২৫ মার্চ ১৯৭১ রাতে সুইপার রাবেয়া খাতুন রাজারবাগ পুলিশ লাইনের এস এফ
ক্যান্টিনে ছিলেন। পুলিশদের প্রতিরোধ ব্যর্থ হবার পরে ধর্ষিত হন রাবেয়া
খাতুন। সুইপার বলে প্রাণে বেঁচে যান কারণ রক্ত ও লাশ পরিস্কার করার জন্য
তাকে দরকার ছিল সেনাবাহিনীর। এরপরের ঘটনার তিনি যে বিবরণ দিয়েছেন তা এইরকম :
২৬ মার্চ ১৯৭১,বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেয়েদের ধরে আনা
হয়। আসা মাত্রই সৈনিকরা উল্লাসে ফেটে পড়ে।
তারা ব্যারাকে ঢুকে প্রতিটি
যুবতী,মহিলা এবং বালিকার পরনের কাপড় খুলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে লাথি মেরে
মাটিতে ফেলে ধর্ষণে লিপ্ত হতে থাকে। রাবেয়া খাতুন ড্রেন পরিস্কার করতে করতে
এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। পাকসেনারা ধর্ষন করেই থেকে থাকেনি,সেই মেয়েদের
বুকের স্তন ও গালের মাংস কামড়াতে কামড়াতে রক্তাক্ত করে দেয়,মাংস তুলে
নেয়। মেয়েদের গাল,পেট,ঘাড়,বুক,পিঠ ও কোমরের অংশ তাদের কামড়ে রক্তাক্ত হয়ে
যায়। এভাবে চলতে থাকে প্রতিদিন।
যেসব মেয়েরা প্রাথমিকভাবে প্রতিবাদ করত তাদের
স্তন ছিড়ে ফেলা হত,যোনি ও গুহ্যদ্বা্রের মধ্যে বন্দুকের নল,বেয়নেট ও
ধারালো ছুরি ঢূকিয়ে হত্যা করা হত। বহু অল্প বয়স্ক বালিকা উপুর্যুপুরি ধর্ষণে
নিহত হয়। এর পরে লাশগুলো ছুরি দিয়ে কেটে বস্তায় ভরে বাইরে ফেলে দেয়া হত। হেড
কোয়ার্টারের দুই,তিন এবং চারতলায় এই্ মেয়েদের রাখা হত,মোটা রডের সাথে চুল
বেঁধে। এইসব ঝুলন্ত মেয়েদের কোমরে ব্যাটন দিয়ে আঘাত করা হত প্রায়
নিয়মিত,কারো কারো স্তন কেটে নেয়া হত,হাসতে হাসতে যোনিপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হত
লাঠি এবং রাইফেলের নল।
কোন কোন সৈনিক উঁচু চেয়ারে দাঁড়িয়ে উলঙ্গ মেয়েদের
বুকে দাঁত লাগিয়ে মাংস ছিড়ে নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ত,কোন মেয়ে প্রতিবাদ করতে
গেলে তখনই হত্যা করা হত। কোন কোন মেয়ের সামনের দাঁত ছিল না,ঠোঁটের দু’দিকের
মাংস কামড়ে ছিড়ে নেয়া হয়েছিল,প্রতিটি মেয়ের হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে থেতলে
গিয়েছিল লাঠি আর রডের পিটুনিতে। কোন অবস্থাতেই তাঁদের হাত ও পায়ের বাঁধন
খুলে দেয়া হত না,অনেকেই মারা গেছে ঝুলন্ত অবস্থায়।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনের একজন সুবেদার খলিলুর রহমানের অভিজ্ঞতা এইরকম :
মেয়েদের ধরে নিয়ে এসে,ট্রাক থেকে নামিয়ে সাথেই সাথেই শুরু হত ধর্ষন,দেহের
পোশাক খুলে ফেলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে ধর্ষণ করা হত। সারাদিন ধর্ষণের পরে এই
মেয়েদের হেড কোয়ার্টার বিল্ডিং এ উলঙ্গ অবস্থায় রডের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখ
হত,এবং রাতের বেলা আবারো চলত নির্যাতন।
