পর্যন্ত ট্রানজিট ট্রাফিক সহযোগিতা, সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য রক্ষা তথা বাঘ সংরক্ষন নিয়ে দুটি চুক্তি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা সহযোগিতা চুক্তি, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও দূরদর্শনের মধ্যে একটি চুক্তি এবং মত্স্যসম্পদ রক্ষা বিষয়ে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

বাংলাদেশ ফ্যাশন ইনস্টিটিউট টেকনোলজি ও ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজির মধ্যে সহযোগিতা সৃষ্টির চুক্তিসহ মোট ৮টি সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভারতের বস্ত্রপণ্য প্রস্তুতকারকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে চরম বিরোধিতা স্বত্বেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৪৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চাওয়ায় তৈরি পোশাকের ৪৬টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিতে ভারত রাজি হয়েছে। ভারত এই সুবিধা দেওয়ায় বাংলাদেশের রফতানি আয় প্রায় এক শ' কোটি ডলার বৃদ্ধি পাবে। বহুল আলোচিত দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ছিটমহলবাসীর একমাত্র যাতায়াতের পথ ভারত নিয়ন্ত্রিত তিনবিঘা করিডর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দুইদিনের মধ্যে কার্যকর হলে সেখানে বসবাসরত ১৬ হাজার ছিটমহলবাসীর আনন্দের কথা কী আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত? এমনি অনেক অর্জন আমাদের হয়েছে এবং সেগুলোকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তারপরও অনেকেই সমালোচনা করবেন।

কারন আপনাদের অনেকেরই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাক এটা চান না। দেশের মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখাই আপনাদের উদ্দেশ্য। আপনারা ভুলে যান, বেগম জিয়া সার্ক সম্মেলনে দিল্লী গিয়ে গঙ্গার পানি সমস্যা নিয়ে আলোচনার কথা বেমালুম ভুলে যাওয়ার কথা। উলফার সাথে তারেক জিয়ার গোপন সমঝোতায় সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রনে দশ ট্রাক অস্ত্র চালানের কথা। সমালোচনার বিপক্ষে আমিও নই।

যখন দেখি আমার একজন ভাই গরুচোর ও চোরাচালানের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধের সাথে জড়িত এবং ভিন্ন দেশের মানুষ তাকে রক্তাক্ত করেছে, তখন আমার ভিতরেও রক্তক্ষরন হয়। আমার সেই ভাইদের জন্য কিছু না করতে পারার অপরাধবোধ কাজ করে। মানবতাবাদী দেশপ্রেমিক সবসময়ই অন্যায়ের যৌক্তিক সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু বিশেষ মানুষের অধিক দেশপ্রেম প্রকাশ জাতির জন্য অশুভ লক্ষন। কই তাঁদের তো দেখিনা সেনা ক্যু এর কথা ফাঁস হলেও অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রকারীদের সমালোচনা করতে? বরং উল্টো অনেক মিডিয়ায় দেখা গেছে কেন সাংবাদিক সম্মেলন করা হলো এবং ষড়যন্ত্রের কথা কেন দেশবাসীকে জানানো হলো তার তীব্র সমালোচনা করতে।

কিন্তু এটা স্বীকার করেন না যে, অবাধ তথ্য প্রবাহের পথে এটাও একটা মাইলফলক। যেখানে অতীতে সামরিক অভ্যুত্থান সফলভাবে ঘটে গেলেই মানুষ জানতে পারতো, সেখানে সেনাবাহিনী জনগণের কাছে ভিতরের কথা জানিয়ে প্রমান করেছে তাঁরাও এদেশের বিচ্ছিন্ন কোন অংশ নয়। কিছুদিন আগে ভারতের 'তারা টিভি' নামক একটি দূরদর্শন যন্ত্রে আমাদের প্রিয় পতাকা অবমাননার ছবি আমাদের পত্রিকা/ টিভি চ্যানেল/ ফেসবুক/ ব্লগে ইত্যাদিতে তোলপাড় করেছিল। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল এটি প্রায় অর্ধযুগ আগে বিএনপি-জামাত জোটের শাসনামলে ঘটেছিল। অথচ এখন এটা নিয়ে হইচই ফেলা দেয়া হলো।

