আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বছরে ৮শ’ কোটি টাকার ফেনসিডিল

বছরে ৩ কোটি বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল বাংলাদেশে ঢুকছে। মাদকের আন্ডারওয়ার্ল্ডে এর বাজার মূল্য প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা। তবে প্রকৃতপক্ষে এ বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল চোরাচালানে অন্তত ১৫০০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে কালোবাজারে। বিপুল পরিমাণ এসব ফেনসিডিলের ৭০ ভাগই ব্যবহৃত হচ্ছে রাজধানীতেই। দেশের ৩১টি জেলার শতাধিক পয়েন্ট দিয়ে ঢুকছে এসব ফেনসিডিল।

আর বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মিলে বছরে সর্বোচ্চ ২০ লাখ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করতে পারছে। এ বছর উদ্ধারকৃত ফেনসিডিলের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৮ লাখ বোতল। বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে ভারতের মাটিতে গড়ে উঠেছে ৩০৯টি ফেনসিডিল কারখানা। বাংলাদেশে পাচারের জন্য এসব কারখানায় উৎপাদন করা হচ্ছে ‘বিশেষ ফেনসিডিল’ যাতে কোডিন ফসপেট মিশ্রিত থাকছে।

অবশ্য এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে ভারত। গত বছরের পহেলা মার্চ বিজিবির সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ অঞ্চলের ডিআইজি জেএসএনডি প্রসাদ বলেন, ফেনসিডিল মাদক নয়। অথচ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অহেতুক ফেনসিডিল কারখানা বন্ধের সুপারিশ করা হচ্ছে। গত জুন মাসে ঢাকায় বিজিবি-বিএসফের মহাপরিচালক পর্যায়ের শীর্ষ বৈঠকে বিএসএফ মহাপরিচালক রামন শ্রীবাস্তভা বলেন, ভারতীয় কারখানা থেকে বাংলাদেশে ফেনসিডিল পাচারের বিষয়টি তার জানা নেই। ভারতীয় কর্তাদের দাবি ভারত থেকে বাংলাদেশে কোন ফেনসিডিল পাচার হচ্ছে না।

গত বছর ২৩ ও ২৪শে মার্চ ঢাকায় ইন্দোবাংলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ভারতীয় ফেনসিডিল পাচারের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলে ভারতের পক্ষ থেকে প্রমাণ দিতে বলা হয়। এর প্রেক্ষিতে উদ্ধারকৃত ভারতীয় ফেনসিডিলের বোতল ও বোতলের লেবেল (যেখানে ভারতীয় ঠিকানা লেখা রয়েছে) ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয়। কারখানাগুলোর সুনির্দিষ্ট ঠিকানাসহ একটি তালিকাও তাদের হাতে দেয়া হয়। পরে যৌথ সমঝোতায় সাক্ষরের সময় ভারতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর মহাপরিচালক ওপিএস মালিক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ফেনসিডিল কারখানাগুলোর বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান করে পাচারের তথ্য পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে ফেনসিডিল পাচার বন্ধে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে যেসব ফেনসিডিল কারখানার সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়া হয়েছিল সেগুলো এখনও চালু রয়েছে বলে জানা গেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে ভারত থেকে পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসা ফেনসিডিলে কোডিন ফসপেট মিশ্রিত থাকছে, যা ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রীত ফেনসিডিলে থাকছে না। বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় ফেনসিডিলকে জনপ্রিয় করতেই কোডিন ফসপেট মেশানো হয় বলে মনে করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কোডিন ফসপেট হচ্ছে ওপিয়েট বা আফিমের পানযোগ্য রূপ (ওরাল ফরম)।

এটি হোরোইনের চেয়েও ক্ষতিকর। ভারতীয় সীমান্তবর্তী কারখানাগুলো থেকে নানা কায়দায় ফেননিডিল পাচার হয়ে আসছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।