আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুখী হতে হলে অপ্রয়োজনীয় অনেক কিছু ভূলে যেতে হয়

এতক্ষণ বেশ ভালোই ছিলেন। ফুরফুরে মেজাজে আপনার কোন কাজকেই আর কাজ মনে হচ্ছিলনা। হঠাৎ আপনার বাসায় এসে হাজির এক আত্মীয়া। অনেকদিন আপনার সাথে তার দেখা সাক্ষাত নেই। পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।

তাই দেখতে এলেন। শুনেছেন আপনি পাশেই থাকেন। দেখারও খুব ইচ্ছে হলো আর তাই চলেই এলেন। তাকে দেখামাত্রই আপনি মনেমনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। কিছু বলতে পারছেন না।

আবার সইতে ও পারছেন না। কারণটা তেমন কিছু না। খুবই সামান্য একটা ব্যাপার। তার বাবার সাথে আপনার বাবার একটু মন কষাকষি ছিল। তা-ও তা কখনো আপনি নিজের চোখে দেখেন নি।

মায়ের মুখে শুনেছেন। সেই থেকে মনে মনে তাদেরকে ঘৃণা করে আসছিলেন। এই হচ্ছে বাঙালি উদার মানবিকতার প্রতীক নারীদের অবস্থা। যে কোন কিছু সহজে ভূলতে চান না। যে কারণে সব কিছু পুষতে পুষতে একসময় তা সঞ্চয়ের এমন পর্যায়ে পড়ে যে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টে সমস্যা, হৃদয়ের রোগ হৃদরোগ সহ নানা রোগ থেকে তাদের নিস্তার ঘটে না।

কারণ মনের ভেতর অপ্রয়োজনীয় সঞ্চয় রাগ, ক্ষোভ, অভিমান। এগুলো কিছুই না। অনেকটা স্রেফ বিনোদনের মতই। যে কথা গুলো একজন আরেকজনের নিকট প্রকাশ করে নিজের মনের আভিজাত্যকে প্রকাশ করতে চান। মনে করেন -এটা জীবনের অবিচ্ছেদ্য সম্পত্তি।

একে আজীবন সম্পদের মত আগলে রাখতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে একই ইতিহাস বারবার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। এমন অনেকেই ভাবেন যে, আমার মায়ের সম্পত্তি নানার বাড়ি দেয়নি, তাই আমরাও উচিত শিক্ষা দিয়েছি। মামাতো বোনের বিয়েতে আমরা কেউই যাই নি। ভাবী বলেন, এরকম ঘটনা ঘটলে সেখানে কি..........................।

অনেকটা ইতিহাস বলা আর কি? দুই মাথা এক হলে যা হয় আর কি? এ ধরনের মানসিকতা শুধু পরিবারেই নয়। এর বিস্তার অনেকটা মাকড়সার জালের মত। যেখানেই যাবেন সেখানেই খুজে পাবেন। তা হতে পারে অফিসের বস সম্পর্কে বা অধীনস্ত কর্মী সম্পর্কে। কারও মুখে শুনছেন, নয়তো নিজেই আরেকজনের বদঅভ্যাসের সমালোচনা করছেন।

কখনোবা নিজের মনের ঝাল আরেকজনের জিহ্বায় লাগিয়ে তৃপ্ত বোধ করছেন। আসলে এতে আপনি কি তৃপ্ত? একটু নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন। অতিথির আগমনে আপনার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠার মানে আপনি নিজের পাড়ে নিজেই কুড়াল মারলেন। কারণটা খুবই স্বাভাবিক। যে জিনিসটাকে আপনি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছিলেন না তা ঘটলে আপনার জীবনে বিপরীত ঘটন্ওা ঘটতে পারতো।

