আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রেমিকার ছবি।

শেষ বারের মতো সতর্ক করছি... আমার বয়স যখন আরো কম। প্রেমে পড়ি এক কিশোরির। আমিও তখন প্রেমে উন্মাদ। তার জন্য কয়েক বার জীবন দিতে এবং নিতে পারি। যদিও কখনো সে চায়নি।

চাইলে কি হতো ? হয়তো কিছুই হতো না। আমিও বুঝে নিতাম সে আমারে ভালবাসে না। বাসলে কি করে আমারে জীবন দিতে বলেন? কি হিপোক্রেসি। আমি যা পারবোনা তা নিয়েই মাতুব্বরি। " মোর প্রিয়া হবে এস রানী, দেব খুঁপায় তারার ফুল" এটা আমার কথা নয়।

আর যাই হোক এমন অকল্পনীয় উপহার আমার প্রমিকাকে দিতে চাইলে প্রেম মনহয় তখনই বিদায় নিত। আমিও দিতে চাইনি। সেও দাবী করেনি। যা সেই যাত্রায় বেঁচে গেলাম। তার পর ফোনে ফিসফাস।

কিশোরি বাবা মায়ের মোবাইল থেকে চুরি করে আমার সাথে কথা বলা। আমি মাঝে মাঝে সুযোগ মতো তাকে দেখতে যাওয়া। এটা খুবই কম হয়েছে। আমি একবারই কেবল তাকে দেখতে যেতে পেরেছি। যতবার দেখা হয়েছে ততবারই তার আগমনে।

আমার হবু শ্বশুর ডাকসাইটের নেতা। মা ছিলেন ইডেনের নেত্রী। চাচারাও বর্তমানে মটরবাইক নিয়ে রাজনীতি করে। আমি হলাম ভীতুর ডিম। তার বাসা তো দূরের কথা ।

তার গলির আশে-পাশে দিয়েও যাইনা। যেহেতু তার ফোন নাই , বাবা মায়ের ফোন ম্যানেজ করে কথা বলে। তাই আমার ফোন দেয়ার টেনশানটাও অনেক কম। যখন প্রয়োজন এবং সুযোগ পায় সেই আমাকে ফোন দেয়। আমি সব ব্যপারেই রিসিবার।

সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে, ভীরু গলায় আস্তে আস্তে কথা বলে। আমি সব কথা বুঝতেই পারিনা। কি উত্তর দেব? তাই একটা সহজ সমাধান বের করে নিলাম। যখনই তার কোন কতা বুঝতে না পারি। বড় করে বলে দেই"আই লাভ ইউ"।

এই কথা শুনার পরে তার মনের কি অবস্থা হয়, তা বলতে পারবো না। তবে আমি বলে বেশ তৃপ্তি পাই। একদিন তাকে বল্লাম তোমার একটা ছবি দাও। আমার কাছে তোমার একটা ছবি থাকা দরকার। বেশির ভাগ সময়ই তুমি থাকনা ।

তখন তোমার ছবিটা দেখতে পারবো। কথাটা তার মনে ধরেছে। সে রাজি হলো। কিন্তু ছবিটা আনতে হবে তার বাসার গেট থেকে। আমার মাথায় বাঁজ পড়লো।

তোমার বাসার গেটে যেতে হবে? হুম। বাসায় তো যেতে বলি নাই? শনিবার দিন মা অফিস থেকে ফিরে পাঁচটায়। বাবা ফিরে সারে চারটায়। আমি স্কুল থেকে ফিরি চারটা পনের মিনিটে। এই একদিনই সময়।

চলে আসুন। আমি শুনে একবার বুকে থুথু দিলাম। এক বন্ধুর সাথে পরামর্শ চাইলাম। কি করা যায়? সে সব শুনে বল্ল। তার বাড়ির কেউ দেখতে পেলে কি হবে? আমি বল্লাম আমাকে মেরে তক্তা করে দিতে পারে।

খুনও করতে পারে। সে বল্ল,তাদের বাসার কেউ কি আগে কখনো খুন করেছে? মানে কারো কি খুন করার অভিজ্ঞতা আছে? না এমন তো শুনি নাই। কিন্তু কেন? তাহলে প্রথম দফায় খুন করবেনা। ধরা পড়লে একটা থ্রেট করতে পারে,আর এই গলির মুখেও যেন না দেখি,এই রকম। খুব বেশি হলে অথবা তারা তোর উপর খুব ক্ষেপা থাকলে একটু পিটানি দিতেও পারে।

প্রেমের জন্য কত জন কত কী করেছে। আর তুই একটু পিটানি খেতে পারবিনা? তার পর ইতিহাসের প্রমীকদের নিয়ে একটা লেকচার ঝাড়লো। এই হলো আমার পরামর্শদাতার মন্তব্য। আমিও মজনু,ফরহাদের মতো ইতিহাসে নাম লেখাব। সাহস করে রাজি হলাম।

প্রেমিকার সাথে পরে যখন কথা হলো জানতে চাইলাম কোন শনিবারে আসবো। সে বল্ল কেন আসবেন? হায় হায় কয় কি? তোমার ছবি দেয়ার কথা। ভুলে গেছে? কিন্তু আমার যে রিসেন্ট উঠানো কোন ছবি নাই। আগের ছবি আছে। আরে আগের হলেও হবে।

আরে না । আগের ছবি দিলে কেমন হবে? আমি বরং এই ঈদে নতুন করে ছবি উঠিয়ে দিব। আমি নাছুর বান্দা। না যা আছে তাই দিতে হবে। সে রাজি হলো।

আমিও অনেক হিসাব নিকাশ করে তার গেটে সঠিক সময়ে গিয়ে হাজির হলাম। এবং সময় মতো সে ছবি নিয়ে দোতলা থেকে গেটে নেমে আসলো। আমার দিকে কিছু ক্ষন তাকিয়ে থেকে একটা প্যাকেট আমার হাতে দিয়ে দ্রুত আবার চলে গেল। প্যাকেটটা হাতে নিয়ে আমিও কোন রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে চলে এলাম। বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত হলো।

সবাই ঘুমিয়ে যাবার পরে। ছবির প্যাকেটা খুললাম। একি? না সে ছবি দিয়েছে,এবং তার ছবিই দিয়েছে। ছবিটা অনেক দিন আগের তাও সত্য। কিন্তু কত দিন আগের ? সে শুধু তার ছবি দেয়নি।

সাথে তার মা এবং বাবার ছবিও দিয়েছে। ছবিতে তার বাবা মায়ের মাঝে বসে আছে। তার যখন বয়স দুই তখনকার উঠানো ছবি। কেমন লাগে? প্রেমিকাও আমারে নিয়ে ফান করলো। আফসুস।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।