প্রতিবাদ করা মাত্রই হত্যা করা
হত,চিত করে শুইয়ে রড,লাঠি,রাইফেলের নল,বেয়নেট ঢুকিয়ে দেয়া হত যোনিপথে,কেটে
নেয়া হত স্তন। অবিরাম ধর্ষণের ফলে কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলেও থামত না ধর্ষণ।
ডোম পরদেশীর বর্ণনা থেকে নিচের ঘটনাগুলি জানা যায় :
২৭ মার্চ,১৯৭১,ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালের লাশ ঘর থেকে লাশ ট্রাকে তুলতে গিয়ে
একটি চাদর ঢাকা ষোড়শী মেয়ের লাশ দেখতে পান পরদেশী। সম্পূর্ণ উলঙ্গ লাশটির
বুক এবং যোনিপথ ছিল ক্ষতবিক্ষত,নিতম্ব থেকে টুকরো টুকরো মাংস কেটে নেয়া
হয়েছিল।
২৯ মার্চ শাখারীবাজারে লাশ তুলতে গিয়ে পরদেশী সেখানকার প্রায় প্রতিটি ঘরে
নারী,পুরুষ,আবাল বৃদ্ধ বনিতার লাশ দেখতে পান,লাশগুলি পচা এবং বিকৃত
ছিল।
বেশিরভাগ মেয়ের লাশ ছিল উলঙ্গ,কয়েকটি যুবতীর বুক থেকে স্তন খামচে,খুবলে
তুলে নেয়া হয়েছে,কয়েকটি লাশের যোনিপথে লাঠি ঢোকান ছিল। মিল ব্যারাকের ঘাটে ৬
জন মেয়ের লাশ পান তিনি,এদের প্রত্যেকের চোখ,হাত,পা শক্ত করে বাঁধা
ছিল,যোনিপথ রক্তাক্ত এবং শরীর গুলিতে ঝাঝরা ছিল।
ঢাকা পৌরসভার সুইপার সাহেব আলীর ভাষ্যে ২৯ মার্চ তার দল একমাত্র মিটফোর্ড
হাসপাতাল থেকে কয়েক ট্রাক লাশ উদ্ধার করে। তিনি আরমানীটোলার এক বাড়িতে দশ
এগারো বছরের একটি মেয়ের লাশ দেখতে পান,সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত,জমাট বাঁধা
ছোপ ছোপ রক্ত সারা গায়ে,এবং তার দেহের বিভিন্ন স্থানের মাংস তুলে ফেলা
হয়েছিল। ধর্ষণ শেষে মেয়েটির দুই পা দু’দিক থেকে টেনে ধরে নাভি পর্যন্ত ছিড়ে
ফেলা হয়েছিল।
৩০ মার্চ ঢাবির রোকেয়া হলের চারতলার ছাদের উপরে আনুমানিক ১৯ বছরের একটি
মেয়ের লাশ পান সাহেব আলী,যথারীতি উলঙ্গ। পাশে দাঁড়ানো একজন পাক সেনার কাছ
থেকে তিনি জানতে পারেন মেয়েটিকে হত্যা করতে ধর্ষণ ছাড়া অন্য কিছু করার
দরকার পড়েনি,পর্যায়ক্রমিক ধর্ষণের ফলেই তার মৃত্যু ঘটে। মেয়েটির চোখ ফোলা
ছিল,যৌনাঙ্গ এবং তার পার্শ্ববর্তী অংশ ফুলে পেটের অনেক উপরে চলে
এসেছে,যোনিপথ রক্তাক্ত,দুই গালে এবং বুকে কামড়ের স্পষ্ট ছাপ ছিল।
’৭১ এ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে পাকবাহিনীর একটি বিরাট ক্যাম্পে পরিণত করা
হয়। এখানে বন্দী ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী মঞ্জিলা এবং তার দুই
বোন মেহের বানু এবং দিলরুবা।
। তাদেরকে আরো ৩০ জন মেয়ের সাথে একটি কক্ষে
তালাবদ্ধ করে রাখা হয়,সার্বক্ষণিক প্রহরায় থাকতো দুজন সশস্ত্র গার্ড। এই
মেয়েগুলোকে ওই ক্যাম্পের সামরিক অফিসারদের খোরাক হিসেবে ব্যবহার করা
হত। প্রতি সন্ধ্যায় নিয়ে যাওয়া হত ৫/৬ জন মেয়েকে,এবং ভোরবেলা ফিরিয়ে দেয়া হত
অর্ধমৃত অবস্থায়। প্রতিবাদ করলেই প্রহার করা হত পূর্বোক্ত কায়দায়।
