আমি অনেক ছোট একটা মানুষ। ফোটোগ্রাফি নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক দিনের। সেই আগ্রহটা বাস্তবে রূপ দেয়ার সুযোগ আসে বছর দেড়েক আগে ক্যামেরাটা যখন হাতে পেলাম তখন। ইচ্ছা ছিল আমার তোলা ছবিগুলো নিয়ে একটা ছবি ব্লগ লেখার। আজ লিখেই ফেললাম।
পোস্টটা নিয়মিত আপডেট করার ইচ্ছা আছে।
ছবিগুলো সবই প্যানাসনিক লুমিক্স DMC-FP1 মডেলের ক্যামেরায় তোলা।
এই ছবিটা তোলা আমাদের ক্যাম্পাস থেকে কয়েক কিলো দূরে একটা হাওড় টাইপের জায়গা আছে, সেখানে। দুপুরবেলা একদিন গেলাম ছবি তোলার খায়েশ নিয়ে। দেখি এই পোলাপানগুলো দাপাদাপি করছে পানিতে।
আর কি লাগে, শটাশট খটাখট!
এই ছবিটাও তোলা আগের জায়গা থেকেই, বুঝতেই পারছেন।
গাছপালার ভেতর একটা ঝাড়ু নিয়ে গাছের পাতা গুছিয়ে একজায়গায় স্তুপ করছিল ছেলেটা, বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চুলো ধরানর সরঞ্জাম। ডেকে বললাম, এইখান থেকে ওইখানে একটা দৌড় দিয়ে যা দেখি! বলামাত্রই দৌড়, শাটার টেপার সময় ও পেলাম না!
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বসে ছিলাম ছয় ঘন্টা লেট হয়ে যাওয়া ট্রেনের জন্যে। সময় কাটানোর জন্যে ক্যামেরা বের করে খুটখাট শুরু করলাম। ওই দিন তোলা ছবি গুলোর ভেতর এটা আমার একটা প্রিয় ছবি।
ট্রেনে করে আসছিলাম যমুনা সেতুর উপর দিয়ে। তখন এই ছবিটা তোলা। অপূর্ব এক দৃশ্য দেখা যায় এই সময়ে, যখন শীতকাল আসি আসি করছে, নদীর পানি কমে গেছে। বিশাল চর জাগে, তার উপরে যতদূর চোখ যায় ফসলের ক্ষেত, মাঝে মাঝে শুধু ছোট্ট দুই একটা ঝুপড়ি ঘর। নিজেকে কেন জানি খুব ক্ষুদ্র মনে হচ্ছিল ওইসময়।
রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এই মাশরুমগুলো দেখি। ক্ষুদ্র কোন জিনিসের ভিতরেও যে সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকতে পারে, আমরা বোধয় সেটা মানতে চাই না, বা পারি না। আমি জিনিস্টা সবাইকে দেখানোর চেস্টা করেছি।
আমার ফ্লিকারে এই ছবিটার ক্যাপশন দিয়েছি To Catch a Droplet of Sunshine. বাংলায় কি হতে পারে? সূর্যপিয়াস?
এই ছবিটা তোলা যখন ধান কাটার সময়, তখন। একটু কমন ছবি হতে পারে, অনেকেই এরকম ছবি তোলে।
তারপরেও আমার কাছে ছবিটা ভাল লাগে।
আরেকটা উদাহারন, ছোট্ট একটা জিনিস কত সুন্দর হতে পারে।
আমাদের হলের পাশে যে মাঠ, সেখানে মাঝে মাঝে আমরা বিকেলে ঘুরতে যাই। একদিন বিকেলে, সূর্যাস্তের রূপ দেখে অবাক হয়ে গেলাম, অসাধারন! ছবিতে তার দশ ভাগের এক ভাগ সৌন্দর্যও ধরা পড়েনি!
এই ছবিটা তোলা মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে। ক্যামেরা হাতে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় ছবি তোলার আশায় ঘুরছি, হঠাত দেখলাম পুকুরে এই দুই পিচ্চি ইচ্ছেমত দাপাদাপি করছে।
এগিয়ে গিয়ে ক্যামেরা তাক করলাম। কিন্তু কোনোমতে একটা ছবি তুলতেই নাংগু পিচ্চিটা পানিতে ঝাপ দিল, কোনভাবেই আমাকে তার নাঙ্গু অবস্থার ছবি তুলতে দিতে রাজি নয়। পানির নিচ থেকে খানিক পরপর মাথা তোলে, আমি আছি কিনা দেখে নিয়েই আবার ডুব দেয়। কি আর করা, ছবি তোলার আশা অপুর্ন রেখেই সে স্থান ত্যাগ করতে হল!
ছবি তোলার স্থান মুন্সীগঞ্জ। আমার এ পর্যন্ত তোলা সবচেয়ে প্রিয় নেচার ফটোগুলোর ভিতর একটা।
এই ছবির কি বর্ননা দেব? বরং কয়েক লাইন কবিতা শুনুন।
মৃত্যুরে কে মনে রাখে?- কির্তীনাশা খুঁড়ে খুঁড়ে চলে বারো মাস
নতুন ডাঙ্গার দিকে- পিছনের অবিরল মৃত চর বিনা
দিন তার কেটে যায়- শুকতারা নিভে গেলে কাঁদে কি আকাশ?
জীবনানন্দ দাশ।
বার্ধক্য, অবশ্যম্ভাবী একটা জিনিস। সূর্য ও বৃদ্ধ, দুজনেই নিজের জীবনের সায়াহ্নে উপস্থিত। একটা সিম্বলিক শট নেয়ার চেষ্টা করেছি।
আগের ছবিটা যেখানে তোলা, এটাও সেখানেই। তবে এটার বক্তব্য সম্পূর্ণ অন্যরকম। সারাদিনের শেষে এই ছেলেগুলো নেমেছিল পানিতে, ক্লান্তি ধুয়ে ফেলতে। এই নদীর নাম দুধলী। স্থান গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ।
সাদাকালো সবসময়েই আমার প্রিয়, ফটোগ্রাফির মাধ্যম হিসেবে। এই পোস্টে সাদাকালো ছবি আর দিলাম না, কারন আমার মনে হয় এই বিশেষ ক্ষেত্রটায় আমি এখনও তেমন গুছিয়ে উঠতে পারি নি। এই ছবিটাও দিচ্ছি অনেক ভয়ে ভয়ে!
ছবিগুলো দেখার জন্যে ধন্যবাদ। যেকোনো পরামর্শ সাদরে গৃহিত হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।