আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানবাধিকার কিছু অগ্রগতি হলেও অবস্থা ছিলো উদ্বেগজনক: আসক

গত বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেছেন, কিছুটা অগ্রগতি হলেও দেশে সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিলো উদ্বেগজনক। খ্রিস্টীয় নতুন বছরের প্রথম দিন রোববার গত বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে আইন-সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গণপিটুনিতে হত্যা এবং গুপ্তহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। আসক-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কিংবা তাদের হেফাজতে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে, গণপিটুনিতে মারা গেছে ১৩৪ জন, উত্ত্যক্ততার কারণে আত্মহত্যা করেছে ৩৩ জন এবং এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত হয়েছে ২৩ জন। এছাড়া রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের এবং সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক ৩৯ জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার পাশাপাশি ৬৪ জন আহত এবং ৩০ জন অপহৃত হয়েছেন বলে আসক জানায়।

নিখোঁজ বা গুপ্তহত্যা ২০১১ সালে অপরাধের নতুন প্রবণতা হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে আসকের পর্যবেক্ষণ। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং নির্যাতন বন্ধে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুলতানা কামাল বলেন, “যারা এসব ঘটাচ্ছে তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্র এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতো। ” আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পর্কে তার বক্তব্য- “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এখন পর্যন্ত তাদের পূর্বের ট্রেইন বজায় রেখে শক্তিশালী কিংবা প্রভাবশালীদের বাহিনী হিসাবে কাজ করছে। এ থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছে না। ” সীমান্ত বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যার জন্য ‘দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি’কে দায়ী করে তিনি বলেন, “সরকার এমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিতে পারেনি, যাতে ভারত এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

” জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা হলেও একে কার্যকর একটা প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন আসবের নির্বাহী পরিচালক। “কমিশন ৬৮ জন জনবলের প্রয়োজনীয়তা জানালেও সরকার এখন পর্যন্ত ২৮ জন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা ধরে নেবো, সরকারেরই রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই যেন তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারে,” বলেন তিনি। আসক এর মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বিডিআর জওয়ানদের বিচার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন প্রসঙ্গেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এছাড়া রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা দেওয়া, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, রাজনৈতিক বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও মামলা প্রত্যাহার এবং সারাদেশে ৩০৪ জন সাংবাদিকের ওপর নির্যাতনের বিষয়টিগুলোও উঠে আসে।

২০১১ সালে কারা হেফাজতে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে আসক বলছে, এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেশি। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে সুলতানা কামাল বলেন, দক্ষতা, যোগ্যতা দিয়ে ট্রাইব্যুনালকে আরো শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মানবাধিকার পরিস্থিতির মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আসক-এর সভাপতি ড. হামিদা হোসেন। পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন আসক এর তদন্ত ও তথ্য সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক নূর খান। View this link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.