আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুখী

shamseerbd@yahoo.com
জীবনের স্বাভাবিক গতিময়তায় তার সাথে আমার যোগসূত্রের কোন সম্ভাবনায় ছিলনা। সে অসম্ভব কে সম্ভব করেছিল কিশোরীকাল অতিক্রম করার পরও তার মাঝে রয়ে যাওয়া কিশোরিসুলভ চপলতা- না এভাবে বললে ব্যাপারটা কেমন সাহিত্য পাতায় ছাপা হওয়া গল্পের লাইন মনে হবে, সহজ ভাষায় সেটা হবে তার নাই কাজ তো খৈ ভাজ কর্মকান্ডের কারনে। ব্যস্ত কর্মময় কোন একদিনে মোবাইলে পরপর বেশ কয়েকটি মিস কল আসার পর কল ব্যাক করার পর যখন মিস কল প্রদান কারীর কাছে যানতে চাইলাম বারবার মিস কল দিচ্ছেন কেন - তার সাবলীল জবাব এমনিতেই দিচ্ছি । একটা অপরিচিত নাম্বারে এভাবে মিস কল দিবেন না, ব্যাপারটা বিরক্তিকর - কথাটি সম্ভবত তার মাঝে ঋনাত্মক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। কিছুটা জেদ প্রকাশ সুলভ তার উত্তর আমার ইচ্ছা আমি মিসকল দিব, আপনার ইচ্ছা হলে আপনি কল করবেন, না হলে নাই ।

এমন করলে আমি কিন্তু কমপ্লেইন করে আপনার নাম্বারটা বন্ধ করার ব্যবস্হা করব। আপনার যা ইচ্ছা করেন। ব্যাপারটা সম্ভব নয় জেনেও বলে ফেললাম কারন তখন কাজের চাপ মাথায় ভর করে ছিল। খোশ গল্পের মুড ছিলনা। ফোনটা কেটে দেয়ার পর মনে হল তরুনীর আহবানে সাড়া দেবার মত পর্যাপ্ত সময় এখন না থাকলেও পরে কথা হবে বলে রেখে দিলেই হত।

তাহলে আবার কল করার একটা সুযোগ থাকত। আফটার অল আই এম ঠু ইয়াং টু সে নো টু এ উইমেন - বয়সটাতো এমনই। পরক্ষনে ভাবলাম শুধু শুধু ঝামেলায় জড়ানোর কোন মানে নাই, আমি যে নাম্বার ইউজ করি তা দিয়ে আমাকে আইডেন্টিফাই করা ডাল ভাতের মত সোজা। শেষ বিকালে হাতের কাজ শেষ করার তাড়াই বেশীক্ষন এই নিয়ে ভাবার অবকাশ পেলামনা । সদ্য তরুনী জীবনে প্রবেশ করা মেয়েটি তার কথা রাখল।

পরপর বেশ কয়েকটি মিসকল। ছুটির দিন হওয়াতে হাতে কোন কাজ নেই। অলস দুপুরে কল ব্যাক করলাম। হ্যালো বলেই নিজ থেকে তার পরিচয় দিল- আমি হ্যাপী। এই কলেজে অনার্স পড়ছি ।

আপনি কি করেন। আমি কি করি আপনি জানেন না !! তাহলে আমার নাম্বার পেলেন কৈ , কে দিল। তারও অলস সময়ে অরবিটারি ডায়াল করতে গিয়েই নাকি আমাকে কল করা- তর্ক না করে মেনেই নিলাম। যেভাবে পাবে পাক - আমার কি। হ্যাপী মাঝে মাঝেই মিস কল দিত ।

ফ্রী সময় থাকলে আমিও কল ব্যাক করতাম। কথা হত , হাই হ্যালো, ক্লাশ কেমন চলে, আমার অফিস কেমন চলছে। গন্তব্য জানা না থাকলে যাত্রা যেমন হয়। এমনি করে এমন ই এক দিন কল করার পর বুঝলাম তার মন খুবই খারাপ , ক্ষনপূর্বে কান্না ও হয়ে গেছে একদফা তেমনটিই মনে হল । সম্ভবত সে দিনই তার সাথে আমার দীর্ঘক্ষন কথা হল।

