স্বেচ্ছাচার না করা গেলে তারে স্বাধীনতা বলে না। স্বাধীনতা মানেই স্বেচ্ছাচারের অধিকার।
শিশুদের জন্য যেমন পর্নোগ্রাফি সহ অনেক কিছুই ১৮ না হইলে নিষিদ্ধ তেমনি হিন্দি ভাষার ‘ডোরেমন’ নিষিদ্ধ করলে সমস্যা কী? বাংলায় ডাব করা ডোরেমন রপ্তানী করতে বললেই হয় হিন্দি ভাষাভাষী ব্যবসায়ীদের।
যারা মাতৃভাষা শিখার আগেই ভিন্ন ভাষা শিখা ফালায় তাদের জন্য ওই ভাষাই মাতৃভাষা। যেহেতু আমাদের একটা রাষ্ট্রভাষা আছে সুতরাং যতদিন না হুমকি হইয়া দাঁড়াইল ততদিন পর্যন্ত ইংরেজি, জাপানি, হিন্দি, উর্দু বা বর্মী ভাষা আমাদের জন্য সমস্যা না।
কিন্তু এখন বাচ্চাহিন্দি একটা বড় সমস্যা বাংলা ভাষার জন্য।
হিন্দি ডোরেমন বাংলা ভিন্ন অন্য ভাষার জন্য আরো বড় সমস্যা। কোন জিনিস কত আসমান থিকা নাযেল হইছে তাতে কী যায় আসে? পর্নোগ্রাফি কি খারাপ? কিন্তু শিশুদের আমরা দেখতে দিমু না, ওইটা আইনপ্রণেতারা, দেশব্যবসায়ীরা ঠিক করছে। পর্নোগ্রাফি যে কারণে শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় ঠিক একই কারণে শিশুদের কাছে মদ বা সিগারেট বেচা নিষিদ্ধ হয় না। একেকটার জন্য একেক কারণ খেলা করে।
আপাতত বাংলাদেশে আধিপত্যবাদী বাংলা ও নিগৃহীত অন্য ভাষাগুলার স্বার্থে হিন্দি ডাব ডোরেমন নিষিদ্ধ করা উচিত। কিন্তু আমি বলবো হিন্দি ভাষাভাষী বাচ্চালোগদের জন্য ইনডিয়ায় বাংলা ডোরেমন দেখা বাধ্যতামূলক করা ঠিক হবে না। সব জায়গায় সকল ভাষা আগ্রাসনবাদীদের ঠেকান।
২.
হিন্দুস্তান জাপানি ভাষার ডোরেমন চালাইতে পারতো কিন্তু তারা তা চালায় নাই। সেই রকম দিলে ফরিদ সাহেবের তরিকায় হিন্দুস্তানি বাচ্চারা মাতৃভাষা হিন্দিকে অবহেলা না কইরা আলবৎ জাপানি ভাষামাধুরী শিখতে পারতো।
হিন্দুস্তানের ব্যবসায়ীদের পথই মাড়াইতে চাইতেছি আমরা, দেশী ভাষায় বিদেশী মাল। বিদেশী ভাষা শিক্ষা এক জিনিস আর বিদেশী ভাষায় কুক্ষিগত হইয়া যাওয়া ভিন্ন জিনিস। বাড়িঘরে সারাক্ষণ ভিন্ন ভাষায় কথা বলা বাচ্চা মোটেই খারাপ কিছু না। টেলিভিশনের ভাষায়ই তো কথা বলে ওরা। হিন্দিভাষী পিপল কি খারাপ? নয়।
বাচ্চারা সকলেই যদি চায় মাতৃভাষারে অবহেলা কইরা হিন্দিতেই কথা কইবে আপত্তির কী আছে। শিশুর নিজের মুখ শিশুর নিজের ভাষা।
কিন্তু এইটা খালি বাচ্চাদের ব্যাপার না। যে অর্থে পর্নোগ্রাফি বা মদ খাওয়া বাচ্চাদের ব্যাপার না সে অর্থেই বাজার ব্যবস্থা গোয়া মারা খাওয়ার মধ্য দিয়া বাচ্চাদের হিন্দি ভাষায় বুৎপত্তি অর্জন করতে হবে তা আপত্তির ব্যাপার।
যে কারণে উর্দুরে আমরা নেই নাই বিদেশী ভাষা শিক্ষার সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সেই একই কারণে হিন্দি ভাষার সাম্রাজ্যবাদও ঠেকানোর আহ্বান জানানো যাইতেছে।
জয় বাংলা! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।