একবার
একটি মেয়ে একজন সৈনিকের হাতে আঁচড়ে দিলে তখনই তাকে গুলি করে হত্যা করা
হয়। এই বন্দীশালায় খাবার হিসাবে দেয়া হত ভাত এবং লবন।
সাংবাদিক রণেশ মৈত্রের একটি অনুসন্ধান থেকে জানা যায়,রংপুর ক্যান্টনমেন্ট
এবং রংপুর আর্টস কাউন্সিল ভবনটি নারী নির্যাতনের জন্য ব্যবহার করা হত। এখানে
বন্দী ছিল প্রায় একশ মেয়ে এবং প্রতিদিনই চলত নির্যাতন,যারা অসুস্থ হয়ে পড়ত
তাদের হত্যা করা হত সাথে সাথেই। স্বাধীনতার পরে আর্টস কাউন্সিল হলের পাশ
থেকে বহুসংখ্যক মহিলার শাড়ি,ব্লাউজ,অর্ধগলিত লাশ,এবং কংকাল পাওয়া
যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়,রংপুর থেকে প্রায় তিনশ/চারশ মেয়েকে
ঢাকা এবং অন্যান্য স্থানে পাচার করে দেওয়া হয়,তাদের আর কোন সন্ধান মেলেনি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যান বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের একটি গবেষণায়
জানা যায় রাজশাহীর জুগিসশো গ্রামে মে মাসের কোন একদিন পাকবাহিনী ১৫ জন
মহিলাকে ধর্ষণ করে এবং অন্যান্য নির্যাতন চালায়। এ অঞ্চলের ৫৫ জন তরুনীকে
ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। বাঁশবাড়ীয়া গ্রামে পাকবাহিনী প্রায় দেড়শো জন বিভিন্ন
বয়সী মেয়েকে ঘর থেকে বের করে প্রকাশ্যে ধর্ষণ করে। এদের মধ্যে ১০ জনের তখনই
মৃত্যু হয়।
একই গবেষণা থেকে বাগমারা গ্রামের দেলজান বিবির কথা জানা যায়। সময়টা ছিল
রমজান মাস,দেলজান বিবি রোজা ছিলেন। হঠাৎ পাকসেনারা ঘরে ঢুকে পড়ে এবং ধর্ষণ
শুরু করে। একই গ্রামের সোনাভান খাতুনকেও রাস্তার মধ্যে প্রকাশ্যে ধর্ষণ করা
হয়।
১০ ডিসেম্বর যশোরের মাহমুদপুর গ্রামের একটি মসজিদ থেকে এগারোটি মেয়েকে
উলঙ্গ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
তাদেরকে যুদ্ধের সময় প্রায় সাত মাস ধরে
মসজিদের ভেতরেই ধর্ষণ এবং বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করা হয়।
যশোর ক্যান্টনমেন্টে চৌদ্দ দিন বন্দী থাকা হারেছ উদ্দিনের ভাষ্যে জানা যায়
ক্যান্টনমেন্টে ১২ থেকে ৫০ বছর বয়সের ২৯৫ জন মেয়েকে আটক রাখা হয়েছিল,তাদের
উপর নির্যাতন চলত প্রতি রাতেই। হারেছ উদ্দিনের সেলটি বেশ খানিকটা দূরে
থাকলেও নির্যাতনের সময় মেয়েদের চিৎকার তিনি শুনতে পেতেন। প্রতিদিন বিকেলে
একজন সুবাদার এসে এসব কে কোথায় যাবে তার একটি তালিকা বানাত,সন্ধ্যা হলেই এই
তালিকা অনুযায়ী মেয়েদের পাঠানো হত। অনেক সময় খেয়াল খুশিমত বাইরে নিয়ে এসে
তাদের এলোপাথাড়ি ভাবে ধর্ষণ করা হত।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মাটিরহাট গ্রামের ফুলজান যুদ্ধের সময় আট মাসের
গর্ভবতী ছিল,তার বাবা মায়ের সামনেই তাকে কয়েকজন সৈনিক উপুর্যুপুরি ধর্ষণ
করে। তার গর্ভের সন্তানটি মারা যায়।
