আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোমের আলোয় কার ছায়া গো।

জীবন আসলে চিল্লাপাল্লা ছাড়া কিছুই না। সেটাই করতে চাই, মনের সুখে, ইচ্ছা মতন। ‘টিট টিটিট’ ফিবার মোবাইলে একটা টেক্সট মেসেজ এসেছে। মেসেজে লেখা, ‘Happy Birthday Fiba, puru diner porikolpona ki kore felcho er moddhe? Amar jonne bikale ektu somoy rakhte parbe? ek sathe Dinner korte cacchilam’ মেসেজটা পাঠানোর পর অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও আনিস কোন উত্তর না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ল। কারণ গত বেশ কিছুদিন যাবত তাদের সম্পর্কটা ভাল যাচ্ছে না।

সন্ধ্যার দিকে ফিবা উত্তর, ‘ Thank u Anis, kintu ami jonmodin ta palon korte parchi na. keno parchi na ta tumi jano’ সাথে সাথেই আনিস থেকে উত্তর গেল, ‘I know Fiba, that’s why I’m asking u out. We should remove all sad memories of past. Please allow me one chance.’ ফিবা বিরক্ত, কিন্তু তার ঠোটের কোনায় একটা হাসি দেখা গেল। মনে মনে বলল, ‘আনিস আগের মতই রয়ে গেছে, একটুও বদলায় নি। ‘ কিন্তু সে আবার ভাবল যে সমস্যা গুলো মিটিয়ে ফেলার জন্য এর চেয়ে ভাল সময় আর আসবে না। তাই ফিবা আবার মেসেজ লিখল, ‘ I think u r right. Okey, pick me up @7 tonoght’. সন্ধ্যা ৬.৩০ এর সময়েই সে ফিবার বাসায় হাজির হয়ে গেল। দরজা খুলল ফিবার মা, অ্যান্টির কাছে অনুমতি নিয়ে আনিস ফিবাকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল, উনিও বাঁধা দিলেন না, কারণ এদের মধ্যে পারিবারিক পর্যায়ে বিয়ের আলাপ চলছে।

আর কথা বার্তাও শেষের পর্যায়ে, তাই এখন তাদের একটু একান্ত সময় দেয়া দরকার, নিজেদের জানাশুনাটা একটু ভালো হওয়ার জন্যই। গাড়ীতে উঠেই ফিবা জিজ্ঞাস করল, ‘আমরা ডিনার করতে কোথায় যাচ্ছি?’ আনিস বলল ‘দেখই না’ একসময় ফিবা দেখল যে আনিস গাড়ি চালাতে চালাতে শহরের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফিবা বলল যে, ‘ আমার মনে হয় না এই জায়গায় কোন ভালো রেস্টুরেন্ট আছে। ‘ আনিস, ‘হুম, নাই। কারণ আমরা কোন রেস্টুরেন্টে যাচ্ছি না।

‘ ফিবার বুক কেঁপে উঠলো। সে ভয়ে ভয়ে বলল, ‘ তাহলে কোথায় যাচ্ছি আমরা?’ হটাত একটা নির্জন বাড়ীর সামনে গাড়ীটা থেমে গেল। আনিস বলল, ‘এখানে’। সে নেমে গাড়ীর দরজা খুলে দিল ফিবাকে নামার জন্য। কাঁপা গোলা ফিবা জিজ্ঞাস করল, ‘আমরা এখন কোথায়?’ আনিস বলল, ‘আমার বাসস্থানে স্বাগতম।

আমি এখানেই থাকি বেশীরভাগ সময়, এটা আমাদেরই বাড়ি। ‘ ‘তোমাদের বাড়ি মানে? তুমি এখানে একা থাক?’ ‘হুম, একা। আস, ভেতরে আস। এতো ভয়ের কিছু নেই, এখানে কোন কিছুরই অভাব নেই, সব আছে। ‘ ‘একা মানে? তুমি একা মানে, তোমার সাথে আমিও একা।

