১৯৩৯ থেকে শুরু হয়ে ১৯৪৫ সাল সাল পর্যন্ত চলা ২য় বিশ্বযুদ্ধে মারা যায় ৬০ মিলিয়ন মানুষ,আহত হয় অগণিত হতভাগ্য মানুষ। ২য় বিশ্ব যুদ্ধের সবথেকে বড়কিছু রক্তক্ষয়ী যুদ্ধগুলি হল :
Battle of Monte Cassino, 17 January–18 May 1944: 185,000 casualties
১৯৪৪ সালের প্রথম দিকে মিত্র বাহিনী এবং জার্মান-ইতালির যৌথ বাহিনী শুরু করে কঠিন এক সংঘর্ষ,মিত্র বাহিনীর টার্গেট ছিল দক্ষিণ ইটালি থেকে শুরু হয়ে জার্মান পর্যন্ত ফ্রন্ট লাইন যা Gustav Line নামে পরিচিত ছিল সেটা দখল ও রোমে নিজেদের পতাকা উড়ানো। ১৪০০ বছরের পুরান জার্মান ডিফেন্স লাইনের মধ্যভাগ Monte Cassinoতে শুরু হয় প্রানপন যুদ্ধ,Monte Cassinoর যুদ্ধ ৪ অংশে শেষ হয় যা জানুয়ারি,ফেব্রুয়ারি,মার্চ এবং মে মাসে বিস্তৃত ছিল। মে মাসে মিত্র বাহিনী দখল করে রোম,কিন্তু গুনতে হয় চড়া মাসুল। ২ পক্ষের হতাহত হয় ১,২৫,০০০ জন,কারো কারো মতে সেটা ছিল ১,৮৫,০০০ জন।
Battle of the Bulge, 16 December 1944–25 January 1945: 186,369 casualties
ব্রিটিশদের বলা Bulge Battle, যেখানে জার্মানরা গুড়িয়ে দিয়েছিল মিত্র বাহিনীর শক্ত ঘাটি। জার্মানরা ২টা কারনে এখানে মরন কামড় দিয়েছিল,প্রথম কারণ ছিল Antwerp দখল আর ২য় কারণ ছিল ঐ অঞ্চল মানে বেলজিয়াম,ফ্রান্স আর লুক্সেমবার্গের বনাঞ্চলটা নিজেদের দখল রাখা। যুদ্ধটা প্রথমে জার্মানদের পক্ষে থাকলেও বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি দখলাঞ্ছল,কারণ ছিল জার্মানদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস,সময়মত রসদ সরবরাহ না পাওয়া আর আবহাওয়ার আগাম রূপ পরিবর্তন। আমেরিকা এখানে নিয়োগ করে প্রায় ৮,৮৪,০০০ সেনা যা ছিল আমেরিকার সবথেকে বড় সৈন্য সমাগম পুরা ২য় বিশ্ব যুদ্ধে। মিত্রবাহিনির হাতছাড়া থেকে আবার পুনরুদ্ধার পর্যন্ত দুই পক্ষের হতাহত হয় প্রায় ১,৮৬,৩৬৯ জন।
Battle of Kursk, 5 July–23 August 1943: 257,125–388,000 casualties
Eastern Front এ সোভিয়েত বাহিনীর সাথে জার্মানদের Battle of Kursk এ ঘটে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সবথেকে বড় ট্যাংকের যুদ্ধ। সোভিয়েত বাহিনী সেখানে তৈরি করে বিশাল মাইনফিল্ড সাথে এন্টি ট্যাংক কামান আর ১৫৫ মাইল ব্যাপী সৈন্যের বিশাল বহর নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে নাজীদের উপর। ৫ই জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২৩শে আগস্ট পর্যন্ত চলা যুদ্ধে সোভিয়েত বাহিনীর হিসেবে তারা জার্মানদের ৫,০০,০০০ সৈন্যকে হত্যা এবং জীবিত ধরে, কিন্তু অন্যান্য ইতিহাসবিদদের মতে সেখানে দুই পক্ষের ১,২৫০০০-৩,৮৮০০০ জন হতাহত হয়। যুদ্ধ শেষে সোভিয়েত বাহিনী পুরা ইউক্রেন নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়,যেটা ছিল ২য় বিশ্ব যুদ্ধের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট।