কুমারখালির বাটিয়ামারা গ্রামের মোঃ নুরুল ইসলামের বর্ণনায় একটি আপাত-অদ্ভুত
ঘটনা জানা যায়। ঐ এলাকার একজন রাজাকারকে একদিন দুজন পাকসেনা মেয়ে যোগাড় করে
দিতে বললে সে তাদেরকে তার বাড়ি নিয়ে যায়,খবর পেয়ে বাড়ির সব মেয়ে পালিয়ে
গেলেও তার বৃদ্ধা মা বাড়িতে থেকে যান। সৈনিক দু’জন রাজাকারটির বুকে রাইফেল
ঠেকিয়ে পালাক্রমে তার মাকে ধর্ষণ করে।
এর পরে রাজাকারটির আর কোন খোঁজ পাওয়া
যায়নি।
নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে কম যায়নি বিহারীরাও। নৃশংসতায় তারা কোন কোন সময়
ছাড়িয়ে গিয়েছিল পাকবাহিনীকেও। ২৬ মার্চ ’৭১ মীরপুরের একটি বাড়ি থেকে
পরিবারের সবাইকে ধরে আনা হয় এবং কাপড় খুলতে বলা হয়। তারা এতে রাজি না হলে
বাবা ও ছেলেকে আদেশ করা হয় যথাক্রমে মেয়ে এবং মাকে ধর্ষণ করতে।
এতেও রাজি না
হলে প্রথমে বাবা এবং ছেলে কে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয় এবং মা মেয়ে
দুজনকে দুজনের চুলের সাথে বেঁধে উলঙ্গ অবস্থায় টানতে টানতে ক্যাম্পে নিয়ে
যাওয়া হয়।
খুলনার ডাঃ বিকাশ চক্রবর্তীর কাছ থেকে জানা যায়,সেখানকার পাবলিক হেলথ কলোনি
এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্থাপিত ক্যাম্পে বিপুল সংখ্যক মেয়েকে(প্রায় সব
বয়সের) আটকে রেখে পূর্বোক্ত কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়। যুদ্ধ শেষে
ক্যাম্পের একটি কক্ষ থেকে কয়েকটি কাঁচের জার উদ্ধার করা হয়,যার মধ্যে
ফরমালিনে সংরক্ষিত ছিল মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন অংশ। অংশগুলি কাটা হয়ে ছিল
খুব নিখুঁতভাবে।
তথ্যসূত্র :
১. ৭১-এর নারী নির্যাতন,কাজী হারুনুর রশীদ সম্পাদিত
২ .বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ দলিলপত্র,অষ্টম খন্ড,হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত
এসকল কুত্তার বাচ্চাদের জন্য আজ হুমায়ুন আহমেদ স্যারের "জোছনা জননীর গল্প" বইটার লিঙ্ক দিলাম
http://www.mediafire.com/?vkrho3ds22velzi
আমার আত্মা ক্ষত বিক্ষত বাংলাদেশীএই কুকুরদের আচরনে।
হে মহান শহীদেরা তোমাদের পবিত্র আত্মার কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থী।
সরি আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে। কেন যেন চোখ গোলা হয়ে আসছে।
লেখাটা লেখতে গিয়ে কতবার যে চোখ মুছেছি বলতে পারবনা। আমার মা আমার পাশে ছিলো বলল বেটা ছেলে কি এমন লিখছিস যে মেয়েদের মত কাঁদতে হবে?
মা একটু পড়ে আর বসে থাকতে পারলোনা।
পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জলন্ত
ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,
মতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
এই বাংলায়
তোমাকেই আসতে হবে, হে স্বাধীনতা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।