সফল ব্লগার নয়, সত্যবাদী ব্লগার হওয়াই হোক আমাদের লক্ষ্য। হে ম্যাডাম খালেদা জিয়া,
ঘরের ভিতর এসির মধ্যে বসে হরতাল ডেকে দিচ্ছেন। আর টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি ও গুন্ডা লেলিয়ে সাধারন মানুষের জানমালের ক্ষতি করবেন আর টিভি ও পত্রিকায় খুব জোরালো কন্ঠে গলা ফাটিয়ে বলবেন, "হরতাল সফল হয়েছে, জনগন আমাদের ডাকে সারা দিয়েছে। "
হে সরকার প্রধাণ হাসিনা,
আপনার সরকার কি করছে? বাধ্যতা মুলক অফিস খোলা রাখছেন। অঘোষিত নিয়ম করে দিয়েছেন, কর্মচারীদের জীবনের ঝুকি নিয়ে হলেও অফিস করতে হবে।
আর প্রানহানি হলে তার দায় হরতালের উপর চাপিয়ে দিবেন এবং হরতাল শেষে টিভি ও পত্রিকায় বিবৃতি দিবেন, "জনগন এই হরতাল প্রত্যাখান করেছে। "
হে আপোষহীন নেত্রী খালেদা,
আপনি যে কোন বিষয়েই আপোষ করেন না সেটা আমরা জানি। কিন্তু কিসের জন্য জামাতের সঙ্গে আপোষ করলেন সেটা কিছুতেই আমার মোটা মাথায় ঢোকে না! জনগণের কল্যাণ নাকি ক্ষমতা? রাজাকার বগলে করে যে জনগণের কল্যাণ করা যায় না সেটা নিশ্চয় আপনি জানেন?
হে গণতন্ত্রের মানসকন্যা হাসিনা,
বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় আপনি বহুবার আন্দোলন করেছেন, নিজের জীবন বিপন্ন করেছেন। কিন্তু এখন যখন গণতান্ত্রিক দেশে হরতালের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি করা হচ্ছে, পুলিশ হত্যা করা হচ্ছে তখন আপনি নিশ্চুপ কেন? এটা কি গণতন্ত্র রক্ষা?
হে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী খালেদা,
আপনার স্বামীকে আমরা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবেই জানি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হয়ে আপনি কিভাবে রাজাকার রক্ষার জন্য এরকম মরিয়া হয়ে উঠতে পারেন! নাকি এটা বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন ছিলো???
হে জাতির জনকের কন্যা হাসিনা,
আপনার পিতাকে আমরা জাতির পিতা হিসাবে জানি এবং মানি।
দেশের স্বাধীণতার জন্য এই মানুষটির অবদান কেউ কোনদিন ভুলতে পারবে না। অথচ তারই কন্যা হয়ে আপনি কিভাবে জামাত-শিবিরের প্রতি এতটা নমণীয় হতে পারেন? যারা এদেশের জন্মই চায়নি তাদেরকে নিষিদ্ধ করতে আপনার এত সময় লাগে কেন? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বেঁচে থাকলে নিশ্চয় আমাদের এই দিন গুলো দেখতে হতো না।
হে জনগণের নেত্রী খালেদা জিয়া,
আপনার মতে জনগণ কি শুধু জামাত-শিবির আর রাজাকাররা? আমরা সাধারণ মানুষ কি আপনার গোনার মধ্যে পড়ি না? গুটি কয়েক রাজাকারকে বাঁচানোর জন্য আপনি যে ভাবে একের পর এক কর্মসূচি দিচ্ছেন তাতে আমাদের ম্যাংগো পিপলদের কি অবস্থা একবারো কি ভেবে দেখেছেন?
হে গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনা,
ক্ষমতায় বসে আপনারা হরতালের তীব্র বিরোধীতা করছেন। অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার পরও হরতাল বিরোধী কোন আইন করছেন না! আমরা ম্যাংগো পিপলতো হরতাল ডাকি না! আমাদের রহিম-করিম-যদু-মধুর তো হরতাল ডাকার ক্ষমতা নাই। আমরা হরতাল চাই ও না! তাহলে হরতাল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে আপনার অসুবিধা কোথায়? আপনি না গণমানুষের নেত্রী!!
হে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধাণমন্ত্রী,
ক্ষমতায় থাকা কালে আপনার ছেলে আর তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে খেয়েছে।
আমরা কিন্তু সে সব ভুলি নাই। খাম্বার গাঁড়ার নাম করে তারা জনগণের যে জায়গায় খাম্বা দিয়েছে সে ব্যাথা জনগণ এখনো ভুলতে পারেনি! অথচ আপনি তাদের দুর্নীতির প্রতিকার না করে অন্যের সমালোচনায় মেতেছেন! আপনার পুত্রের মেরে দেওয়া টাকা গুলো কি জনগণের টাকা নয়? দেশের টাকা নয়?
হে একাধিক ডক্টরেট ডিগ্রিধারী প্রধাণমন্ত্রী,
আপনার অর্থমন্ত্রী মাল সাহেব একের পর এক যেভাবে চোরদের পক্ষে সাফাই গাইছে, চোরদের ছেড়ে দিচ্ছে তা কিন্তু আমরা দেখছি। হাজার হাজার কোটি টাকা এই মালের কাছে কিছুই না! অথচ সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর ১০০/১৫০ টাকা বেতন পায় যে শ্রমিক (মাসে ৩০০০/৪৫০০ টাকা বেতন ধরলে) তার কষ্টের অনুভূতি বোঝার মতো ক্ষমতা কি আপনার মাল সাহেবের আছে?