জানা হল তার অনেক কিছু। মায়ের কষ্টেই তার এই কান্না। বাবা ময়ের মাঝে হওয়া মতানৈক্য তরুনী মেনে নিতে পারেনি- মনে মনে আমার এই ভাবনা বেশীক্ষন স্হায়ী হলনা যখন সে কথার ডালপালা মেলে দিল । প্রকাশে বেদনা মলিন - এই ভেবে হয়ত সে শুরু করল। আমার বাবা দুটি বিয়ে করেছেন।

কথাটি শুনে প্রথম দফায় আমি ঠিক আত্মস্হ করতে পারিনি- তাই বলে বসলাম কি বললে। আত্মসন্মানবোধ সম্পন্ন তরুনীর মলিন চেহারাটি কল্পনায় ভেবে নিলাম যখন সে দ্বিতীয়বার অনেক কস্টে একই কথা বলল। হুমম বলেই আর বলার মতন কিছু পেলামনা , কিংবা কি বলতে হবে তেমন কোন অভিজ্ঞতাও আমার ছিলনা। জেলা শহরের নামকরা উকিল তার বাবা। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে শহরেই থাকেন।

সেই ঘরে তার একটি ছোট্ট বোন ও আছে। কথায় কথায় জানাল ছোট বোনটিকে তার অনেক পছন্দ। সে ও তাকে পছন্দ করে। ভদ্রমহিলা কখনো তার সাথে এমন কোন আচরন করেননি যার জন্য সে তাকে খারাপ বলতে পারে। কিন্তু যখনই তার মায়ের বঞ্চিত হবার বিষয়টি মনে পরে সে কিছুতেই মেনে নিতে পারেনা।

তাই শহরের কলেজে পড়লেও সে হোষ্টেলেই থাকে। হঠাৎ হঠাৎ বাবা ফোন করলে সে হয়ত ঐ বাসায় যায়, ভদ্রমহিলার বাসায় থাকার আমন্ত্রনও সে নির্দ্বিধায় ফিরিয়ে দিয়েছিল। তারা একভাই এক বোন। ভাই ঢাকায় কোন একটি ইউনিভার্সিটিতে পাড়ে। স্কুল শিক্ষিকা মা তার একলায় থাকেন থানা শহরেই।

স্বামী সোহাগ বঞ্চিত মায়ের কষ্ট সে কোন মতেই মেনে নিতে না পারলেও সময়ের স্বাভাবিক স্রোতে সব বয়ে চলেছে নিজ নিয়মেই। বন্ধুত্বে আমি উদার, আর শ্রোতা হিসেবে মহৎ। তার চলতি পথের অনেক গল্পই মন দিয়ে শুনে যেতে হয় আমাকে। হু হা অথবা সামান্য কিছু যোগ করার মধ্য দিয়ে চলে আমাদের কথোপকথন। মাঝে মাঝেই কথা হয়।

ভাল শ্রোতা পেয়ে সেও যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে । স্বাবলম্বী হয়ে মাকে নিয়ে সামনের সুন্দর দিনের স্বপ্ন বোনে সে। স্বপ্ন বেশীদূর আগাতে পারেনা, এক বিকেলে সে জানায় তার বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে। ছেলের মা কোন এক ফাঁকে তাকে দেখে পছন্দও করেছেন। তোমার মতামত কি এই প্রশ্নে দ্বিধা না করেই সে জানায় ছেলের পরিবার শহরে বেশ ধনী হিসেবেই পরিচিত, গাড়ী আছে তাদের।

এক ফাঁকে এও জানায় নিজের গাড়ীতে করে ঘুরা তার প্রিয় কল্পনা গুলোর একটি , স্বচ্ছলতা অনেক বড় বিষয় তার কাছে। ছেলে কি করে এই প্রশ্নে কিছু সময় নির্বাক থেকে জানায় রাজনীতি করে। কোন কিছু না ভেবেই বলে বসলাম রাজনীতি করে এটা কেমন পরিচয়। ওর সাথে অনেক বড় বড় নেতার যোগাযোগ, রাজনীতিতে ওর ভবিষ্যত অনেক ভাল। জানিনা এই কথাটা বলার সময় তার মাঝে কতটুকু আত্মতৃপ্তি কাজ করেছিল , তবে এই ব্যাপারটা তার বাবার মাঝে বেশ প্রভাব রেখেছে, মা রাজি না থাকলেও তার বাবা ওনাদের কথা দিয়ে ফেলেছেন, ছেলের মেয়ে পছন্দ হলে তিনি রাজী।

