অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া! বুয়েটে পড়ার সময় আমার একটা বড় প্রাপ্তি হলো সিজার, জুয়েল ভাই, ফরহাদ ভাই, শাকের ভাই, সেলিম ভাই –এর সঙ্গে পরিচয়। স্বপন ভাই-এর মাধ্যমে এ পরিচয় এবং সম্পর্কগুলো এখনো চলমান যদিও দেখা সাক্ষাৎ এর পরিমাণ কমে গেছে।
এর মধ্যে সেলিম ভাই আর সিজার ছিল আমাদের ইলেকট্রনিক্স-এর জাদুঘর। অন্যদের কথা হয়তো আমি অন্য কোনদিন লিখবো কিন্ত আজকের লেখার বিষয় সেলিম ভাই ও তার ইলেকট্রনিক্স প্রীতি।
সেলিম ভাই সেই থেকে এখনো নিত্য নতুন ইরেকট্রনিক্স প্রজেক্ট করে যাচ্ছেন। আমার ঠিক মনে নাই সেলিম ভাই-এর সঙ্গে আমাদের দেশে নতুনদের ইলেকট্রনিক্স প্রজেক্ট করার প্রধান সুতিকাগার সাবিয়ান (ঢাকা স্টেডিয়ামের)-এর কী সম্পর্ক!! তবে, ইলেকট্রনিক্স নিয়ে নানানরকম কাজ তিনি করেই যাচ্ছেন। নিরবে নিভৃতে বিজ্ঞানের জন্য কাজ করছে এমন একটি সংগঠন হলো অনুসন্ধিৎসু চক্র। সেলিম ভাই তার একজন সক্রিয় সদস্য।
সেলিম ভাই এর নতুন উদ্ভাবন হলো সার্ভোমিটার সহ একটি এন্টেনা যা কীনা ২০টি কাজের জন্য ব্যবহার করা যায়! মানে এক এন্টেনা দিয়ে ২০টি কাজ করা।
গ্লোবাল ইনোভেশন থ্রু সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (GIST ) হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবনে সহায়তা প্রদানের একটি উদ্যোগ। বিশ্বব্যাপী এন্টরপ্রিনিয়রশীপ ডেবেলপমেন্টের একটি চলমান প্রক্রিয়ারই অংশ। এই প্রক্রিয়ায় জিআইএসটি কাজ করে মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে যারা নতুন আইডিয়া বাস্তবায়ন করতে চায় তাদেরকে তারা সহায়তা করে। এছাড়া রয়েছে উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচী – উদযওক্তাদের জন্য বিজনেজ প্ল্যান বানানো, বাজার গবেষণা, প্রোডাক্ট লঞ্চিং ইত্যাদি বিষয়ক কর্মশালা প্রমিক্ষণ ইত্যাদি।
যথারীতি জর্ডানের রানি তার দেশের এই কাজকে প্রমোট করেন। এলাকা ভিত্তিক একটি প্রতিযোগিতা এখন হচ্ছে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রকল্পের উদ্ভাবকদের একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত করা। প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের পর এখঅন পপুলার ভোটে ফাইনালিস্ট নির্বাচন করা হবে। এই প্রতিযোগিতাকে বলা হয় জিআইএসটি-আই (ইনোভেশন) প্রতিযোগিতা।
এখানে বাংলাদেশের প্রতিযোগী একজনই, আমাদের সেলিম ভাই, আজহারুল হক সেলিম।
সেলিম ভাই-এর এন্টেনা প্রজেক্ট এই প্রকল্পে রয়েছে।
প্রকল্পের ২৫ বিজয়ী তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গ্রোবাল এন্টারপ্রিনিয়রশীপ সামিটে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবে। এই সুযোগ পেতে হলে অবশ্যই ভোটে এগিযে থাকতে হবে। সেখানে তাদের আইডিয়া প্রেজেন্টেশনের সুযোগতো থাকবে সঙ্গে থাকবে আইডিয়াকে মাঠে নিয়ে যাওয়ার প্রশিক্ষণ।
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই সামিট আয়োজনের ব্যাপারে খোজ খবর নিচ্ছেন এবং ফান্ডিংও করছেন (আহা!)
তো, আমাদের কাজ কী?