ভাবছেন সে ও আপনার ক্ষতিই করবে। এটা স্রেফ ভূল ধারণা। বাস্তবে যার সম্পর্কে এ ধরনের ধারণা জন্মে, তার আসলে এর কোন প্রতিক্রিয়াই লক্ষ্য করা যায় না। কারণ সে জানেই না যে আপনি তার সম্পর্কে কি ভাবছেন? অথচ আপনি আচার আচরনে তাকে বোঝাতে চাচ্ছেন -মনে আছে ওই যে ওই দিনের সে ঘটনাটা? অনেকটা সাপের লেজে পা দিয়ে তার পরে বলা তুমি আমাকে কামড়ালে কেন? নিজে সুখী হতে চাইলে যা করবেন আর যা করবেন না: ১. কারও ওপর ক্ষোভ চেপে রাখবেন না। ক্ষোভকে ক্ষমায় পরিণত করুন।

লক্ষ্য করুন তা যেন পুনরায় আপনার কথা বা আচরণে প্রকাশ না পায়। ২. অভিমানে কাউকে দূরে ঠেলে দিবেন না। কারণ এতে প্রভুর সাথে ও আপনার দুরত্ব বাড়তে পারে। ৩. কাউকে হাস্যরসেও কখনো খোঁটা দিবেন না। ৪. কেউ যদি আপনাকে কষ্ট দেয় ভাববেন এ কষ্টের ভেতর-ও আনন্দ আছে।

তার জন্যে অন্যায় কামনা করবেন না। মনে মনে তার জন্যে দোয়া করুন। ৫. সহকর্মী বা বন্ধু হলে অবস্থা বুঝে তাকে আগে সালাম দিন। ভালোবাসার হাতটা বাড়িয়ে দিন; আগে যেভাবে প্রথম সাক্ষাতে আনন্দ পেতেন। যে কারণে দুজনার মাঝে সালাম(শান্তির বাণী) বিনিময়ে কৃপণতা তার কারণ আপনারা দুজনের কেউই দায়ী না-ও হতে পারেন।

রাজনীতির ভাষায় মনে করুন, এটা বন্ধুত্বের সুসম্পর্ক নষ্ট করার ষড়যন্ত্র। তার সাথে বন্ধুত্ব নষ্ট করতেই এটা কেউ করিয়েছে। প্রতিবন্ধকতার কারণগুলো না ভেবে সুন্দর সময়ের কথাগুলোকে ভাবুন। দেখবেন আপনি ফুরফুরে থাকবেন। ৬. তার জন্যে কল্যান কামনা করুন।

যেভাবে মন থেকে অভিশাপ আসে অভিশাপ না দিয়ে সেভাবেই কল্যান কামনা করুন। ৭. আমাকে মেরেছে, আমাকে বকেছে, আমার জিনিস কেড়ে নিয়েছে এ ধরনের অভিপ্রায় থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। নইলে দু:খ, ঘৃণা ছায়ার মত আপনার পেছনে লেগে থাকবে। ৮. কেউ যদি কিছু বলতে চায় তবে শুনুন। এতে সে মনের কষ্টকে কিছুটা ভূলে যদি নিজেকে হালকা অনুভব করে সে সুযোগ দিন।

(গীবতকে প্রশ্রয় দেবেন না)সে যেই হোক না কেন। কোনভাবেই তার কথাকে অবহেলা করবেন না। নইলে আপনার অস্থির চিত্ত-ও যখন কথা বলতে চাইবে তখন আপনার কথা শোনার মত মানুষ খুজে পাবেন না। ৯. আপনার প্রতি যে কারও আগমনে আনন্দিত হোন। তবে অহংকার করবেন না।

শুকরিয়া আদায় করুন। উপকার করতে না পারলে সুন্দর কথা বলে বিদায় দিন। তবে ক্ষতি করবেন না। ১০. কারও অপকারের বিনিময়ে উপকার করে অন্তরের কালিমা দূর করুন। এতে আপনার মন ভালো থাকবে।

কারণ মন ভালো তো দেহ ভালো। আপনি সুখী হবেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।