আমাদের প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা অর্জনে ভারত যে ভূমিকা পালন করেছে- তার জন্য আমরা তাদের হৃদয়ে ধারন করি। তাদের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।
কিন্তু ভারত কি ঋণ হিসাবে আমাদের সাহায্য করেছে? এবং এই ঋণ কি আমরা শোধ করবো আমাদের কস্টার্জিত স্বাধীনতাকে তার কাছে বন্ধক রেখে?
স্বাধীনতা উওর আমরা ভারতকে দিয়েছি অনেক। যেমন- বাংলাদেশের বাজার,একচেটিয়া ব্যবসার সূযোগ,আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে অকুন্ঠ সমর্থন,দিয়েছি নৌ-সমুদ্র বন্দর,করিডর (যাতে ভারতের মূল ভূখন্ডের সাথে আসাম,ত্রিপুরার দ্রুত যোগাযোগ হয় এবং সমগ্র ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি একসাথে হয়। ),বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসকারীদের ভারতের কাছে হস্তান্তর ইত্যাদি।
তার বিনিময়ে আমরা কিছুই চাইনি। আমরা চেয়েছি তাই যা অ্ামাদের প্রাপ্য। আমাদের ন্যায্য অধিকার গুলো হলো:আর্ন্তজাতিক নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা,সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ বসবাস,আমাদের নিজস্ব সম্পদের উপর আমাদের পূর্ণ অধিকার, প্রতিযোগীতা মূলক বিশ্ববাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগীতা,অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের প্রচেষ্টাকে বিঘিœত না করা।
দু:খের বিষয় উন্নয়নের প্রতিটি বিষয়ে ভারত সহযোগিতা তো দূরের কথা, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করছে। যেমন-গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিলো তা কতখানি কাযর্ কর হয়েছে সেটি বোঝা যায় ঐ অঞ্চলে গেলে।
উপরের ব্রীজটি এখন স্বাক্ষ্য দেয় যে এক সময় এর নীচ দিয়ে নদী বয়ে যেতো। তিস্তার ভবিষ্যত ও পদ্মার মতোই হবে এ কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে টিপাইমুখ বাধ নির্মান হলে। তিস্তা নিয়ে ভারত যা করলো-তা সহজ ভাবে বিশ্লেষণ করলে দুটি বিষয় পাওয়া যায়, হয় ভারত আমাদের সাথে মিথ্যাচার করেছে নতুবা ভারতের প্রধান মন্ত্রী একজন অযোগ্য ব্যাক্তি-যিনি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন নি।
তিনি আরেকটি মিথ্যা কথা বলেছেন। সীমান্তের কাটা তারের বেড়ার উপর ফালানির মৃত দেহের ছবি যখন বিশ্ব বিবেক কে আলোড়িত করেছিলো তখন ভারত সরকার ভালো মানুষের মূখোশ পরে জানিয়েছিলো সীমান্তে হত্যা বšধ করবে আর পর্যায়ক্রমে সীমান্তরক্ষীদের হাতে দেবে রাবার বুলেট।
তারপরেও থামেনি হত্যা। আর কতো ...?
আমাদের রাষ্ট্রীয় কারখানাগুলো আজ ধ্বংশের মুখে। তার কারণ আমাদের প্রাণের বন্ধু-রাষ্ট্র ভারত। বাংলাদেশ এক পাট শিল্পের উপর ভর করেই অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে পারতো। সে জায়গায় বাংলাদেশ সরকারকে বিশাল অংকের টাকা ভর্তুকী দিতে হয়।
পাটজাত দ্রব্যের যে চাহিদা বিশ্ব-বাজারে আছে তার যোগান ভারতের পক্ষে দেয়া সম্ভব না কেননা তারা যা উৎপাদন করতে পারে তাতে স্থানীয় চাহিদাই মেটাতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ রপ্তানী করুক-এটা তারা চায় না। তারা বাংলাদেশ থেকে কম মূল্যে পাট কিনে বেশী মূল্যে রপ্তানী করার জন্য পরোক্ষ ভাবে চাপ সৃষ্টি করছে।
ভারত সরকারের আরেকটি মিথ্যা আশ্বাসের কথা বলে ভারতের বন্ধুত্বের শেষ নমুনা দেয়া যাক। ছিটমহল নিয়ে সকল সমস্যার সমাধান হবে-এই ছিলো আশ্বাস।
বাংলাদেশের মধ্যে ভারতের যে পরিমাণ জায়গা আছে তার চাইতে বেশী আমাদের জায়গা আছে ভারতের মধ্যে। কাজেই এ সমাধান ভারত কররে না। এর প্রমানও পাওয়া গেছে এবারের লোকসভায় তারা এই বিল উত্থাপন-ই করে নি।
এবার আসা যাক আমাদের সরকারের সমালোচনায়। ভারত আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করে কি আমাদের তাদের দাসে পরিনত করে ফেলেছে?সরকারে এমন নতজানু মনোভাব জাতির পিতার আদর্শ কে ভূলুন্ঠিত করে।
স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর আজ মনে প্রশ্ন জাগে-সত্যিকার অর্থে এই স্বাধীনতায় লাভ হয়েছে কার? আমি নিশ্চিত ভারতের এমন স্বেচ্ছাচারী আগ্রাসী মনোভাবের কথা বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারলে তিনি ভারতের সাহায্য গ্রহণ করতেন না। আমরা স্বাধীনতা হয় তো নয় মাসে পেতাম না, নয় বছরে তো পেতাম। ত্রিশ লক্ষ ভাই বোন শহীদ হয়েছে সেই জায়গায় তিন কোটি না হয় শহীদ হতাম। কারণ আমরা স্বাধীনতার জন্য মরতে শিখেছিলাম,আমাদের স্নাধীনতা দিতেই হতো পাকিস্তানীদের।
একদিন আসবে যেদিন আমরা সকল পরাধীনতা শৃঙ্খল ছিন্ন করবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।