১. সেলিম ভাইকে ভোট দেওয়া
এটি সহজ সরাসরি নিজের লিংকে গিয়ে লাইক করলেই বোট দেওয়া হবে।
সেলিম ভাইকে ভোট দেওয়ার জন্য
যাদের ইউটিউব একাউন্ট নাই তাদেরকে অবশ্য জিমেইল-এর পাসওয়ার্ড দিয়ে ভোট দিতে হবে। যারা জিমেইল সার্ভিস ব্যবহার করেন তারা সেটি ব্যবহার করেই ভোট দিতে পারবেন।
২. অন্যকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করা
একটি একাউন্ট থেকে একবারই ভোট দেওয়া যাবে। কাজে সেলিমভাইকে জেতাতে হলে অনেক ভোট যোগাড় করতে হবে।
৩. সবচেয়ে জরুরী হলো আমাদের আশেপাশে যে সকল তরুন বিজ্ঞানী কাজ করছে তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করা।
তিন নম্বর কাজ করাটা কিন্তু কঠিন নয়।
গতকাল আমার মফিজ চাচা জান্নাতবাসী হয়েছেন। তিনি আমাকে জীবনের সবচেয়ে বড় উৎসাহ দিয়েছিলেন। আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন আমাদের পাড়ার ক্লাব থেকে একটি ম্যাগাজিন বের করার সিদ্ধান্ত হয়।
তখন আমরা অনেকে কাছে বিজ্ঞাপনের জন্য যাই। বেশিরভাগই মোটামুটি ঝাড়ি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন! দুই চাচা দেন নাই। তাদের একজন মফিজ চাচা। তিনি অফিসে আমাকে বসালেন, আমার পড়ালেখার খোজ নিলেন এবং একটি বিজ্ঞাপনের জন্য রাজী হলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে আমাকে টাকাটাও দিয়ে দিলেন (যদিও আমরা জানতাম বিজ্ঞাপন ছাপা হওয়ার পর স্যান্ডেল খসিয়ে টাকা পেতে হয়)।
তার অফিসের লোকেরা আপত্তি করাতে তিনি বলে দিলেন “ওরা কষ্ট করে ম্যাগাজিন বের করবে আর আমি তাকে আগে ভাগে টাকা দিতে পারবো না!!!ওদের চেষ্টা এরা করুক, আমাদেরটা আমরা। “
ম্যাগাজিন বের করতে গিয়ে জীবনে অনেক পানি খেতে হয়েছে কিন্ত মফিজ চাচার ঐ কথা আমার মনে আছে। (বিজ্ঞাপন নিয়ে আরো একটা কষ্টের অভিজ্ঞতাও আছে, সেটি অন্য একদিন বলা যাবে)।
আপনার আশেপাশে যে উদ্ভাবকরা আছে তাদেরকে আপনি নানান ভাবে হেল্প করতে পারেন। আমি কয়েকটা বলছি-
১. বেশিরভাগ জেলা শহরে ইলেকট্রনিক্সের আইসি, রেজিস্টর, বোর্ড এসব পাওয়া যায় না।
আপনি যখন ঢাকা আসেন তখন তাদের চাহিদা মত এরকম নানান খুরা জিনিষ কিনে নিয়ে যেতে পারেন। (এগুরোর দাম খুবই সামান্য। কিন্তু জেলা-উপজেলার উদ্যোগীরা সেটি যোগাড়ই করতে পারে না। )
২. তাকে বই কিনে দিতে পারেন। আপনি যদি আওয়াজ দের তাহলে দেখবেন আপনার ওখানে অনেকেই নানান ধরণের কাজ করছে।
আপনি যদি ওদের একজনকে একটা বই কিনে দেন তাহলে সেটি অনেকেই ব্যবহার করবে
৩. আপনি আপনার পাশের বা নিজের স্কুলের সায়েন্স ক্লাবকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারেন।
এই লিস্ট বাড়ানো যায়। তবে, লিস্টের চেয়ে সদিচ্ছাটাই বড় সেটা সেলিম ভাইকে ভোট দেওযা হোক বা নিজের স্কুলের সায়েন্স ক্লাবকে হেল্প করার মাধ্যমে হোক।
ভাল কথা, ১৭ তারিখ পর্যন্ত ভোট দেওয়া যাবে।
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।