আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

.বিশ্বাস কর বোন! এমনটা চাইনি..সত্যিই না......

"ধরণীর বুকে এনেছিলে যবে শান্ত-স্নিগ্ধ এই আমারে সেই থেকেই স্বপ্ন শুরু তুমি ,ডেকেছিলে তখন বিধাতারে" এমনি কোন এক নারীই আমাকে জন্ম দিয়ে আমার স্বপ্নগুলোতে রং লাগিয়ে দিয়েছেন। সে আমার মা। আমার সেই রঙীন পৃথিবীতে আমি যখন অচেনা এক সাদাকালো হয়ে লুকাতে ব্যর্থ হই বারবার তখন এই মা-ই আমাকে রাঙাতে বারবার এক শক্তিমান পাহাড় হয়ে লুকিয়ে রাখেন অসীম মমতায়। তারপর একদিন সংসার জীবনাচরে যখন আবারো এক নারীকে মা ঘর আলো করে নিয়ে আসেন তখন সে আবার রং লাগিয়ে রঙীন করে আমার এই পৃথিবী। আমি খুব সাধারন মানুষ।

আমি নারী অধিকার কি বুঝিনা। আমি তসলিমা নাসরীন বা সুলতানা কামালের মত মানুষের নারী অধিকারের নামে নষ্টামির বিরুদ্ধে প্রকাশে্য কিছু বলতে পারিনা ঠিকই ,তবে আমার অনুভূতিরা কেবলি আমাকে ভাবায়, যে পথ শুধু মানুষের পশুত্বকে জাগিয়ে বিবেকবোধের বারবার মৃত্যু ঘটিয়ে চলেছে তখন মিছে ছলনায় নিজেকে বারবার সান্তনার প্রবোধ দেয়া আত্ম প্রবন্ঞারই সামিল। নারীকে বারবার যখন পণ্যের মতই ব্যবহার করা হচ্ছে,যখন একটি গাড়ি বা ল্যাপটপের পাশে স্বল্প বসনা কোন এক নারীকে দাড় করিয়ে দিচ্ছে এই প্রগতির বুলি আউড়ানো একুশ শতকের নারীবাদী আন্দোলনের পথিকৃৎগুলো,তখন মানবতা কেবলি ঠাই নিচ্ছে কোন শহরের গলিতে কুপি বাতি হাতে দাড়িয়ে কৈশোরে থাকা সম্ভ্রম হারানো ক্ষুধার্ত কোন এক বোনের চোখের দু'ফোটা অশ্রুজলে। ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাওয়া ঐ পতাকটা যদি আজ কথা বলতে পারত তবে নিশ্চয়ই বলত 'যদি জানতাম আজ ৪০ বছর পরও যে স্বাধীন মানুষগুলোই আবার এমন পাষন্ডতায় লিপ্ত হবে তবে আমি আসতাম না,অধিকার দিয়ে দেওয়া মানুষগুলোর কাছে অধিকারের দাবি তুলতে হবে জানলে আমি ঐ অধিকারটুকুই দিতামনা। ' প্রাচ্য আর পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দে আমরা যে আত্মঘাতী পাশ্চাত্যকে বেছে নিয়েছি তা আমার বোনের সালোয়ার কামিজ কেড়ে নিয়ে পরিয়ে দিয়েছে মাসাকালি কিংবা স্কার্ট।

আমার বোনের স্কার্ফকে সেকলে বলে ধূলায় ধূসরিত করে তার স্থলে আধুনিকতার নামে পরিয়েছে লেহেঙ্গা। মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষা বাদ দিয়ে শত পরিমলদের জন্ম দেয়ার জন্য জুড়ে দিয়েছে নৃত্যকলা। আমারই মায়ের ব্যবহৃত হিজাবকে ব্যঙ্গ করে আমারি ভোটে নির্বাচিত কুলাঙ্গার মন্ত্রী কটূক্তি করেছে পক্ষান্তরে তাকেই জন্ম দেয়া মাকে। কিছুদিন আগেই আমরা ভারতীয় ছবি আমদানি করেছি এই দেশে। প্রাচ্য আর পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দে এ দেশটি যে অপুষ্টরুগ্ন শিশুর জন্ম দিয়েছে তার প্রমাণ শুধু কলকাতা শহরেই দিনে ৫১৩ ধর্ষিতার পরিসংখ্যানে।