কি বলছ এইসব!!’ ‘তো? প্রবলেম কি?’ ‘তোমার সাথে আমি একা একজন মেয়ে মানুষ, প্রবলেম কি বুঝ না?’ ফিবা রেগে গেল। আনিস বেশ উচ্চ স্বরেই বলল, ‘ ফিবা, তুমি খুব ভালো করেই জান, যে আমার সাথে তুমি সম্পূর্ণ নিরাপদ। তাহলে শুধু শুধু কেন রেগে যাচ্ছ? তারচেয়ে চুপচাপ সোফায় বস, আমি খাবার নিয়ে আসি। ‘ ফিবা চিৎকার দিয়ে উঠলো, ‘অরি বাপপ, আমি একা একা এখানে থাকতে পারবো না, আমাকেও নিয়ে যাও। ‘ আবার মনে ভাবল যে আনিস এরকম ছেলে না।

সে তার কোন ক্ষতি করবে না কখনই। এইটুকু বিশ্বাস আছে বলেই সে আনিসের সাথে এতদিন প্রেম চালিয়ে যাচ্ছে আর এখনো তাকে এতো ভালো বাসে। কিছুক্ষণ পড়েই আলোটা হাঠাত নিভে গেল। ফিবা আবার ভয় পেয়ে গেল, সে আনিস, আনিস…….. বলে চিৎকার শুরু করে দিল। আনিস সাথে সাথেই বারান্দা দিয়ে রুমে ঢুকল, হাতে একটা ফুলের থুরা।

ফিবা আনিসকে কাঁদো স্বরে বলল, ‘বাতি বন্ধ করেছ কেন?’ আনিস বলল, ‘বাতি বন্ধ করিনি, জাস্ট আলোটা একটু কমিয়ে দিয়েছি আরকি। ‘ সে সাথে সাথে ফুলের থুরাটা ফিবার হাতে দিয়ে বলল, ‘Happy Birth Day to you Fiba’ আনন্দে ফিবার চোখে পানি এসে গেল, সে ভেবেছিল তার জীবনের সবচেয়ে বাজে জন্মদিনটা এবার হতে যাচ্ছে, আর এখন দেখছে তার ঠিক উলটো। এতো গুলো সারপ্রাইজ একদিনের ভেতরে সে কখনই পায় নি। আনিস তাকে ডাইনিং টেবিলের দিকে নিয়ে গেল। সেখানে টেবিলে সুন্দর করে সাজানো কেক, তার চারপাশে মোম জ্বলছে।

আনন্দে ফিবার মনটা নেচে উঠলো আর একবার। চিৎকার করে উঠলো, ‘ওয়াও, ডিনার ইন কেন্ডেল লাইট। কি রোমান্টিক দৃশ্য, আমি সারাজীবন তোমাকে একজন কাঠকুট্রা টাইপের মানুষ জেনে এসেছি। সব বুদ্ধি কি তোমার মাথা থেকেই এসেছে!!’ আনিস কোন কথা বলল না। তার ঠোঁটের কোনায় একটা হাসির রেখা দেখা গেল মাত্র।

এ এমন এক হাসি যার অর্থ করা খুব কঠিন। কেক কাঁটা হল, জন্মদিনের গান বাজানো হল এর সবকিছু ফিবার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছিলো। খুশিতে ফিবা আনিস কে জড়িয়ে ধরতে চাইল, আনিস প্রথমে সড়ে গেল সেখান থেকে। ফিবা আবার যখন চেষ্টা করল তখন আর নিজেকে সরিয়ে নিতে পারল না আনিস, সে আর সরাবে কি। আর ছায়া সরিয়ে লাভই বা কি!!! ফিবার হাতটা ঢুকে গেল আনিসের শরীরের ভেতর দিয়েই।

এই দৃশ্য সহ্য করার ক্ষমতা কারোরই নেই। সাথে সাথেই মূর্ছা গেল ফিবা। পরিশিষ্ট: ঐ দিন সকালে আনিস যখন ফিবার মেসেজের উত্তর পাচ্ছিল না, সে হতাশ হয়ে ফিবার বাসার দিকে যাচ্ছিল, তার কোন সমস্যা হয়েছে কিনা দেখার জন্য। কিন্তু গাড়ি চালানো তে তার মন ছিল না। সায়েন্স ল্যাব এর মুড় পাস করার সময় একটা বাস তার গাড়িটাকে চাঁপা দিল।

আনিস কে আর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পাওয়া গেল না। বিঃদ্রঃ গল্পটির প্রথম দেখা করেছে আমারব্লগের সাথে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.