মুক্তমন। █▓▓▓▒▒▒░░░░
দেহত্যাগের পূর্বে...
১১ চৈত্র, ১৪১৯ মোতাবেক ২৫ মার্চ, ২০১৩। শমশেরাবাদ।
আমার একটা অভ্যাস। বদভ্যাসও হতে পারে।
তবে এর পার্শপ্রতিক্রিয়া রয়েছে অবশ্যই। আর হ্যাঁ, সাইড এফেক্ট একমাত্র ভালো জিনিসেরই হয়ে থাকে। যাই হোক সেই অভ্যাসটি হলো- আমার নিজের ব্যাপারে বেশ ঢাক-ঢোল পিটিয়ে মানুষকে জানান দেয়া। এতে করে নিজেকে স্বচ্ছ রাখা যায় বলে আমার বিশ্বাস। এই তো সেদিন।
কী একটা কারণে যেনো একটা কবিতা (কেউ কেউ বলেছে তাই) পোস্ট করেছিলাম। ওহ, হ্যাঁ! মনে পড়েছে। একটা গুরুতর সমস্যায় পড়ে নেট ব্যবহার কিছুদিন বন্ধ রেখেছিলাম। ব্লগ-কে বিরতীর একসেস্ টোকেন দেখিয়েছিলাম। ইয়ে মানে, ব্লগ থেমে থাকেনি।
বরং চলেছে আবহনীয়া নদীর স্রোতের ন্যয় ধারা অবিরাম। তবে আমিই বোধ হয় একটু থমকে গিয়েছিলাম। হুমম, ঠিক তাই। সেই সমস্যাটির কিছুটা সমাধান হয়েছে বটে। পুরোপুরি নয়।
কিন্তু একটু পর যে কথাটা বলতে যাচ্ছি, সেটা বলতে অনেক কষ্টই হচ্ছে। আমার কলম যেনো বার বার থেমে যেতে চাইছে। বিষাদমাখা এই কথাটা কাগজের পাতায় বসতেই চাইছেনা। আর সেটা হলো- “ইখতামিন নামের কেউ একজন। সে নাকি দেহ ত্যাগ করেছে! বড়ই অদ্ভুত আর খুবই নির্মম ভাবে।
” প্রতিদিনের মতোই তার একশত পঞ্চাশ তলা বিশিষ্ট আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিংয়ের ছাদে দাঁড়িয়ে পড়ন্ত বিকেলের নির্মল বাতাস উপভোগ করছিল। হঠাৎ দেখে- শূন্য থেকে কিছুটা হাওয়া জমাট বেঁধে গেল। ক্রমেই জিনিসটার আকৃতি ও রঙে দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে লাগল। সে ভুলেই গেল- সে একটা ছাদে আছে। ক্যাচ ধরার জন্য তড়িৎ লম্ফ ছুটাল।
এক ঝটকায় বস্তুটা ধরতে গেল। পারল ঠিকই। কিন্তু সাথে সাথেই ৯০০ ফুট নিচে ধপাস করে পড়ল। আর থপ্ করে সেই জিনিসটা পূণরায় বাতাসে মিলিয়ে হারিয়ে গেল। ইখতামিনের নিথর দেহটা এখন ভূলুন্ঠিত।
তার ব্যথিত আত্মার বুঝতে আর বাকী রইল না যে, সেই বস্তুটা আসলে একটা আত্মা ছিল। যা অত্যন্ত হিংসাতুর ও ভয়ানক দুষ্কৃতিকারক।
সমাধির পর...
২৬ মার্চ, ২০১৩।
বসন্তের ঠিক মাঝ সময়। না, ঠিক তা নয়।
আরও কিছুদিন পেরিয়ে গেছে। চৈত্রের এই সময়টাকে বলা হয় বসন্তের ভরা যৌবন। অন্য সময়ের তুলনায় এখন পুকুরের পানি অন্তত আট ফুট নিচে নেমে যায়। আমার সামনের বিস্তৃর্ণ জায়গাটুকু চেয়ে চেয়ে দেখছি। যদিও অবাক হবার কিছুই নেই।
মাঠের পর মাঠ মাটি শুকিয়ে আছে। তাতে লম্বা-লম্বা চিড় ধরেছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে কোনও এক সময় ভূ-কম্পনের প্রলয়ংকরী প্রকোপে পড়ে এমন ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। অনেক গভীর ভাবে। অথচ এই মাঠগুলোই শ্রাবণের বর্ষণমূখর দিনগুলোতে কল্ কল্ ছল্ ছল্ থৈ-থৈ পানিতে যেন অকুল বিলের মায়াবী চিত্রে ভেসে ওঠে।
কিন্তু এখন সেই মাঠগুলোই শুকিয়ে খাঁ-খাঁ করছে। আমি বসে-বসে শুধু তাকিয়েই আছি। ছোট্ট একটি উদ্যানে। কারণ, দিনের বেলায় আমার নড়াচড়া করার কোনও ক্ষমতা নেই। যথাসম্ভব সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত।
আমার চির অমৃত ও অমর আত্মা কেবল ঘুরঘুর করে বেড়ায় আশপাশের মাঠগুলো সহ দূর দূরান্তের যেখানে খুশি সেখানেই। সূর্যের যে অসহ্য তাপদাহ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে টিকে থাকা-ই বড় দায়। কেনো যে এমন হলো কিছুই বুঝতে পারছিনা। আগুন এবং উষ্ণতা এই দুইটা আমার চির শত্রু ধরে নিতে পারি। হেতু একটাই, আমার নব জীবনের শুরু হয়েছে অসীম শীতলতার মধ্য দিয়ে।
হঠাৎ কানের ধারেই কয়েকটা ঝিঁঝি পোকা কর্কশ স্বরে চিৎকার করতে লাগল। কান ঝালাপালা হবার উপক্রম। ওহ, অসহ্য গরমের এই ফুটন্ত তেলের কড়াইয়ের তলে কেউ বোধ হয় একমুঠো তুস ছড়িয়ে দিয়ে আমার বিরক্তির আগুনে ঘি ঢেলে তা আরও দ্বিগুণ করে দিয়ে গেল।
উৎসর্গঃ
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল মানব-মানবীদের; পাক হানাদার বাহিনী যাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছিল; অথবা যারা শহীদ হয়েছিল। যাদের সাগরসম রক্ত ও অসীম ত্যাগের বিনিময়ে সুন্দর একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এই বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা।
তাদের চরণে...
“কাউন্ট ড্রাকুলার ডায়েরী থেকে” ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।