সরকারের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করা হলো। ঘটনা যখন ঘটেছিল তখন মহাশয়দের কেউই খোঁজ পেল না। আর এখন দেশপ্রেম উথলে দিল। এসব ঘটনাক্রম দেখে অবাক না হয়ে পারা যায় না। উদ্দেশ্যপ্রনোদিত সমালোচকদের মুখোশ উম্মোচন করা সময়ের দাবী।

এবার একটু অতীতে ফিরে যাই, ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনের পরে সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে এদের কেউ শরিক হয়েছিলেন বলে আমাদের জানা নেই। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরেও আপনাদের দেখিনি এভাবে প্রতিবাদ করতে কিংবা ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা হলেও আপনারা নীরব থেকেছেন। এমন কি ১/১১ এর পরেও শেখ হাসিনাই প্রথম গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছিলেন। তখন এইসব মিডিয়া বা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের দেখিনি জনগণের পাশে দাঁড়াতে। তাহলে এখন এত দেশপ্রেমিক হয়ে উঠার কারন কি? কারন আছে নিশ্চয়ই।

আর তা হলো, এখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি রাষ্ট্র পরিচালনায়, যুদ্ধাপরাধীর বিচার কার্যক্রম চলছে। এসব দেখে আপনাদের গাত্রদাহ হয়। সারাদেশে তাই বর্তমান সরকারের ভারত তোষণের ধোয়া তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করাই আপনাদের উদ্দেশ্য, এটা সচেতন মহল ভালো করেই জানে। অতীতেও আপনারা আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে মসজিদে মসজিদে উলু ধ্বনি বাজবে বলে ধোঁকা দিয়েছেন দীর্ঘদিন, কিন্তু দিয়েও কাজ হয়নি। তাই এখন সুযোগমত জনগণকে ভুল বোঝানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।

বাংলাদেশ সরকার এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতকে ঘটনার প্রতিকারের দাবী জানানোয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রনে থাকা বিএসএফ কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনায় দায়ী বিএসএফের ১০৫ ব্যাটালিয়নের ৮ জনকে বহিষ্কার করে সংশ্লিষ্ট কমান্ডার কে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ জানিয়েছে। তাহলে আপনাদের এত উদ্ভট প্রতিক্রিয়া কেন? কেউ কেউ সাম্পদায়িকতাকে উসকে দিচ্ছেন কিন্তু কেন? নিজেদের একবার প্রশ্ন করে দেখুন আপনার বাড়িতে কেউ চুরি করতে গেলে আপনি কী ছেড়ে দেবেন? আমাদের প্রায় বিশ হাজার বর্গমাইলের সীমান্ত অঞ্চলে শিক্ষার হার প্রায় শুন্যের কোঠায়, লোভে পড়ে সেখানের গরীব মানুষগুলো বিভিন্ন পন্য ও মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িয়ে পড়ে। আসুন তাদেরকে কিভাবে শিক্ষিত করে তোলা যায়, কিভাবে চুরির মত লজ্জা ও অপমানজনক অপকর্ম থেকে বিরত রাখা যায় সেদিকে মনোযোগ দেই। তানাহলে আপনাদের এই উদ্দেশ্যমুলক সমালোচনাকে বিশ্ববিবেক বলবে চোরের মা’র বড় গলা। তবে জনগন বুঝে, আপনাদের অনেকেরই পূর্ব পুরুষদের খায়েশ বাস্তবায়নে আপনারাও এদেশটাকে পাকিস্তান বানোনোর স্বপ্ন দেখেন, অনেকেই সাম্প্রতিককালে ক্যু সফল না হওয়ায় গাত্রদাহে সরকারের সফলতাকে আড়াল করার জন্য সরকারের ভারত তোষণের বিষ ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িকতা উসকে খালেদা-নিজামী-তারেক গংদের ক্ষমতায় আরোহনের পথ সুগম করতে চান, অনেকেই চীন-ভারতের দ্বন্ধে চীনা নুন-সোডা খাওয়ার লোভে ভারত বিরোধীতা করেন।

কেউ কেউ হয়ত ব্যতিক্রম। তাঁদের যৌক্তিক সমালচনাকে সাধুবাদ। কিন্তু উদ্দেশ্যমুলক সমালচনাকে ধিক্কার। কথা স্পষ্ট, সকলের অতীত দেখে ও পর্যালোচনা সাপেক্ষেই জনগন স্বিদ্ধান্ত নেবে। কারন কথায় আছে, কারো অতীত জানা থাকলে তাঁর ব্যপারে স্বিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।