একদিন জন্মের চিৎকারে পৃথিবীতে এসেছিলাম। আবার একদিন কিছু চিৎকারের মাঝ দিয়েই চলে যাব। ছেলেটির অনার্স পরীক্ষা শেষ। গ্রাজুয়েট হওয়ার পর নিশ্চয়ই তার কিছু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার ছিল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র যুবায়ের।
৩৭তম ব্যাচ। থাকতো বঙ্গবন্ধু হলে। গতকাল ছিল তার শেষ পরীক্ষা। অনার্স শেষ করার পরই ঘটনা ঘটল। ছাত্র রাজনীতির (নাকি শিক্ষক রাজনীতির) শিকার হলো যুবায়ের।
তারই সহপাঠীরা পিটিয়ে মেরে ফেলল!! গতকাল পরীক্ষা থেকে বের হওয়ার পর ইচ্ছেমতো পেটানো হয়েছে। আজ সকালে সে মারা গেছে।
জাহাঙ্গীরনগরে মৃত্যূর ঘটনা খুব বেশি নেই। অন্তত পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা তো নেই বললেই চলে। সেই ১৯৮৯ সালে একজনকে হত্যা করা হয়েছিল।
আবার ২০১২ সালে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনাটিকে ছোট করে দেখা হলে ভুলই করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কেমন ভুল?
আমার এক বন্ধু একবার বলেছিল, ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে বলেই আমি যা ইচ্ছে তাই করতে পারি। কিন্তু ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে বলেই আমি কাউকে হত্যা করতে পারি না। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন এই ঘটনাই ঘটল।
ব্যক্তি স্বাধীনতার জোরেই একটি ছেলেটি হত্যা করা হলো। কেন? (যতটুকু শুনলাম) যুবায়ের জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারী গ্রুপের সমর্থক ছিল। আর যারা মারল (?) তারা কোন গ্রুপের থাকতে পারে তা কেবল অনুমানের ব্যাপার।
একটি ছেলেকে হত্যা করার অধিকার (কিংবা পেটানোর অধিকার) কার মাধ্যমে আসার সম্ভব? যারা হত্যাকারী কেবল তাদের বিচার চেয়েই আমরা থামতে চাই না। বরং যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিচারও আমাদের কাম্য।
কি ধরণের বিচার? এমন বিচার, যা অনাগত কালে মানুষের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। যদি তা না হয়, তবে বুঝতে হবে, বাংলাদেশ বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। একটি আধুনিক রাষ্ট্রের কাঠামোর মাঝে থাকার তার কোন অধিকার নেই। আর বিশ্ববিদ্যালয়? এখানে যদি হত্যার মতো বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটতেই থাকে, তবে সরকারের কাছে অনুরোধ, এমন বিশ্ববিদ্যালয় রাখবেন না। আপনার ছেলে মেয়েরাও হত্যার শিকার হতে পারে।
অন্তত নিজেদের কথা ভেবে বন্ধ করে দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়।
আমি শক্ত বিচার চাইছি। এটি শান্তিপূর্ণ উপায়। যদি এর বিচার না হয়, তবে আমার চেয়ে অভদ্র ছাত্রের অভাব নেই। যারা কেবল একটি ফিচার লিখেই নিজেদের দায়িত্ব শেষ করতে প্রস্তুত।
বি. দ্র. সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটে যে ধরণের ঘটনা গুলো ঘটছে, তার বিচার না হওয়াটাই হয়ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনার কারণ। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছেই এর বিচার চাইছি। যদি বিচার করা না হয়, তবে আমরা জনগণের কাছেই এর বিচার চাইবো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।