এবার হবেই! লোরকের পাশে এবার আপনিও >> ০১৮৩৬৫৫৫৬৪০
বারো মাসে তের পার্বণ। বাংলাদেশ উৎসবের দেশ। বাংলাদেশে প্রচলিত উৎসবের মধ্যে নবান্ন উৎসব অন্যতম। চলুন জেনে নেই এই উৎসব সম্পর্কে কিছু কথা।
নবান্ন উৎসব (New Rice Festival): নবান্ন মানে নতুন অন্ন।
নতুন ফসল ঘরে তোলা উপলক্ষে কৃষকরা এই উৎসব পালন করে থাকে। সাধারণত নবান্ন হয়ে থাকে অগ্রহায়ন মাসে। সে সময় আমন ধান কাটা হয়। এই নতুন ধানের চাল দিয়ে রান্না উপলক্ষে নবান্ন উৎসব হয়ে থাকে। কোন কোন অঞ্চলে ফসল কাটার আগে বিজোড় সংখ্যক ধানের ছড়া কেটে নিয়ে ঘরের চালে বেঁধে রাখে এবং বাকী অংশ চাল করে নতুন চালের পায়েশ করে নবান্ন করে থাকে।
গবেষকদের মতে কৃষি প্রথা চালু হবার পর থেকে নবান্ন উৎসব পালন হয়ে থাকে। তবে ৪৭ এর দেশভাগের পর এই উৎসব ধীরে ধীরে কদর হারাতে থাকে।
নবান্ন উৎসব এর অন্যতম প্রথা হচ্ছে কাকবলি। একটি কলার ডোগায় নতুন চাল, কলা, নারকেল নাড়ু কাককে খাওয়াতে হয়। প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে কাকের মাধ্যমে ওই খাদ্য মৃতের আত্মার কাছে পৌঁছে যায়।
এই নিয়ে ছড়া আছে। ছোট ছেলে-মেয়েরা ছড়া কেটে দাড় কাককে নিমন্ত্রন করতঃ
"কো কো কো,
আমাগো বাড়ি শুভ নবান্ন।
শুভ নবান্ন খাবা, কাকবলি লবা,
পাতি কাউয়া লাঠি খায়,
দাড় কাউয়া কলা খায়,
কো কো কো,
মোর গো বাড়ি শুভ নবান্ন। "
কাকবলির আগে আরো তিনটি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হত- লক্ষ্মীপূজা, পিতৃশ্রাদ্ধ, বীরবাশ। বীরবাশের প্রথা অন্য অঞ্চলে প্রচলিত না থাকলেও বরিশালে প্রচলিত।
বাড়ির উঠানের মাঝখানে একটি গর্ত করা হয়। তার চারপাশে পিটুলী দিয়ে আলপনা আঁকা হয়। গর্তে জ্যান্ত কই মাছ ও কিছু দুধ দিয়ে একটি বাঁশ পোতা হয়। সেই বাঁশের প্রতি কঞ্চিতে ধানের ছড়া বাধতে হয়। এটাকে বীরবাশ বলে।
নবান্ন উৎসবে কাকবলি, লক্ষ্মীপূজা, পিতৃশ্রাদ্ধ হয়ে গেলে সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করত। এর আগে কেউ কিছু খেত না। সবাই একসাথে খেত এবং উলুদ্ধনি করত। এখানেই নবান্ন উৎসব শেষ হত না, সাধ্যানুসারে এই উৎসব উপলক্ষে প্রায় কুড়ি থেকে চল্লিশ পদের রান্না হত। বিভিন্ন রকমের শাক রান্না করা হত।
দুপুরের নবান্ন অন্যের বাড়িতে করলেও রাতের নবান্ন সবাই নিজ বাড়িতে করত। নবান্নের পরের দিনও নবান্নের রেশ থাকত সেটাকে বলা হত 'বাসি নবান্ন বা বাস নবান্ন। '
আমাদের ফেইসবুক পেইজে গিয়েও বাংলাদেশের উৎসব-পার্বণ সম্পর্কে জানতে পারেন যা এখন শুধুই অতীত হতে চলেছে-
লোকসংস্কৃতি রক্ষা করি (লোরক) সোসাইটি ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।