আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নরপিশাচ আর অশিক্ষিত স্বামীর নিষেধ স্বত্তেও বিয়ের পর পরাশুনা করায় ডান হাতের কবজি কেটে দিল জুঁইয়ের!!!

আমি...... ৪ ডিসেম্বর সকাল ৭টা। ঘুম থেকে উঠে দেখি বিছানার সামনে রফিক দাঁড়ানো। জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কখন আসছো। উত্তরে রফিক বলে, এইতো কিছুক্ষণ আগে আবুধাবি থেকে আসলাম। তোমার সঙ্গে একা কথা আছে বলে রফিক তাকে একটি কক্ষে নিয়ে যায়।

’ কান্না জড়িত কণ্ঠে জুঁই বলল জুই। অনেক দিন পর স্বামীকে দেখে আনন্দে ভরে উঠে জুঁইয়ের মন। চরম আবেগে পাশের কক্ষে দুইজনে গিয়ে বসে। এ সময় নাইমা (জুঁই এর ননদ) ও তার স্বামী শফিকুল ইসলামসহ পরিবারের অন্য কক্ষে ছিল। রফিক কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়।

রফিক জুঁইকে বলে তুমি তাহলে ঠিকই পরীক্ষা দিয়েছো। চোখ বন্ধ করো, তোমাকে এমন পুরস্কার দিবো, যা তুমি কখনো কল্পনা করতে পারবে না। স্বামীর এমন মধুর কথা শুনে আবেগে জুঁই চোখ বন্ধ করে ফেলে। এ সুযোগে ওড়না দিয়ে জুইয়ের দুই চোখ টাইট করে বেঁধে ফেলে রফিক। স্কচটেপ দিয়ে বন্ধ করে দেয় মুখ।

এরপর রফিক জুঁইকে বলে, তুমি ডান হাত লম্বা করো। জুই ডান হাত লম্বা করার সঙ্গে সঙ্গে ধারাল চাপাতি দিয়ে কোপ দেয় রফিক। এক কোপেই জুঁইয়ের কব্জি হাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মুখে স্কচটেপ থাকায় জুঁই চিত্কার করতে পারেনি। মেঝে ভেসে যায় রক্তে।

রক্তাক্ত জুঁইকে ঐ কক্ষের বারান্দায় ফেলে রাখে রফিক। কিছুক্ষণ পর ননদ ও তার স্বামী এসে রক্ত পরিস্কার করে। জুঁইকে পরে উত্তরার একটি প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা। সেখানে ডাক্তার ডান হাতে কবজি কিভাবে কেটেছে জুঁইয়ের কাছে জানতে চাইলে সে পুরো ঘটনা প্রকাশ করে। এ সময় ননদ ও তার স্বামী দ্রুত হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।

জুইকে ডাক্তার দ্রুত পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করে। জুঁইকে পঙ্গু হাসপাতালের সার্জন জানান, ডান হাতের পাঁচটি আঙ্গুল ৬ ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় ঐ স্থানে জোড়া লাগানো হলে আগের মত হয়ে যাবে। এই কথা শুনে জুঁইয়ের বাবা ও অভিভাবকরা ছুটে যান জিয়া কলোনীর ১০৭/৫ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় শফিকের বাসায়। রফিকের হাতে পায়ে ধরে জুইয়ের বাবা বলেন, 'বাবা তুমি আমার মেয়ের আঙ্গুলগুলো দাও। ' উত্তরে রফিক শ্বশুরকে বলে আঙ্গুলগুলো উত্তরার ঐ হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে রয়েছে।

এ কথা শুনেই সবাই সেখানে ছুটে যান। তখন ডাক্তার বলেন, ‘আমার কাছে আঙ্গুল নেই। ’ পুনরায় তারা আবার জিয়া কলোনীতে ছুটে আসেন। এখানে এসে তারা চিত্কার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। ঘাতক রফিক ডাস্টবিন থেকে জুইয়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল ব্যাতীত অন্য চারটি আঙ্গুল খুঁজে বের করে।

পরে তা শ্বশুরের হাতে তুলে দেয়। পরে তারা চারটি আঙ্গুল নিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে যায়। সময় ১০ ঘণ্টার বেশি অতিবাহিত হওয়ায় চারটি আঙ্গুল জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখেন আঙ্গুলের কোষগুলো মারা গেছে। জুঁইয়ের (২০) ‘অপরাধ’ স্বামীর নিষেধ স্বত্তেও পড়াশোনা করা।

বিয়ের পরপরই অশিক্ষিত স্বামী তাকে জানিয়ে দেয় আর পড়াশোনা করা যাবে না। কিন্তু লেখাপড়ার প্রতি অদম্য টানে জুঁই নরসিংদী সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়। নির্বাচনী পরীক্ষায়ও ভাল ফল করে সে। স্বামীর নিসেধ স্বত্তেও পড়াশোনা করার খেসারত দিতে হলো জুঁইকে ডান হাতের কব্জি দিয়ে। সে যাতে আর লিখতে না পারে সে জন্য ডান হাতের কব্জি কেটে নেয় ঈর্ষান্বিত আবুধাবি প্রবাসী স্বামী রফিকুল ইসলাম।

গত ৪ ডিসেম্বর সকালে ক্যান্টনমেন্ট থানার জিয়া কলোনীতে রফিকের দুলাভাইয়ের বাসায় এ পৈশাচিক ঘটনা ঘটে। ডান হাতের আঙ্গুলগুলো হারিয়ে জুঁই নরসিংদী পৌর এলাকার ভেলানগরের বাসায় কষ্টকর দিন কাটাচ্ছে। সকাল-সন্ধ্যা সহপাঠীরা এসে তাকে সান্তনা দিচ্ছে। বুকের উপর ব্যান্ডেজ বাধা ডান হাতটি রেখে শুয়ে আছে সে। অসহায় শিশুর মতো ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছিল সে।

ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করার সঙ্গে সঙ্গেই কেঁদে ফেলে সে। বলতে থাকে স্বামীর সংসার, পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ও স্বামীর নিষেধের কথা। হাত কেটে নেয়ার প্রসঙ্গ আসতেই হাউমাউ করে কেদে ফেলে সে। বলে তার স্বামী মানুষ নামের একটা নরপশু। জুঁই জানায়, রফিকের দুলাভাইয়ের বাসায় বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণের নেকলেসও হাতের বালা পড়ানোর কথা বলে সে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটায়।

আবুধাবি থেকে এসে সে আমার সঙ্গে ভালবাসা আর প্রেমের নানা ছন্দে কথা বলতে থাকে। যা হিন্দি সিনেমাকে হার মানিয়ে দেয়। সংবাদটি অপ্রকাশিত থেকে নেওয়া। লেখাটি পড়ে পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। এইরকম নরপিশাচও মানুষ হয় ? এই নর পিশাচের দুই হাত কেটে ফেলাই হবে একমাত্র ন্যায়বিচার ।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.