তাকে নিয়ে , তার বিয়ে নিয়ে বিচলিত হবার মত কোন বিষয় ছিলনা আমার মাঝে , তাকে নিয়ে কোন পরিকল্পনাও ছিলনা আমার , অন্ধভাবে কখনো পথ চলিনি, তাই যাকে দেখিনি তাকে নিয়ে তেমন একটা ভাবিওনি। কিছুদিন পর মুঠোফোনে তার এসএমএস পেয়ে ফোন দিলাম। হ্যালোতেই ভীষন উচ্ছ্বসিত মুখাবয়ব দেখতে পেলাম , সে রাজনীতিবিদের সাথে আজ তার দেখা হয়েছে। বয়সটা একটু বেশী হলেও সেএখনও একটি দলের ছাত্র সংগঠনের সভাপতী, ভীষন ক্ষমতা তার, সবাই তাকে ভয় পাই। গাড়ীতে করে আজ তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল।

আইনি অধিকারের আগেই এই ক্ষমতাসীনের ছায়ায় সে ভীষন পুলকিত। কথায় কথায় আমাকে জানায় তার শহর ভ্রমনের আমন্ত্রন। তাদের গাড়ীতে করে পুরো শহর ঘুরিয়ে দেখাবে, অনেক কিছু আছে তাদের শহরে। আমি হাসি, মায়ের কস্টে মলিন যে মুখ , নিজের অনাগত সুখে তা আজ উচ্ছ্বাসের জোয়ারে মাতোয়ারা। গাড়ী বিলাসে সে আজ পাগলপাড়া।

মাকে নিয়ে তার সে স্বপ্নের কথা আর কখনো তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি। এনগেজমেন্টের দিন সে জানায় তার এক খালাত দেবর আমারই অফিসে চাকরি করে, আমাকে চিনে । আমিও তাকে চিনলাম, আমার ভালই পরিচিত। আমাকে তাদের বিয়েতে অবশ্যই যেতে হবে, সে ঐ ভাইকে বলে দিয়েছে আমাকে যেন নিয়ে যায়। অফিসে দেখা হওয়ার পর তার হবু ভাবী আমার পরিচিত একথা সে আমাকে জানায়।

বিয়েতে আমার যাওয়ার সঙ্গত কোন কারন নেই, যাওয়াও হয়নি। বিয়ের আগে তার শ্বশুর বাড়ীতে বেশ কয়েকবারের ভ্রমন গল্প আমার জানা হয়। শ্বাশুরী তার খুবই ভাল মহিলা , অনেক আদর করেন তাকে, কথায় কথায় তিনি হবু পুত্র বঁধুকে জানিয়েও দেন তিনি যেহেতু ঢাকায় থাকেন বড় ছেলের কাছে , শহরের এই বাড়ীর সব দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। ধনী বাড়ীর কর্তী হবার স্বপ্ন তার চোখে নানান কথায় তা জানাতেও তার দ্বিধা নেই। বিত্ত তার কাছে এত বড় হয়ে কেন ধরা দিল সে ব্যাপারটা নিয়ে আমি অনেক বার ভেবেছি , কোন কূল পাইনি, যেহেতু আমি জানি মায়ের বঞ্চনার অভাবটুকু বাদে আর কোন অভাব তাকে ছুয়ে যাইনি।

এক সময় তার বিয়েও হয়ে যায়, পথ চলায় তাকে নিয়ে ভাবার তেমন কোন অবকাশ ও ছিলনা। "আগুনে পুড়ে গেছে সুখীর পুরো শরীর , হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে " ............ জেলা প্রতিনিধি । অফিসে যাবার প্রস্তুতিকালে হঠাৎ করে থমকে যায় আমি জাতীয় একটি দৈনিকের পিছনের পাতায় বোল্ড করে দেয়া এই সংবাদে। জেলাশহর আর শিরোনামে দেয়া নামটি সমার্থক হলেও আমি মনের গহীনে উঁকি দেয়া দূর্ভাবনাটিকে উড়িয়ে দিয়ে অফিসের পথে বের হয়। যাত্রাপথে বারবার পুরে যাওয়া শরীরটুকু হ্যাপীর এই ভাবনা মনে ঠায় নিতে চাইলেও আমি প্রশ্রয় দিলামনা।

