শুভ বাংলাদেশের কোন এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থেকে মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করেছে। থাকা-খাওয়া-পড়াশোনা সব মিলিয়ে অনেক টাকা যায়। কিন্তু তার বাবা যথেষ্ট বিত্তশালী বলে সেটি কোন সমস্যা হিসেবে গণ্য হয় নি।
সকাল ঠিক ৭ টা ১৩ বাজে।
আর সাত মিনিট পরই শুভর মোবাইলে এলার্ম বাজবে। কিন্তু এলার্মের আগেই তার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। হুড়মুড় করে উঠে সে দৌড় লাগাল হোস্টেলের টয়লেটের দিকে। এটুকু সময়ও সে সহ্য করতে পারছে না। মনে হল দৌড়ানো অবস্থাতেই ড্রেস নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।
ছোট কাজ করার জায়গা অনেকগুলো আছে। কিন্তু ‘বড় কাজ’ সারানোর জন্য আছে মাত্র ৩ টি। সেই তিনটির দুটোর দরজা ভেতর থেকে বন্ধ – অর্থাৎ ভেতরে মানুষ কাজ সারাচ্ছে! ঘণ্টায় ১০০ মাইল গতিতে সে তৃতীয়টিতে ঢুকে গেল।
‘ভোগেই সুখ নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ’-শুভ অজস্রবার এই প্রবাদটি শুনেছে। এমনকি ক্লাস সিক্স-সেভেনে বাংলা পরীক্ষায় কয়েকবার এর ভাবও সম্প্রসারণ করেছিল।
টয়লেটে বসেই সে ঠিক করেছে, এই মহান প্রবাদের জন্মদাতা যদি বেঁচে থাকেন তবে অবশ্যই সে সেমিস্টারের বন্ধে গিয়ে তাঁকে কদমবুচি করে আসবে। হ্যাঁ, করবেই।
ঠিক এই সময় হাতের ডান পাশে একটি লেখায় তার চোখ আটকে গেল। সেখানে লেখা-
‘এই বাথরুমে সমস্যা আছে। কর্মসাধনের পূর্বে পানি আছে কি না দেখে নিন।
- প্রচারে ভুক্তভোগী। ’
শুভ সাথে সাথে পানির টেপ ছাড়ল। কিন্তু তা দিয়ে পানি বা অন্য কোন তরল পড়ল না। নল বরং শুষ্ক মৌসুমের নদীর মত হয়ে আছে।
ঘুম থেকে উঠায় শুভর শরীর গরম ছিল।
সেই শরীর সাথে সাথে ঠাণ্ডা হয়ে গেল। তার কাছে কোন টিস্যুও নেই। কী হবে এখন তা ভেবে ঘৃণা, লজ্জা ও তীব্র বিরক্তি লাগল তার। সে আল্লাহকে ডেকেছিল মিনিট দুয়েক। কিন্তু বাথরুম অপবিত্র স্থান বলেই হয়ত সেখানে সৃষ্টিকর্তার কৃপা পৌছায় নি।
হতাশ হয়ে পাঁচ মিনিট বসে থাকল সে।
৮ টায় তার ক্লাস। এভাবে তো হবে না। শেষমেষ সে বাথরুমের ভেতর থেকে ডাকতে লাগল, ভাই, কেউ আছেন? বদনায় পানি নিয়ে দরজার সামনে রাখুন! এখানে পানি নেই!
আল্লাহকে দুই মিনিট ডাকার ফলেই বোধহয় সহজে কাজ হয়ে গেল। একজন তার ডাকে বশবর্তী হয়ে পানি ভর্তি বদনা দরজার সামনে রেখে গেল।
শুভ একটু পর দরজা যত কম পারা যায় খুলে তা ভেতরে ঢুকালো!
বের হয়ে রুম থেকে মার্কার এনে শুভ আগের ভুক্তভোগীর প্রচারকৃত লেখা বড় করে বাথরুমের দরজায় লিখে দিল। নিজের মত বিপদে আর কাউকে পড়তে হবে না ভেবে হৃষ্ট চিত্তে দিন শুরু করল।
___________________________________________________
Sazib
25.12.11 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।