সময়ের সমুদ্রের পার--- কালকের ভোর আর আজকের এই অন্ধকার রমজান আসলেই প্রশ্নটা প্রত্যেকের মনে হাজার বার জাগে
আমার জীবনের সবচাইতে কঠিন প্রশ্ন ও তার বিজ্ঞানময় উত্তরঃ
কোরআনে বলা হয়েছে,
“রমজান মাসে শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। তারপরেও খারাপ কাজ হয় কেন?”
[হোটেল গুলোতে পর্দা টাঙ্গিয়ে উদর-পুর্তি, বারগুলোতে রাতের বেলা দরজা বন্ধ করে মাতাল
হয়ে উদ্দাম নাচ, দরজা জানাল বন্ধ করে পিসিতে সিনেমা-পর্ন, মোবাইলে বিবাহ বহির্ভুত প্রেম ইত্যাদি ইত্যাদি কি খারাপ কাজ নয়? শয়তান শিকলে বাধলে এই খারাপ কাজগুলো কেন ঘটছে?
নাকি আঠারশ বছর পর এসে ইসলামের নিয়ম কানুন খাটছে না?
রাজনীতির মতো ব্যক্তি জীবনেও ইসলাম ব্যর্থ?
আস্তিকরা ব্যাকডেটেড আর নাস্তিকরা আপডেটেড!!!!?????]
উত্তরঃ সহজ ও সাধারন ভাবে,
আপনি সাইকেল চালাচ্ছেন। গতি বাড়ছে তো বাড়ছেই। হঠাৎ পেছন থেকে আপনার পরিচিত বন্ধু আপনাকে ডাক দিল।
আপনি যদি বোকার মতো জোরে ব্রেক কষেন তাহলে সাইকেল উলটে যাবে অথবা ব্রেক ছিড়ে যাবে।
বুদ্ধিমানরা ধীরে ধীরে ব্রেক কষে সাইকেল থামাবে।
লক্ষ্য করুন,
ধীর ধীরে সাইকেল থামাতে গিয়ে আপনাকে কিছুদুর যেতে হয়েছে। যেখানে ব্রেক কষেছেন সেখানে সাইকেল থামে নি। ব্রেক কষার স্থান থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে সাইকেল থেমেছে।
আসল ব্যাখ্যাঃ বছরের এগারোটা মাস আমরা পাপে ডুবে থাকি।
মুক্তমনা আর আধুনিকতার নোংরা শৃঙ্খলে ডুবে থাকি। পাপ করি আর বলি,
“আমার মনে তো পাপ নাই। ধবধবে সাদা। মেয়েটার দিকে তাকিয়েছি তো হয়েছে কি? আমি তো ওকে মায়ের মত দেখছি। কোন নোংরা চিন্তা তো করি নাই।
অজ্ঞাতে( ইসলামের যথাযথ জ্ঞান না থাকলে যা হয়। বাসায় বুখারী শরীফ আর কোরানের তাফসীরের পাহাড় রেখেও লাভ নেই) বা জ্ঞাতে পাপের পাহাড়ে ডুবে যাই। পাপের গতি প্রচন্ড বেড়ে যায়। এই গতি হুট করে প্রথম রমজানে থামিয়ে ফেলি। জোড়ে ব্রেক কষি।
এতে দুইটা ঘটনা ঘটে...
@হঠাৎ ব্রেকের জন্য উল্টে যাই। রোজা শরীরের সাথে ফিট করে না। সিগারেট না হলে মাথা ঠান্ডা হয় না। এনার্জী ড্রিঙ্ক না খেলে পেট ভরে না। দুইটা রোজা করে বাদ দেই।
প্রথম আর শেষেরটা করে একমাসের রোজা বেঁধে রাখি। কঠিন চালাক!!! সৃষ্টিকর্তাকে ধোকা দয়ার অপুর্ব কৌশল। লক্ষ্য রাখুন, পাপ কাজ থামল না।
@যারা বুদ্ধিমানের মতো ধীরে ধীরে খারাপ কাজের ব্রেক কষেন,
ব্রেকের পর পাপের গাড়ী থামাতে থামাতে একমাস চলে যায়। রমজান পেরিয়ে যায়।
কোন লাভ হয় না। সারা বছরের পাপের গাড়ী রমজানে এসে শুধু প্যাডেলহীন ব্রেক আর কিছু নয়!!!
