অনেকগুলো পোস্ট ড্রাফটে নিলাম বিশেষ কারণে বাংলাদেশে বহুদিন ধরেই অকাজে সেমিনার হচ্ছে। তাতে কাজের চেয়ে কথা হয় বেশী আর তারচেয়ে বেশী খানা খাইদ্য । মানুষের কোন উপকার তাতে হয় না। আসুন আপনাদের নিয়ে যাই একটী কাল্পনিক সেমিনারে ।
সেমিনারের টপিকঃ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে কলাগাছের ভূমিকা এবং এর আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট
প্রথমেই দেখা যাবে লোকজন সময় মত আসবে না,কারণ সময়মত আসলে দাম কমে যেতে পারে।
আধা ঘন্টা পরে অথিতিরা এসে হাজির হতে শুরু করবেন ভাবখানা এমন এই সেমিনারে এসে আমি জাতিরে ধন্যকরে দিলুম, তোরা সব আমার পায়ে ধরে সেলাম কর। তারপরে শুরু হবে প্রেজেন্টেশন,ফ্রধাণ অথিতি তখনো এসে পোছুবেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রেজেন্টার বা অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এর অন্তত একজন হবেন তোতলা। এইটা বোধহয় একটা আবশ্যিক যোগ্যতা। বিষয়বস্তুর সাথে কথার বা ছবির মিল থাকবে না, ফলে লোকজন হাই তুলতে থাকবে এবং ঘুমিয়েও যাবে কেউ কেউ।
এদিকে বক্তারা তুমুল স্বরে বলতে থাকবেন , কিভাবে উগান্ডা থেকে এদেশে এলো কলাগাছ। কলাগাছ নিয়ে মুঘল সম্রাটরা কিছু করে থাকলে তাও চলে আসবে আতেল বক্তাদের কন্ঠে। কলাগাছের ভেলায় চড়ে বেহুলা কিছু করেছিলো কিনা তাও জান্নান হবে। শ্রোতাদের নাক ডাকার শব্দে তারা ভ্রু কিঞ্চিত কুঞ্চিত করলেও দমে যাবেন না। কলের গান চলবে চলছে।
এক পর্যায়ে আরেক বক্তা আসবেন , তারপরে আরেকজন। অধিকাংশই একে অন্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন এবং কথা বলার সময় সম্ভাব্য বক্তারা মাথা নাড়বেন । একসময় শ্রোতাদের ত্রাহিমধুসূদন অবস্থা শুরু হলে আশীর্বাদ হয়ে আসবে মাগরিবের আযান। কারণ অধিকাংশ সেমিনার শুরু হয় বিকালে।
ফাকে ফাকে কেউ ছলাকলার বিভিন্ন ঘটনা বলে বৃথা ভাড়ামোর চেষ্টা চালাবেন।
তাশুনে পাবলিক হাসার চেষ্টা করলেও যক্ষারোগীর কাশীর মতন শোনাবে। তারপরে শুরু হবে উপস্থিত দর্শকদের সাথে মতবিনিময়। তাতে সুযোগ পেয়ে একেকজন বিরাট ইতিহাস শোনাবে। আসল প্রশ্নটা যতটা পারে দেরিতে করবে। দর্শক মহোদয় নিজে যে কত্তবড় পন্ডিত, ঐ বিষয়ে এন্ড তাকে বক্তা হিসেবে না নেয়া যে কত বড় ধৃষ্টতা তাই বুঝিয়ে দেবে হাবেভাবে।
প্রধাণ অথিতিও চলে আসবেন এই অবসরে। সাধারণত তিনি হবেন বড় কোন নেতা,আমলা বা অধ্যাপকজাতীয়। তিনি গদবাধা কিছু কথা বলবেন। কথাগুলা কলাগাছ নিয়ে সেমিনারে জন্য যেমন প্রযোজ্য তেমনি কারো শোকসভাও চালিয়ে দেয়া যাবে। প্রধাণ অথিতি বলে কথা।
তিনি জানেন না এমুন কিছু আছে নাকি?
তারপরে কি হয় সবাই জানেন। আর লিখতে ইচ্ছা করে না।
===========================
এতো কথা না বলে আমরা যেদিন কাজ করতে লাগবো সেদিনই আসবে জাতীয় উন্নতি। এতো সেমিনারের অর্থ গরিব মানুষের পিশনে ব্যয় করলে এতোদিনে তাও কিছু ফল আসতে পারত। আসুন, 'কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হই।
'
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।