আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোন্দলে জর্জরিত ঢাকা মহানগর বিএনপি

হরতালের দিন খোকার ওপর যখন হামলা চলছিল কমিশনার মোহন তখন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির বেহাল দশা। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দ্বিখণ্ডিত করার প্রতিবাদে ৪ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে দুপুরে পুরান ঢাকায় সদ্য সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা যখন পুলিশের হাতে নির্যাতিত হচ্ছিলেন, তখন তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এবং সূত্রাপুরের ওয়ার্ড কমিশনার মোহন বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমনকি এ ঘটনার পর বিএনপিদলীয় কমিশনাররা কোথাও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। খোকার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সমর্থক কোনো কমিশনার ওইদিন মাঠে ছিলেন না। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলের হাইকমান্ড।

গত ৪ ডিসেম্বর ওই হরতাল পালন করা হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠ নেতারা জানান, হরতালের পরের দিন এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খোকা ভাইয়ের পক্ষে এতগুলো কমিশনার ছিল অথচ তার ওপর যখন হামলা হল তখন ঢাকার কোথাও কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি। সাদেক হোসেন খোকা বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। তার ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। সূত্র জানায়, সারা দেশে বিএনপির ৭৮টি সাংগঠনিক ইউনিট রয়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল ও কোন্দলপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর বিএনপি। যার সর্বশেষ নজির ঢাকা সিটি করপোরেশন দ্বিখণ্ডিত করার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। ওইদিন তিনি বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী নিয়ে রাজপথে মিছিল বের করলে শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিমসহ আরও কয়েকজন গ্রেফতার হন। বিএনপিদলীয় প্রায় ৭০ জন কমিশনার থাকলেও এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিন কেউই রাজপথে নামেননি। ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।

সূত্র আরও জানায়, ওয়ান-ইলেভেনের সময় দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ২০০৮ সালের ৪ জুন ঢাকা মহানগর কমিটি ভেঙে দেন তত্কালীন মহাসচিব অ্যাডভোকেট খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। এরপর দেলোয়ার যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন তার বিরোধিতার কারণে খোকাকে দিয়ে কমিটি গঠন করা থেকে বিরত থাকেন খালেদা জিয়া। তার মৃত্যুর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার পর তার অনুরোধে খালেদা জিয়া ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করেন খোকাকে আহ্বায়ক করে। চলতি বছরের ১৪ মে সাদেক হোসেন খোকাকে আহ্বায়ক এবং বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালামকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। নবগঠিত এ আহ্বায়ক কমিটিকে পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে মহানগরের সব ইউনিট কমিটি গঠন ও মহানগর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

খোকাবিরোধীরা জানান, খোকাকে যখনই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তখনই একই অবস্থা হয়েছে। এর আগে ১৯৯৬ সালে সাদেক হোসেন খোকাকে আহ্বায়ক করে মহানগর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ১৫ বছর কেটে গেলেও অনেক থানা ও ওয়ার্ডে বিএনপির কোনো কমিটি ছিল না। এ প্রসঙ্গে যুবদলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল জানান, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি থাকলেও গত ১৫ বছর ধরে মোহাম্মদপুর থানায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। এখন তিনি থানা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন।

ক্যান্টনমেন্ট থানার কমিটি নেই দীর্ঘদিন। এ কমিটি গঠনের কাজ চলছে। মিরপুর থেকে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। তিনি এখনও কমিটি গঠন করতে পারেননি। খিলগাঁও, সবুজবাগ থানার কমিটি গঠন করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

সূত্র জানায়, হরতালের আগের দিন প্রতিটি ইউনিটকে টাকাও দেওয়া হয়। টাকা নিলেও কেউ রাজপথে নামেননি। মহানগর কমিটি গঠন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহানগর কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ২২টি থানার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবশিষ্ট থানা কমিটি গঠনের কাজ চলছে। যে থানাগুলোর আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের থানার সংশ্লিষ্ট সব ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করে থানা কমিটি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হরতালে কমিশনাররা মাঠে ছিলেন না কেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ না নামলে কী করা যাবে। Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.