Battle of Luzon, 9 January–15 August 1945: 332,330–345,330 casualties
১৯৪২ সালে জাপানী বাহিনী দখলে নেয় ফিলিপাইনের বড় দ্বীপ Luzon,দ্বিপটিতে আমেরিকা পাল্টা দখলের চেষ্টা শুরু করে ১৯৪৫এর জানুয়ারির প্রথম দিকে।
এই যুদ্ধে জাপান ব্যবহার করে খুবই নামকরা kamikaze pilots,কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। আগস্ট এর মাঝামাঝি শেষ হওয়া যুদ্ধে দুই পক্ষের হতাহত হয় ৩২০-৩৪৫,৩৩০ জন, যার বেশির ভাগটাই ছিল জাপানের।
Battle of Moscow, 2 October 1941–7 January 1942: 1,000,000 casualties
যুদ্ধের শুরু থেকে রাশিয়া তাদের রাজধানীকে আগলিয়ে রেখেছিল যক্ষের ধনের মত,যদিও হিটলার বিশ্বাস করত,যদি একবার সে মস্কো দখল করতে পারে তবে সোভিয়েত বাহিনী যুদ্ধ থেকে সরে আসবে। আর হিটলারের এই চিন্তা থেকে জার্মানরা মস্কো আক্রমণ করে ১৯৪১ এর অক্টোবরে,দুই পক্ষ সমান তালে লড়ছিল,কিন্তু রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতি হতে থাকে বেশী। জার্মানরা শীতের সময়ে পড়ে বিপদে কারণ তাপমাত্রা চলে যায় মাইনাস ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে, একে তো চরম ঠাণ্ডা আর ঠাণ্ডায় রসদ পৌঁছান ছিল আরও সমস্যার।
ফলে ১৯৪২ সালে জার্মানরা চলে যায় সেখান থেকে,কিন্তু নিয়ে যায় ১৫৫,০০০ জনের হতাহতের বোঝা। যদিও রাশিয়ানদের হতাহত হয় ৬৫০,০০০জন। তবে ইতিহাসবিদদের মতে এখানে দুই পক্ষের হতাহত হয় প্রায় ১,০০০,০০০ জন।
Battle of Berlin, 16 April–2 May 1945: 1,298,745 casualties
Battle of Berlin,ইউরোপের শেষ যুদ্ধ যেখানে পতন হয় জার্মান বাহিনীর আর আত্মহত্যা করে হিটলার। মিত্র বাহিনী যার অধিকাংশ ছিল সোভিয়েত সেনা ঢুকে পড়ে বার্লিনের ৩৫ মাইলের ভিতরে,পূর্ব,দক্ষিন আর উত্তর দিক থেকে একযোগে আক্রমণ করে জার্মানদের।
১৯৪৫ সালের ৩০শে এপ্রিল পতন ঘটে জার্মানদের,২য় বিশ্বযুদ্ধের শেষের শুরু হয় সেখান থেকে,এই যুদ্ধে দুই পক্ষের হতাহত হয় ১২,৯৮,৭৪৫ জন।
Battle of Stalingrad, 23 August 1942–2 February 1943: 1,250,000–1,798,619 casualties
২য় বিশ্বযুদ্ধের সবথেকে বড় হতাহতের ঘটনা ঘটে Battle of Stalingrad এ,দুই পক্ষের হতাহত হয় ১২,৫০,০০০-১৭,৯৮,৬১৯ জন। যার মধ্যে রাশিয়ানদের প্রায় ৮,০০,০০০ থেকে ১০,০০,০০০ জন। বাকিটা জার্মান,রোমানিয়ান আর ইটালির। তবে জার্মানরা সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কারণ তাদের সবথেকে সেরা সৈন্য বাহিনী হারায় তারা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।