লিমনের পক্ষে ও বিপক্ষে করা মামলা প্রত্যাহারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মধ্যস্থতার প্রস্তাবে তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি, আসক এবং ২০টি মানবাধিকার ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠান মানবাধিকার ফোরাম।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে বলেছে, লিমনের মামলা প্রত্যাহারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা মানবাধিকার-পরিপন্থী। এ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কি সরকার ও র্যাবের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে? তিনি বলেন, যে র্যাবের গুলিতে লিমন নির্মমভাবে পা হারিয়েছে, সেই র্যাবের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের পূর্বশর্ত হিসেবে ‘মধ্যস্থতা’র নামে লিমনের মায়ের করা মামলা প্রত্যাহরের জন্য সরকারি ও র্যাবের উদ্যোগে সহযোগিতার ভূমিকা পালন করছে কমিশন। কমিশন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার লাভে নাগরিকের সংবিধান-স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী কাজ করেছে বললে অত্যুক্তি হবে না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, মানবাধিকার কমিশন র্যাবের নিষ্ঠুরতার শিকার লিমন ও তার পরিবারের পরিবর্তে এ অপরাধের জন্য অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এতে লিমনের পরিবারের ওপর মানসিক চাপের সৃষ্টি করেছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও হতাশাব্যঞ্জক। এর ফলে কমিশনের ভাবমূর্তিই কেবল ক্ষুণ্ন হয়নি, একই সঙ্গে কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা, গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বিবৃতিতে জনগণের মৌলিক অধিকার-পরিপন্থী যেকোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে বলেছে, সংস্থাটি মনে করছে, লিমনের প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্মম ও নিষ্ঠুর আচরণ ও পরবর্তী সময়ে দায়ের করা মামলার কারণে এই দরিদ্র ছেলেটি ও তার পরিবারকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
আসক মনে করছে, এ ধরনের মধ্যস্থতার প্রস্তাব মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে গৃহীত ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সংস্থাটি আশা করে, লিমনের মানবাধিকার রক্ষা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে মানবাধিকার কমিশন সঠিক ভূমিকা গ্রহণ করবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতার প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার ফোরাম। এক বিজ্ঞপ্তিতে ফোরাম জানিয়েছে, ফোরামের সদস্যভুক্ত সংগঠনগুলো মনে করে, কোনো ফৌজদারি অপরাধের চলমান মামলা সমঝোতা করার এখতিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নেই। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের এই আহ্বান প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ফোরামটি।
একই সঙ্গে র্যাবের বিরুদ্ধে চলমান মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে লিমন হোসেনের প্রতি বিভিন্ন সময়ে কমিশন চেয়ারম্যানের প্রতিশ্রুত সহযোগিতার আশ্বাস বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।