হে ন্যায় প্রতিষ্ঠার নেত্রী খালেদা জিয়া,
যুদ্ধপরাধের বিচারের নামে নাকি রাজনৈতিক নিপীড়ন চলছে! তো আসল যুদ্ধপরাধী কারা আপনি নিশ্চয় জানেন? আপনি কেন সেই আসল যুদ্ধপরাধীদের তালিকা প্রকাশ করছেন না!!
হে সত্যের পথে অবিচল নেত্রী শেখ হাসিনা,
আপনার দলের অনেককেই দেখছি জামাত-শিবির তোষণ করছে! তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে যেয়ে বড় বড় লেকচার মারছে! তাদেরকে চারিত্রিক সনদ দিয়ে আসছে! শিবিরের ক্যাডার আপনার মন্ত্রীর এপিএস এ কথাও শুনতে হয় আমাদের! শর্ষের মধ্যে ভুত নিয়ে আপনি কিভাবে জামাত-শিবির-রাজাকার নির্মুল করবেন???
হে আমাদের গর্ব নারী নেত্রীগণ,
স্বাধীণতার পর আপনাদের দুই দলই ক্ষমতার হাতবদল করেছেন। মাঝখানে অবশ্য এরশাদ আঙ্কেল কিছুদিন ছিলো। কিন্তু আপনারা দুই নারী নেত্রী দুই দুই বার নির্বাচিত হওয়ার পরও কিন্তু একাত্তরে নির্যাতিত সাড়ে ৪ লক্ষ মা-বোন কে ইনসাফ দিতে পারেননি! তাদের নির্যাতনের বদলা নিতে পারেননি! বরঞ্চ যারা এই অপকর্মের সাথে জড়িত তাদেরকে সমাজে বিভিন্ন ভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে সুযোগ করে দিয়েছেন, আত্মীয়তা করেছেন, লালন-পালন করেছেন! নারী হিসাবেও কি আপনাদের লজ্জা পাওয়া উচিত নয়?
হে স্বাধীণতার পক্ষের শক্তিরা,
আপনাদের দুই দলই নাকি স্বাধীণতার পক্ষের শক্তি, তো এত বড় বড় শক্তি থাকার পরও কিভাবে একাত্তরের রাজাকার, আলবদর, আলশামসরা এই ২০১৩ সালে নাশকতা চালাতে পারে? কিভাবে তারা রাষ্ট্রীয় বাহিনী পুলিশের উপর এরকম বর্বোরোচিত হামলা করতে পারে? কিভাবে তারা ইসলাম প্রচারের নামে ইসলাম নিয়ে ব্যবসা করতে পারে? ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা করার পরও কিভাবে তারা ৪২ বছর ধরে এই দেশে থাকতে পারে?
আর ৪২ বছর যখন বিচার শুরু হয়েছে তখন একজন বিচারের নামে টালবাহানা করছেন, আরেকজন বিচার বানচাল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন! কেন? ক্ষমতার জন্য? নাকি এটাও জনগণের কল্যাণের মধ্যে পড়ে!
হে মহান নেত্রীদ্বয়,
সরকারে থাকলেও আপনারা এসিতে ঘুমান, বুলেট প্রুফ গাড়িতে ঘোরেন, ফল-ফ্রুট খান, আবার বিরোধী দলে থাকলেও একই কথা।
কিন্তু মাঝখানে আমরা ম্যাংগো পিপল কি ভাবে বেঁচে আছি, কি খেয়ে বেঁচে আছি আপনারা কি জানেন?
আপনাদের মাণ-অভিমান, হিংসা-বিদ্বেষ, ক্ষমতার লড়াই এর শিকার আমরা কেন হবো??
৫ বছর পর পর আপনাদের ছাত্রলীগ আর ছাত্রদলের স্বেচ্ছাচার দেখতে হয় আমাদের। হলদখল, টেন্ডারবাজী, হত্যা, গোলাগুলি, চাঁদাবাজি এগুলোর যেন প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে! কখন থামবে এ প্রতিযোগীতা আমরা কি জানতে পারি?
আপনাদেরকে একসাথে দেখলে তো ভালোই লাগে
কিন্তু আপনার অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকলেই আমরা পড়ি বিপদে
আমরা ম্যাংগো পিপলের কোন মূল্য আপনাদের কাছে নাই এটা নিশ্চিত। দোহাই আপনাদের, আপনারা ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে আর খেলবেন না। আমাদেরকে একটু শান্তি দেন। কারণ শুনেছি আপনারা জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করেন, নাকি সেটা মিথ্যা? আর যদি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন তাহলে অবশ্য কোন আবদার নাই।
যা করছেন করতে থাকেন....আমরা তো ম্যাংগো পিপল, আমাদের কথার কোন মূল্য আছে নাকি! হাহ্! হুদাই প্যাচাল পাড়ি!! ক্ষমাপ্র্রার্থি ম্যাডামদ্বয়, ক্ষমা প্রার্থী!
[ কোন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করলে ডিলিট করে দিব ] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।