মহসিন হোসেন
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, টিপাইমুখ নিয়ে যারা দেশবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন তারা বাংলাদেশের মন্ত্রী নাকি ভারতে মন্ত্রী তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আগামিতে তাদের রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে বিচার করা হবে।
তিনি অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেয়ারবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে শেয়ার বাজার থেকেই লুটের টাকা হালাল করার সুযোগ দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসকাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
“ট্রানজিট সমস্যা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ইলেকট্রনিক ভোটিং পদ্ধতি, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, পানি সমস্যা এবং দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সমস্যা শীর্ষক” এ গোলটেবিলের আয়োজন করে জিয়া কালচারাল ফাউন্ডেশন।
সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শাহ নুরুল কবির শাহীন।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারত ট্রানজিটের নামে করিডোরের আবদার পূরণ করে নিয়েছে।
আল্লাহ সুযোগ দিলে এটা রিভিউ করা হবে। এই করিডোর বাংলাদেশের স্বার্থে না হলে তা বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জামায়াতকে সাথে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলো।
৯৬ সালে দুই দল বা জোটের মধ্যে যে দূরত্ব ছিলো আজকে তা কোনো ক্রমেই কমেনি, বরং বৃদ্ধি হয়েছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি দলীয় সরকারের অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাবো না।
তিনি অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের কারণে দেশ একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইভিএম পদ্ধতি নিরাপদ নয়।
সারা বিশ্বে এই মেশিন নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। তারা বলেছে এই ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ত্রুটিমুক্ত নয়। এটা দিয়ে ফলাফল পাল্টে দেয়া সম্ভব। আমরাও বলি এটা বিশ্বাসযোগ্য পদ্ধতি নয়। তাই আমরা এই ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ মেনে নেব না।
তিনি বলেন, ভারত বরাক নদীর উপর টিপাইমুখ বাঁধ দেবে। এ বিষয়ে সরকারের মন্ত্রীরা এমনভাবে কথা বলেন যে বুঝতে কষ্ট হয় তারা বাংলাদেশের মন্ত্রী নাকি ভারতের মন্ত্রী। যারা বলছেন টিপাইমুখ বাঁধে ক্ষতি হবে না তারা বাংলাদেশের হলে দেশদ্রোহী কাজ করছেন। যারা এর বিরোধীতা করতে পারছেন না, তারা দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। একদিন তাদের দেশদ্রোহী হিসাবে বিচার করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ড. মোশাররফ বলেন, তিনি বলেছেন তার বাবার সময় রিজার্ভ ছিলো না। সেজন্যইতো তখন দেশের অবস্থা ভয়াবহ হয়েছিলো। তখন বাংলাদেশের মানুষ কত ভালো ছিলো তা বর্তমান প্রজন্ম না জানলেও আমরা জানি। ওই সময়ে প্রকাশিক পত্রিকা মওলানা ভাসানীর হক কথা পড়লে দেখতে পারবেন দেশের অবস্থা তখন কি ভয়াবহ ছিলো।
তিনি বলেন, শেয়ার বাজার ঠিক করার দায়িত্ব দিয়েছেন ডাকাতির হোতার কাছে।
সরকার একবার বলছে শেয়ার বাজার তাদের কোনো বিষয় না। অথচ আমরা দেখেছি এক সময় অর্থমন্ত্রনালয় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য রোড শো’র মাধ্যমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিলো। যারা শেয়ার বাজার থেকে ৮৫ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে সেই টাকা হালাল করার সুযোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কয়েকদিন পরে আবার তিনিই বলবেন এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
ড. মোশাররফ বলেন, এই সরকারের হাতে দেশ, জনগণ, অর্থনীতি কোনো কিছুই এখন আর নিরাপদ নয়।
তাই যত তারাতারি তাদের হাত থেকে দেশ মুক্ত করা যাবে ততই মঙ্গল। সেজন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের ডাকে সারা দিয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
সাবেক মন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খান বলেন, অনেক মূল্যবান ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডই সারা দুনিয়ায় জাল হয়ে যাচ্ছে। আর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন জাল করাতো খুবই সহজ। তিনি বলেন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন “টিপাইমুখ বাঁধ ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।
এ বিষয়ে আমাদের নাক গলানোর দরকার নেই”। তিনি সরকারের মন্ত্রী হয়ে দেশের স্বার্থপরিপন্থী বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করেছেন তার বিচার হওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শিক্ষা বিয়ষক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি এমপি, রাজিয়া আলীম, চলচ্চিত্র অভিনেতা অমিত হাসান, আবদুল মতিন প্রধান প্রমুখ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।