যে সমাজে মেয়েরা চোখ ঝলসানো পোশাক পরিচ্ছেদ ও অলংকারাদিতে সুসজ্জিতা হয়ে প্রকাশ্যে নিজেদের রূপ যৌবনের প্রদর্শনী করে বেড়ায় এবং সর্বত্র পুরুষদের সাথে অবাধ মেলামেশা করার সুযোগ পায়, সেখানে তাদের চারিত্রিক মেরুদন্ড ধ্বংসের কবল থেকে কিরূপে রক্ষা করা যেতে পারে? আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের দেশে নারী-পুরুষের মধ্যে যারা নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ে থাকেন, তারা অনায়াসেই আমার এই উক্তির যথার্থতা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। সুতরাং এ বিষয়ে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা নিষ্প্রয়োজন। কেউ কেউ বলে থাকেন, আমাদের সমাজ জীবনে যেসব অনাচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তার মূলে নাকি রয়েছে পর্দাপ্রথা এবং পর্দার ব্যবস্থা না থাকলে মেয়েদের সম্পর্কে পুরুষদের নাকি মনে সম্ভ্রম ও শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হত। যারা এরূপ ধারণা পোষণ করেন, তারা যে নিতান্তই ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছেন, তা আমি দৃঢ়তার সাথেই বলতে চাই। কারণ, যে সমাজে পর্দা প্রথাকে বিসর্জন দিয়ে নারীকে সম্পূর্ণ ‘আযাদ’ করে দেয়া হয়েছে, সেখানে পুরুষের মনে সম্ভ্রমবোধ জাগা তো দূরের কথা, বরং নারীর মহান মর্যাদাকেই সেখানে নগ্নতা ও উলংগতার চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে পৌঁছানো হয়েছে।

এমনকি, তাতেও যেখানে মানুষের যৌন লালসা নিবৃত্ত হয়নি, সেখানে প্রকাশ্য ব্যভিচারকেই উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এর অনিবার্য প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সমাজের বিভিন্ন স্তরে কিরূপ ভাঙন ও বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতে পারে, তা আপনারা বৃটেন, আমেরিকা এবং তাদের অনুসারী তথাকথিত প্রগতিশীল দেশগুলোর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকেই সম্যক অনুধাবন করতে পারেন। আমার মা-বোনদের নিকট জিজ্ঞাস্য যে, পর্দা প্রথাকে বিসর্জন দিয়ে এহেন প্রগতিই কি তারা কামনা করেন? পর্দা প্রথাকে বিসর্জন দেয়া সবচেয়ে প্রগতিশীল ইউ,এস,এ-তে প্রকাশিত এক জরীপে বলা হয় ১৯৯৩ সালের ২৩ এপ্রিল তাডের একটি কনভেনশনে ৯০ জন যৌন নিপীড়নের শিকার হন যার ৮৩ জনই নারী। বর্তমান সময়ে প্রতি৪৮ সেকেন্ড ধর্ষিতা হওয়া ইউ,এস,এ নামক দেশটি সুলাতানা,তসলিমা বা রাতের আধারে লেডিস হলে গিয়ে নাচানাচি করা কোন থিংকট্যোকের কাম্য হলেও আমার হতে পারে না। কারণ ামার রক্তে যে আমারি মায়ের স্বপ্ন।

আর কোন নারীর অবমাননা যে আমার সে স্বপ্নেরই ধূলিস্যাৎ। তাই আমার এ রোদন। হে বোন, তুমি ভুল বোঝনা আমায়। আমি চাইনি তুমি কেবলি রঙীন এচাক চিক্যময়তায় বারবার পথ হারাও,আমি চাইনি তুমি স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমার পশুত্বে নাড়া দেয়া কেবলি একটু সুখের খোরাক হও,আমি চাইনি তুমি কেবলি ভোগ্য সামগ্রী হও,আমি চাইনি তুমি ভালো রেজাল্ট করে উল্লাসে ফেটে পড়লেই চরিত্রহীন সাংবাদিকের দল তোমার ছবি ছাপিয়ে তার সংবাদপত্রের কাটতি বাড়াক,আমি চাইনি গোধূলির কনে দেখা ম্লান আলোয় তুমি কেবলি শত মুহুর্তের প্রতারণায় নিজেকে সপে দাও মৃত্যুর দোয়ারে.............বিশ্বাস কর বোন এমনটা চাইনি........সত্যিই চাইনি..........। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.