আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁদে মানব কাঁদে প্রকৃতি

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে মায়ের ভাষা বাংলায় মাতৃভূমির কথা বলি।

নিষ্ঠুর এই ধরনী তোমায় কাদাঁয় প্রতি পদে পদে; সদ্য ভূমিষ্ট শিশুও কাঁদে পৃথিবীর ভয়ার্ত রূপ দেখে। ক্ষুধা নিবৃত্তে পারে না শিশু মায়ের ভাষায় কথা বলতে কাদঁলে পারে বুঝে নেয় মা মনে হয় ছেলের ক্ষিধে লেগেছে। ছেলে বড় হলে বাড়ে জ্বালাতন দুস্টমী ও যায় বেড়ে; স্কুলেতে যাবে না শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে অমনি মা তখন পিটুনী দেয় ধরে। চোখে জল নিয়ে স্কুলেতে যায় ক্লাশে গিয়ে পারে না পড়া; পন্ডিত মশাই অমনি ধরে জোরে দেয় কান মলা।

ছেলেটি তখন উচ্চ স্বরে ভ্যাঁ-ভ্যাঁ করে কাদেঁ মনে হয় যেন বর্ষা নেমেছে চোখের আকাশ বেয়ে। গুরুর সমীপে করে নিবেদন হবে না ভুল আর কোন দিন দিচ্ছি কথা, আসব করে, পড়া প্রতিদিন। কখন জননীর অশ্রু ক্ষরণ হয় সন্তানের কঠিন বিমারী হলে; বাবাতো সেদিন কেঁেদই ফেলেছিল চাকুরী হতে অবসর নেবার কালে। বড় ভাইতো গুমরে কাঁদে মাস্টার্স পাশ করে চাকুরী না পেয়ে; দিদিকে দেখি ফুপিয়ে কাঁদছে বোধ হয় সংসারে অশান্তি হয়েছে। মেয়েরা নাকি বিদায় কালে না কেদেঁ পারে না চুপ থাকতে ছোট বোনতো বিদায় বেলায় বাবা-মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

এ ধরায় শুধু মানব কাঁদে না কাদেঁ প্রকৃতি ও মাঝে মাঝে; চৈত্রের খরদাহে চৌচির মাটি কাঁদে দু’ফোটা পানির জন্য। মরু প্রান্তর সে-ও কাঁদে সবুজ শ্যামলিমা নেই বলে; বণ্যপ্রাণী তারাও কাদেঁ কাটা হয় যখন বৃক্ষ অবাধে। মর্মর পাতার ছন্দ পতনে কখন গহীন অরন্যে কেঁদে ওঠে পূর্নিমার চাঁদের জন্য নাকি আমবস্যার অন্ধকার ও কাঁদে। শুনেছি নাকি যৌবন ও কাঁদে নিঃসঙ্গ জোৎস্না বিহীন রাতে। প্রগাঢ় প্রেমে পড়লে ভাটা দু’টি হৃদয় কেঁদে ওঠে কবে জানি আসবে জোয়ার দু’জনে সেই অপেক্ষায় থাকে।

সেদিন বিকালে তিন বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম বোটানিক্যাল গার্ডেনে সেখানে দেখি একটি যুবতি কান্নায়রত গাছের আড়ালে; বুঝলাম বোধ হয় পাশের ছেলেটি কথা রাখেনি তার সাথে। হঠাৎ সেদিন নিউমার্কেটের করিডোরে দেখা সেই মেয়েটির সাথে কলুষিত সমাজ যাকে পাঠিয়েছে নিষিদ্ধ পল্লীতে। জানতে চাইলাম কেমন আছ? উত্তর দিতে গিয়ে আচল দিয়ে মুখ ঢেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সে দিন প্রভাতে শুনতে পেলাম সাগরে নাকি নিম্নচাপের সৃস্টি হয়েছে সন্ধ্যা হতে-ই ইথারে ভেসে আসে হ্যারিকেন নাকি আঘাত হেনেছে সমুদ্র উপকুলে। প্রলয়ংকারী এই জল্লোচ্ছাসে নাকি ভেসে গেছে লক্ষাধিক প্রাণ পেপার খুলতেই দেখি ”কাঁদছে দেশবাসী - জাতি শোকে মুহ্যমান”।

আকস্মিক এক শোকের বার্তা ভেসে এলো বাতায়ন ভেদ করে, শুনতে পেলাম এক তরতাজা তরুন যুবক পিস্ট হয়েছে ঘাতক ট্রাকের তলে; উৎসুক মন ছুটে চলে যায় স্ব-চক্ষে দেখার জন্য-, সে আমার বাল্যবন্ধু গিয়ে দেখি সেখানে। শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে এসে অশ্রুঞ্জলি দেয় কত প্রিয় স্বজন। আমার দু’নয়ন বেয়ে অশ্রু ঝরে আর মনে পড়ে তার কথা স্মৃতিতে বারে বারে। সভ্যতার উষ্ণ পরশে আমি হয়েছি পাপিষ্ট নরাধম লু-হাওয়ায় বিদ্ধ আমি অনুশোচনায় দগ্ধ; বুঝতে পেরে নিজের ভুল , আমি নিজেই অনুতপ্ত। চোখের মনি কোঠায়, অজান্তেই পানি এসে যায় সরল সঠিক পথের সন্ধান প্রার্থী হয়ে হাজির হয় যখন বিধাতার দরবারে।

ক্ষণস্থায়ী এ বিশ্বলয়ে দেখ কাঁদিছে বিশ্ববাসী জন্মিলে কাঁদিতে হয় এ ধরার এই রীতি। সুখী কাঁদে, দুঃখী কাঁদে, ধনী গরীব সকলে কাঁদে প্রতি পলে প্রতি ক্ষনে; না করিলে পূর্ণ্য ভবে পরকালে ও কাঁদিতে হবে যুগে যুগে মহাজ্ঞানীরা প্রচার করেছেন এই মহা সত্য বাণী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।