অন্তহীন আমাদের পথচলা,জীবনের বাঁকে-বাঁকে গতির পরিবর্তন। আর চাওয়া - পাওয়ার অসম সমীকরণ। এই নিয়েই আমাদের জীবন গত কয়েকদিন ধরে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে দেশে সরব আলোচনা চলছে । বিভিন্নজন বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন । প্রবল উত্সাহে তাঁদের কথা শুনেছি ।
তবে যা কিছুই শুনে থাকি না কেন তাতেই ছিল রাজনীতির ছোঁয়া । এই বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলের চরম আগ্রহ ও সরকারের চরম অনাগ্রহও চোখে পড়ার মত বিষয় ।
যাক সেসব কথা আমার ভাবনাগুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই আজকে এখানে বসা ।
সিলেট অঞ্চলের মানুষ আমি । বড় হয়েছি অপরূপ রূপের প্রকৃতি দেখে ।
প্রকৃতির দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বৈচিত্রে ভরা এই অঞ্চল । আমাদের আশেপাশে হাওড়,পাহাড়,নদী,সমতলের অপরূপ লীলাভূমি । এই লীলাভূমির অলংকার হচ্ছে সুরমা,কুশিয়ারা নদী । এই নদী দুইটির উত্পত্তি স্থল ভারতের মণিপুর রাজ্যের ইমপল নামক স্থান । ওখানে ওই নদী দুইটির সম্মিলিত নাম বরাক ।
সেই বরাক নদীর টিপাইমুখে ভারত নাকি সেচ ও বিদ্যুত্ প্রকল্পের জন্য বাঁধ দিচ্ছে । আমার আশংকাটা এখানেই ।
আমরা ফারাক্কা দেখেছি,তিস্তা নদীতে দেয়া বাঁধের অবস্থাও দেখেছি। যদি এমন অবস্থা হয় তবে তো আমার শৈশবের নদী সুরমা হারিয়ে যাবে,কুশিয়ারা হয়ে পড়বে যৌবনহীন থুরথুরে বুড়ি। আর বাংলাদেশের সবচে প্রমত্তা নদী মেঘনা যাবে মরে।
আমার এই প্রেয়সী নদীগুলো যদি হারিয়ে যায় তবে আমরা বাঁচব কেমন করে ? আমাদের হাকালুকি,মকা,টাঙ্গুয়ার হাওড় হয়ে পড়বে শ্রীহীন পত্রঝরা বৃক্ষের মত । এক কথার পুরো সিলেট বিভাগের জীবনধারণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর পড়বে চরম আঘাত । এসব আমার কেমন করে সহ্য করবো ?
তারপরেও কথা আছে ,যে জায়গায় টিপাইমুখের বাঁধটি হচ্ছে সেই জায়গাটি বিশ্বের সবচে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকাগুলোর একটি । যদি অত্যধিক পানি ধারণ করা অবস্থায় ওই বাঁধ ভূমিকম্পের কবলে পড়ে তবে তো এই সিলেটকে ধুয়ে নিয়ে যাবে । একটু ভাবার সময়ও দেবে না ।
ভারত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র,প্রতিবেশী । আশা করি ভারত এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে । আর আমাদের সরকার এই বিষয়গুলো ভারতকে বুঝাতে সক্ষম হবে । অন্যথায় বিপদ আসন্ন । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।