আমরা অপমান সইবনা ভীরুর মত ঘরের কোনে রইব না...। মাগো ভাবনা কেন আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্
গত ৭ দিন রোকেয়া মানে আমার হেল্পিং হ্যান্ড বুয়া আসে নাই। অনেকবার ফোন দিলাম কিন্তু ফোন আনরিচেবল বলছে। কাজের একটু অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু একদম অচল হয়ে আছি তা নয়।
ছুটির দিনে জমানো কাজ গুলো করে ফেললাম।
৮ দিনের মাথায় মানে রোকেয়ার আগমন । জানতে চাইলাম অসুখ হয়েছিলো নাকি?
রোকেয়া: নাগো আফা শইল্লের অসুখ না মনের অসুখ।
আমি: সেটা আবার কিরকম রোকেয়া?
রোকেয়া: এই আর কি আফা রোজকাইর মামলা।
আমি: খুলে বলোতো রোকেয়া?
রোকেয়া: কান্না শুরু করে দিয়ে...........আমার জামাইটা যে বাদাইম্মা জানেইতো
আমি: আবার কি করলো সে?
রোকেয়া: নতুন রোগে ধরছে হেরে।
নিশা লয়। আর আমারে মাইর দেয়। সেইদিন মুবাইল বেইচ্চা দিছে। আমি মুবাইলের কথা জিগাইলে আমারে মাইর দিছে।
আমি: মোবাইল বিক্রি করে দিয়েছে? ও সেজন্যই তোমাকে মোবাইলে পাইনি।
রোকেয়া: হ আফা ।
আমি: তো সে কি ধরনের নেশা করে?
রোকেয়া: সানজু খায়।
আমি: সানজু? সেটা আবার কি?
রোকেয়া: আরে আফা সানজু চিনেন না?
আমি: না? কখনও শুনিনি।
রোকেয়া: আরে আফা সানজু হইলো গিয়া গানজা। ঐ যে শিগারেটের মতনই ধুয়া মাইরা যে টান মারে।
সানজু টান মাইরা আহে আর যেইদিনকা মেজাজ মরজ্জি ঠিক থাকে সেইদিনকা কত্ত ভালু মানুষ আর যেইদিনকা মরজ্জি ভালু থাকে না সেইদিনকা আমানুষ হইয়া যায়। হুদাই গাইল পারে আর মাইর দেয় । আফাগো সেইদিন আমার মাইয়াডারেও ছাড়ে নাই কয় মাইয়া হইছোস ক্যা ? পোলা হইতারলারি না। কইয়া মাইয়াডারে এমুন কইরা মাইর দিল কি আর কমু। আমি পায়ে ধইরা কইলাম রাবুর বাপ ছোডু মানুষ মাইয়া আমার মইরা যাইবলো।
এমুন কইরা মাইর না । মাফ দেও। তহন ধইরা আমারে পিডাইলো। শইললের বেদনায় এই কইদিন কাহিল আছিলাম। হের লাইগ্গা আইতারি নাইগো আফা।
আমি: তোমার জামাই তোমাকে যে মারে তুমি কিছু বলো না?
রোকেয়া: কি কমু আফা সবই মাইয়াগোকপাল। কপালডাই খারাপ হের উপরে মাইয়া হইছে।
আমি: এইটা কোন কথানা রোকেয়া। তোমাকে মারলে তুমি পুলিশে জানবে। আর মেয়ে হয়েছে তাতে তোমার কি দোষ?
রোকেয়া: ফিক ফিক করে হেসে কি কন আফা? জামাইরে কেউ পুলিশে দেয়? জানেন না জামাইর পায়ের তলাত আমগোর বেহেশতো?
*** দেখেনতো সবাই বেহেশত দেখা যায়? আমিতো কিছু দেখি না?
আমি: তোমার জানায় ভুল আছে।
তুমিতো কোন অন্যায় করো নাই তাহলে অযথা তোমাকে মারলে তুমি তার প্রতিকার করবে না?
রোকেয়া: কি যে কননা আফা? হেরেতো আমি ভালবাসি। হেয়ত মনের দুক্কে আমারে মারে। একটা পোলা হইলে আর আমারে মারবো না দেইখ্খেন।
আমি: তোমার যে ছেলে হবে তা তুমি কি করে আগে থেকে বলবে?
রোকেয়া: এইবার আমি পীরের তামিজ লমু।
আমি রোকেয়াকে আর ওর স্বামীকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।
একবার রোকেয়াকে খুব বোঝানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু ও বললো আফাগো আপনারা এইগুলা করতে পারবেন কিন্তু আমরা পারুম না। আমরা একলা থাকলে হাজার শকুনে ছিড়া খাইব। সানজু খাইয়া মারুক তাও ভালা।
আবার ভাবি ওকে বুঝিয়ে কি হবে? আমাদের কি এত শক্তি আদৌ আছে?
মাঝেমাঝে আমি যখন রোকেয়াকে বুঝাই ও আমাকে বলে আফা ভাইয়া যদি আফনের লগে এরাম করে আফনে কি করতেন?
শুনে আমি চুপ করে থাকি। আমি বলি দূর রোকেয়া কি যে বলনা।
তোমার ভাইয়া এমন না? পরক্ষণে কেঁপে উঠি ভাবি তাইতো আমার সাথে এমন হলে আমি কি করতাম? চুপ করে থাকতাম? প্রতিবাদ করতাম ? ভয় পেতাম?
হায়রে না জানি কত মেয়ে এভাবে প্রতিনিয়ত তার ঘরের মানুষের হাতে মার খাচ্ছে? কয়জন আর প্রতিবাদ করে তথাকথিত লোকলজ্জার ভয়ে ।
দুনিয়ার সব ছেলেরাই যে খারাপ তা কিন্তু নয়। তবে আমাদের চুপ করে থাকাটা মাঝেমাঝে একটু বেশী হয়ে যায়। তাই না?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।