" অমুক ছাত্র সংগঠনের জেলা সভাপতির স্ত্রীর পুরো শরীর আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি এখন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় লড়ছেন। ডাক্তারদের মতে তার বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার স্বামীর ও শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে পুড়ে গেছে, তবে তিনি বিপদ মুক্ত। পারিবারিক সূত্রে জানা যায় সুখী বাসার বেড রূমে কেরোসিনের স্টপে ডিম ভাজতে গেলে সেখান থেকেই দূর্ঘটনার সূত্রপাত।

তার স্বামী আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেও আগুনে পুড়ে যান । পরে গৃহপরিচারক ও পরিচারীকা এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এদিকে সুখীর বাবা এই ঘটনাকে দূর্ঘটনা বলে মানতে নারাজ। তিনি বলেন আমার মেয়েকে হত্যার জন্য গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। মেয়ের জামাই বিয়ের পর থেকে তাকে যেন একটি গাড়ী কেনার জন্য বার লাখ টাকা দেয়া হয় , এই নিয়ে প্রায়ই সুখীর উপর চাপ প্রয়োগ করত।

তিনি এই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আজ তার মেয়ের এই পরিনতি - এই কথা বলতে বলতে সুখীর বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পাশে সুখীর আগুনে ঝলসানো শরীর। ডাক্তাররা দ্রুত রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছেন। পুলিশ জানায় এই ঘটনায় কোন মামলা হয়নি এখনও। মামলা হলে তারা তদন্তের ব্যাবস্হা করবেন।

এদিকে গৃহপরিচারিকা জানায় বাড়ীতে দোতালায় সুখী তার স্বামী সহ থাকত, আর কেউ ছিলনা, তারা নিচে থাকে। বেডরুমে রান্না করার কারন কি জানতে চাইলে সে কোন কথা বলেনি। " সপ্তাহ খানিক পরের রিপোর্ট : " ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় অমুক ছাত্র সংগঠনের জেলা সভাপতির স্ত্রী মারা গেছেন। উল্লেখ্য ..................................। এদিকে সুখীর মৃত্যুর জন্য তার স্বামীকে দায়ী করে করা মামলায় "অমুককে" গ্রেফতার করে থানায় নেয়া হয়েছে, আদালত তিন দিনের রিমান্ড মন্জুর করেছেন।

" এরপর থেকে আর কোন আপডেট চোখে পরেনি। মনে মনে অফিসের ঐ কলিগকে খুজতে ছিলাম। একদিন ধুমপান করতে গিয়ে অফিসের সামনে তার সাথে দেখা। তাকে আগেই বললাম পেপারে ঘটনা আমি পড়েছি। সে জানাল তারা বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু গেলনা।

আমি মনে মনে হাসলাম। মামলার খবর জানতে চাইলাম। তার খালাত ভাইর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে সহজ ভাবে সে জানাল। বলল শীঘ্রই নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। আমি আর কথা বাড়ালামনা।

আরও কিছুদিন পর সে জানাল মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। কিভাবে হয়েছে তা জানার আগ্রহ দমন করার সাধ্য আমার ছিলনা। আজ ভাবি যদি জানতে না চাইতাম সেটাই অনেক ভাল হত। রাজনীতিবিদ তার ক্ষমতার জোরে মুক্তি পেয়েছে এটা ভেবে নিলেই পারতাম। নিরেট সত্য জানার পর যে অনুভূতি হয়েছিল তা আসলে প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই।

সুখীর বাবা চার লক্ষ্য টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নিয়েছেন। কলিগের ভাষায় মেয়ের বিয়েতে উনার যা খরচ হয়েছে তা দিয়ে দেয়ায় উনি আপোষ করেছেন। আমার আরও কিছু জানার আগ্রহ তখন চলে গিয়েছিল। ---------------------------------------------------------------------------------- ---------------------------------------------------------------------------------- ভার্চুয়াল জগতের পরিচয়ে মানুষ অনেক মিথ্যা বলে , এটার শুরু হয় নাম জানতে চাওয়ার মধ্য দিয়ে। সবাই মিছেমিছি একটা নাম বলে দেয়।

সুখী আমার সাথে খুব বেশী মিথ্যা বলেনি । হ্যাপী বলেছিল। সুখী- হ্যাপী , হ্যাপী - সুখী , উল্টে পাল্টে নামের মানে আসলে একই।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।