সাইকেল টেনে আবার পেছনে ফিরে বন্ধুর কাছে আসা যায়, এক রমজান গেলে আরেকবার ফেরার গ্যারান্টি থাকে না।
বোকা ভাবে ও চালাক ভাবে ব্রেক কষেও লাভ নেই। থামন্ত পাপেকাজ করেই যায়। র গাড়ী তার
বিজ্ঞানঃ
দ্রুত বর্ধনশীল ত্বরনের পাপের গাড়ীতে ব্রেক কষলে মন্দন সৃষ্টি হয়।
অতিরিক্ত ভরবেগের(মোমেন্টাম) কারনে গাড়ী পুরোপুরি স্থির হতে কিছু দূরত্ব পেরিয়ে যায়। এই দূরত্ব হল পুরো রমজান মাস।
শয়তান শৃঙ্খলাবদ্ধ আহারে!! এগারো মাসের চলন্ত গাড়ী নিশ্চয় একদিনে ব্রেক কষে থামানো যায় না। আফসোস!!! বড়ই আফসোস!!!
“তার মত দুর্ভাগা আর কে, যে রমজানের একমাস পেল অথচ তার সমস্ত গুনাহ মাফ করতে পারল না। ”
কে কত বড় ফেসবুক সেলিব্রেটি, কারো কত লাইক-শেয়ার আল্লাহ শুনবেন না।
কিন্তু অবশ্যই স্বীকার করিয়ে ছাড়বেন,
“তুমি দিনে যে পাঁচ ঘন্টা ফেসবুকে ছাগুগিরি-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বেঁচে খেয়ে কাটিয়েছ তার হিসাব দাও। ’
একজন নাস্তিকের সাথে যুক্তিহীন আর অধম পন্থায় তর্ক করে যে সময় ব্যয় করেছ তার হিসাব আজ আমাকে দিয়েই উঠতে হবে। নইলে তোমার মাফ নেই বান্দা।
পাবে না আমার আরশের ছায়া, না পাবে জান্নাত। তোমার ফেসবুক, তোমার ব্লগ তোমাকে দিবে একটা সুর্য!!
গনগনে সুর্য!!!
এই সুর্যের তেজ আধাহাত মাথার উপরে থাকা জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডের তেজের মত।
দেখ তোমার মাথার মগজ গলে পায়ে পড়ছে। উত্তপ্ত তামার মতো মাটি তোমার পা কে পুড়িয়ে কয়লা বানাচ্ছে...
কোথায় তোমার মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধা-মুজিব-জিয়া-নিজামী-সাইদী-আরিফ-আর-হোসেন-জাফর ইকবাল-ফেসবুক-ব্লগ-প্রেমিকা-মা-বাবা?
কোথায় তোমার চেতনা?
দেখো তোমার জন্য আজকে তাদের কোন মুল্য আমার কাছে নেই। নিজের পাপের ভার আজ তোমাকেই নিতে হবে।
স্ট্যাটাসটা লিখতে আমাকে প্রচন্ড ভয় লাগছে। আমার ভয় লাগছে এজন্য যে,
আমার বাবা-মাও আমাকে চিনবে না।
আমাকে অস্বীকার করবে। যার গর্ভ ছিড়ে আমি বের হলাম, সেও চিৎকার করে বলবে,
‘একে আমি গর্ভে ধরিনি। একে আমি চিনি না। ’
আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি। আমার কানে ঝঙ্কারের মত বাজছে...
'একে আমি গর্ভে ধরিনি।
একে আমি চিনি না। '' ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।